হেবরন কাঁচ
হেবরন কাচ (ইংরেজি: Hebron Glass; আরবি: زجاج الخليل, যাজাজ আল-খালিলি) বলতে বুঝানো হয় হেবরনে উৎপাদিত কাচ এবং কাঁচজাত সামগ্রীকে; যেটি রোমান শাসনামলে ফিলিস্তিন অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত এক প্রকার স্বচ্ছ শিল্পকলা মাধ্যম।[১][২] হেবরন শহরের পুরাতন অংশে এখনও "গ্লাস-ব্লোয়ার কোয়ার্টার" নামে একটি ভবন রয়েছে এবং শহরের একটি অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে কাঁচজাত সামগ্রীর আবেদন বর্তমানেও অব্যাহত আছে।
গলিত কাচে সাধারণত স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত কাঁচামাল; সন্নিকটবর্তী গ্রামগুলো থেকে প্রাপ্ত বালু, সোডিয়াম কার্বনেট (মৃত সাগর থেকে),[৩] এবং রঞ্জক পদার্থ, যেমন: আয়রন অক্সাইড এবং কপার অক্সাইড ব্যবহৃত হয়। এগুলোর পরিবর্তে বর্তমানে প্রায়শই “পুনর্ব্যবহৃত কাচ” (Recycled Glass) ব্যবহার করা হয়। হেবরনের কাচ উৎপাদন একটি পারিবারিক ব্যবসায়; শহরের ঠিক বাইরে অবস্থিত কাচ কারখানাগুলো পরিচলনাকারী কিছু ফিলিস্তিনি পরিবারই কেবল বংশ পরস্পরায় এই শিল্পের গোপন অন্ধি-সন্ধিগুলো জানেন।[২][৪] এখানকার উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাচের অলঙ্কার, যেমন: পুঁতিরমালা, ব্রেসলেট এবং আংটী;[৫] সেইসাথে কারুকার্য শৌভিত রঙিন কাচের জানালা এবং কাচের বাতিদান। যদিও ফিলিস্তিনি-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে বর্তমানে কাচ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।[৪]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ফিলিস্তিন অঞ্চলে রোমান শাসনামলে (খ্রিস্টপূর্ব ৬৩ অব্দ থেকে ৩৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত) হেবরন কাচ শিল্পটি গড়ে উঠে।[১] প্রাচীন ফিনিশিয় কাচ শিল্প যখন পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলরেখা বরাবর ছড়িয়ে থাকা শহরগুলো থেকে সংকুচিত হয়ে অভ্যন্তরভাগের এলাকাগুলোতে সরে আসে, তখন বিশেষ করে হেবরনে এটি স্থানান্তরিত হয়।[৬] হেবরনে প্রস্তুত ১ম এবং ২য় শতাব্দীর কাঁচজাত হস্তশিল্প সামগ্রী পাওয়া গেছে এবং এগুলো ড্রেক সংগ্রহের অংশ হিসাবে প্রদর্শিত হয়।[১] কেভ অফ ম্যাকফিলার উপর নির্মিত স্থাপনায় দ্বাদশ শতাব্দীর হেবরন কাচে তৈরি কারুকার্য শৌভিত রঙিন কাচের জানালা দেখতে পাওয়া যায়, যেটি ক্রুসেডারদের সময়ে ফিলিস্তিনে গির্জা হিসাবে ব্যবহৃত হতো।[৭] জেরুজালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত ডোম অফ দ্যা রকের শোভা বর্ধনে ব্যবহৃত কারুকার্য শৌভিত রঙিন কাচের জানালাগুলো হচ্ছে হেবরন কাচের অপর একটি নিদর্শন।[২]
