১৫১৩ সাল/ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ।
পরদিবস প্রত্যূষেই “সোনার ভারত” আমাদিগের গন্তব্য স্থলাভিমুখে যাত্রা করিল। ঠিক তিন দিবস পরে আমাদিগের “স্বস্থানে” উপস্থিত হইলাম। তীর হইতে কিছু দুরে জাহাজ নঙ্গর্ করা হইল। আমরা জালিবোটে করিয়া ডাঙ্গায় উঠলাম। তথা হইডে এক পোয়া পথ দূরে এক মনোরম স্থান নির্ণয় করিয়া সেখানে কয়েকটী অস্থায়ী আবাস প্রস্তুত করিলাম। এই কার্য্যে প্রায় পনর দিবস কাটিয়া গেল। দিবাভাগে সেখানে আমরা থাকিতাম, রাত্রিতে জাহাজে আসিয়া শয়ন করিতাম।
আফিসাদি প্রস্তুত হইয়া যাইবার দুই এক দিবস পরে আমরা কার্য্য আরম্ভ করিয়া দিলাম। আমরা বেলা ৯টা হইতে ৫টা পর্য্যন্ত, অর্থাৎ ৮ঘণ্টা করিয়া, অনবরত কার্য্য করিতে লাগিলাম। বন্ধুবর ও আমি সকল কার্য্য তত্ত্বাবধারণ করিতাম। প্রত্যহ যতটা সুবর্ণ উৎপন্ন হইত, তাহা কার্য্যাবসানের পর ওজন করিয়া Strong roomএ রাখিয়া দিতাম। সপ্তাহান্তে, প্রত্যেক শনিবারে, আমাদিগের কার্য্যের একটা হিসাব কলিকাতার আফিসে তারযোগে পাঠাইতে লাগিলাম। এই ভাবে এক মাস কার্য্য করিয়া দেখিলাম যে, যে পরিমাণ সুবর্ণ পাওয়া গিয়াছিল, তাহা বন্ধুবরের estimateএর অপেক্ষা অনেক অধিক। বলা বাহুল্য, এই সংবাদ শ্রবণ করিয়া সকলেরই উৎসাহ বৃদ্ধি পাইল এবং যাহার মনে কার্য্যসাফল্য বিষয়ে কণামাত্র সন্দেহ ছিল, তাহা দূর হইয়া গেল।
ছয় মাস কার্য্য করিবার পর বন্ধুবর কলিকাতার Director গণের নিকট এই মর্ম্মে তার করিলেন যে, তাঁহারা যদি একখানি জাহাজ ভাড়া করিয়া পাঠান, তাহা হইলে তিনি যতটা সুবর্ণ পাইয়াছেন তাহা তাঁহদিগের নিকট পাঠাইয়া দিবেন। কার্য্যকালের অবসান পর্য্যন্ত তিনি অপেক্ষা করিতে ইচ্ছা করেন না। তাঁহারা কালবিলম্ব না করিয়া আপনারাই এক জাহাজ ভাড়া করিয়া উপস্থিত হইলেন। তাঁহাদিগের সহিত কয়েকজন অংশীদার ও আসিলেন। তাঁহারা আমাদিগের কার্য্যপ্রণালী ও ফল দেখিয়া বড়ই তুষ্ট হইয়া বন্ধুবরকে শত শত ধন্যবাদ দিলেন। পরে একদিন প্রাপ্ত সুবর্ণ লইয়া কলিকাতাভিমুখে যাত্রা করিলেন। আমরাও অনেকটা নিশ্চিন্ত হইলাম।