বিষয়বস্তুতে চলুন

জিলাপি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জিলাপি
গরম গরম জিলাপি সাজিয়ে রাখা হয়েছে
অন্যান্য নামজিলেবি, জুলবিয়া (মধ্যপ্রাচ্য), জালেবি, জেরি (নেপাল)
প্রকারমিষ্টান্ন
উৎপত্তিস্থলপশ্চিম এশিয়া (জালাবিয়েহ বা লাকমত আল কাদি)
ভারত (জিলাপি)
অঞ্চল বা রাজ্যদক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া
পরিবেশনসাধারণত গরম গরম
প্রধান উপকরণময়দা, জাফরান, ঘি, চিনি, গোলাপ জল
ভিন্নতাঅমৃতি, শাহী জিলাপি
খাদ্য শক্তি
(প্রতি পরিবেশনায়)
১৩০ প্রতিটিতে কিলোক্যালরি
অন্যান্য তথ্যফাফড়া
বেঙ্গালুরু, ভারত-এ রাস্তার পাশে একটি দোকানে জিলাপি তৈরি করা হচ্ছে

জিলাপি বা জিলিপি এক মজার মিষ্টি খাবার। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে যথা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশে এই মিষ্টান্নটি জনপ্রিয়। বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গের এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে জিলাপি পাওয়া যায় না।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায় রথযাত্রার দিনে পাত্রে সাজানো কুড়মুড়ে জিলাপি
বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে তৈরিকৃত জিলাপি
পাত্রে রাখা জিলাপি

জিলাপির সর্বাধিক পুরনো লিখিত বর্ণনা পাওয়া যায় মুহম্মদ বিন হাসান আল-বোগদাদীর লিখিত ১৩শ শতাব্দীর রান্নার বইতে, যদিও মিসরের ইহুদিরা এর আগেই খাবারটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিল। ইরানে এই মিষ্টান্ন জেলেবিয়া নামে পরিচিত, যা সাধারণত রমযান মাসে গরীব-মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানরা জিলাপি নিয়ে আসে। বাংলাদেশে রমযান মাসে ইফতারিতে এটি একটি জনপ্রিয় খাবার।[] মধ্যযুগে পারসি ভাষাভাষি তুর্কিরা খাবারটিকে ভারতবর্ষে নিয়ে আসে। [] ১৫শ’ শতকের ভারতে জিলাপিকে ”কুন্ডলিকা” বলা হত।[] ১৬০০ খ্রীস্টপূর্বাব্দে সংস্কৃত ভাষায় রচিত গ্রন্থ গুন্যগুনবধিনী তে জিলাপি প্রস্তুত করার জন্য যে উপাদানের তালিকা পাওয়া তার সাথে আধুনিক জিলাপি রন্ধন প্রক্রিয়ার সাথে যথেষ্ট মিল রয়েছে। []

জিলাপি পাকিস্তানের একটি পুরানো এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার। ধর্মীয় এবং বিবাহ উৎসবগুলোতে লোকেরা এটি খেয়ে থাকে।

নামসমূহ

[সম্পাদনা]
জিলাপি

এই খাবারের নামসমূহের মধ্যে রয়েছে (তেলুগু: జిలేబి;হিন্দি: जलेबी; কন্নড়: ಜಿಲೇಬಿ; নেপালী जिल्फी/जेरी; উর্দু: جلیبی‎‎; মালয়ালম: ജിലേബി; মারাঠি: जिलेबी/जिलबी; সিংহলী: පැණි වළලු; গুরুমুখী: ਜਲੇਬੀ/جلیبی জালেবি; তামিল: ஜிலேபி; পশতু: ځلوبۍ źəlobəi; ফার্সি:‎ زولبیا ‏জুলবিয়া;‎‏ আরবি: ‎زلابية ‏জালাবিয়াহ্ মিশরে المشبك ‏মোশাব্বাক; সিন্ধি: ‎جلیبی;).

উপকরণ

[সম্পাদনা]
  • মাষকলাই-এর ডাল- ২৫০ গ্রাম
  • চালের গুঁড়া- ১/৪ কাপ
  • ময়দা- ১/৪ কাপ
  • চিনি- ৩ কাপ
  • ঘি বা তেল - পরিমাণমতো (ভাজার জন্য)
  • পানি- দুই কাপ
  • গোলাপজল- ১ টেবিল চামচ (ইচ্ছানুসারে)

প্রস্তুতপ্রণালী

[সম্পাদনা]
জিলাপি বিক্রেতা, পশ্চিমবঙ্গ।

আটা, বেসন এবং ইষ্ট এর আঠালো মিশ্রণকে এককেন্দ্রিক ভাবে ২ বা ৩ প্যাঁচ দিয়ে গরম তেলের উপর ফেলা হয়। বেশ ভাজা হয়ে গেলে আগে থেকে বানানো চিনির রসেতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রেখে বানানো হয় জিলাপি।

পরিবেশন

[সম্পাদনা]

জিলাপি সাধারণভাবে গরম গরম পরিবেশিত হয়। জিলাপি তৈরির জন্য প্লাস্টিকের সসের বোতলে জিলাপির ব্যাটার ঢুকিয়ে জিলাপি তৈরি করলে অনেক বেশি সোজা হয়।

আঞ্চলিক বিভিন্নতা

[সম্পাদনা]
  • ঢাকার শাহী জিলাপি বিশাল আকারের জিলাপি যা খেতে খুবই সুস্বাদু। তৈরি করার প্রণালী প্রায় একই হলেও এ জিলাপি আকারে বড় হয়। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে ধারণ করে এ জিলাপি।
  • ময়মনসিংহে চালের গুড়ার সাথে তেঁতুলের টক সংমিশ্রণে বানানো টক স্বাদের চিকন জিলাপিকে টক জিলাপি বলা হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Alan Davidson (২১ আগস্ট ২০১৪)। The Oxford Companion to Food। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 424–425। আইএসবিএন 978-0-19-967733-7 
  2. Michael Krondl (১ জুন ২০১৪)। The Donut: History, Recipes, and Lore from Boston to Berlin। Chicago Review Press। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 978-1-61374-673-8 
  3. Anil Kishore Sinha (২০০০)। Anthropology Of Sweetmeats। Gyan Publishing House। আইএসবিএন 978-81-212-0665-5 
  4. Dileep Padgaonkar (১৫ মার্চ ২০১০)। "Journey of the jalebi"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-২৫ 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]