কাচ উৎপাদনে মধ্যযুগে হেবরনের খ্যাতির কিছু কিছু বিবরণ দেখা যায় অসংখ্য খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীর বর্ণনায়, যারা ঐ শতকগুলোতে এই শহর পরিদর্শনে এসেছিলেন। ১৩৪৫ থেকে ১৩৫০-এর মধ্যে ফ্রান্সিসকান সন্ন্যাসী নিকোলো ডা পোজিবন্সি উল্লেখ করেন যে, “তারা কাচের অসাধারণ সব শিল্পকর্ম বানায়।” ১৫দশ শতাব্দীর শেষ দিকে জার্মান খ্রিস্টান ভিক্ষু ফেলিক্স ফেবার এবং তার সঙ্গীরা “বিস্তৃত প্রাচীন শহরে” থেমেছিলেন; এবং তিনি বর্ণনা করেছিলেন এভাবে, “আমরা আমাদের হোটেল থেকে বের হয়ে এলাম এবং শহরের মধ্যকার দীর্ঘ রাস্তা পেরিয়ে গেলাম, যেখানে কারুশিল্পে নিয়োজিত জনগোষ্ঠী বসবাস করতো, বিশেষ করে কাচ শিল্পে নিয়োজিত কর্মীরা; এখানে উৎপাদিত কাঁচগুলো স্বচ্ছ নয়, বরং কালো এবং গাঢ় ও হালকা বর্ণের মধ্যবর্তী রঙের।”[৮]
যখন এই তথ্য মেনে নেয়া হচ্ছে যে, ফিলিস্তিনে কাচ উৎপাদন প্রক্রিয়া রোমানদের শাসনামল থেকে চলে আসছে, তখন আরআইডব্লিউএকিউ: সেন্টার ফর আর্কিট্যাকচারাল কনজারভেশন (RIWAQ: Centre for Architectural Conservation)-এর পরিচালক নাজমী আল-জু'বাহ-এর অভিমত হচ্ছে, হেবরনের আজকের কাচ শিল্পের চর্চা সম্ভবত খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া।[৪] এতে ধারণা করা যায় যে বিদেশীরা এটিকে কীভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন, যেমন জ্যাকুইজ ডি ভাইট্রাই, যিনি কাচ-উৎপাদনকারী শহর হিসাবে প্রায় ১০৮০-র কাছাকাছি একর এবং চক্রের কথা উল্লেখ করেছেন, (তাতে হেবরন ছিলোনা);[৯] যেখানে ১৪৮৩ সালে ফেলিক্স ফেবার যখন শহরটি পরিদর্শন করেন, তিনি বর্ণনা করেন, “শহরের দীর্ঘ সড়ক বরাবর কারুশিল্পে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিলো, বিশেষ করে কাচ শিল্পে নিয়োজিত কর্মীদের; এই স্থানে উৎপাদিত কাঁচগুলো স্বচ্ছ নয়, বরং কালো এবং গাঢ় ও হালকা বর্ণের মধ্যবর্তী রঙের।”[১০]
জু'বাহ মনে করেন যে, একই তত্ত্ব বর্তমান কালের ঐতিহ্যবাহী ভেনিসিয়ান কাচ উৎপাদন কৌশলেও ব্যবহৃত হচ্ছে এবং অন্যান্য গবেষকবৃন্দ দাবী করেন যে এগুলো ক্রুসেডের সময় থেকেই ছিলো এবং হেবরন থেকে ইউরোপে এসেছিলো; যেগুলো সম্ভবত সিরিয়ায় উদ্ভাবিত।[৪]
এই কারখানাগুলোতে উৎপাদিত কাঁচজাত সামগ্রীগুলো ছিলো সাধারণ ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, যাতে অন্তর্ভুক্ত ছিলো খাদ্য এবং পানীয় গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় তৈজসপত্র, সেই সাথে জলপাইয়ের তেল এবং পরবর্তীতে পেট্রল ব্যবহারকৃত বাতিদানি; যদিও কারখানাগুলোতে অলংকার এবং আনুষঙ্গিক পণ্যাদিও উৎপাদিত হতো। অলংকারের প্রাথমিক ক্রেতা ছিলো নেগেভ, আরব মরুভূমি এবং সিনাই উপদ্বীপে বসবাসকারী বেদুঈন জনগোষ্ঠী, কিন্তু হেবরান কাচের মূল্যবান সামগ্রীর বৃহৎ চালান উটের কাফেলার প্রহরায় মিশর, সিরিয়া এবং সমগ্র জর্ডানে যেতো। ১৬দশ শতাব্দীর মধ্যে দক্ষিণ জর্দানের আল কারাক এবং মিশরের কায়রোতে হেবরন কাচ ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে।[৪]
কাচ শিল্প ছিলো কর্মসংস্থানের একটি প্রধান ক্ষেত্র এবং এর মালিকদের জন্য সম্পদের উৎস।[৪] আরব বিশ্ব জুড়ে কাচ উৎপাদনের জন্য সুপরিচিতির বিধায় ঊনবিংশ শতাব্দীর ফিলিস্তিন ভ্রমণকারী পশ্চিমারা হেবরন কাচ শিল্পের বিশদ বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ, উলরিখ জেসপার সিটজেন ১৮০৭-০৯ সালে ফিলিস্তিনে তার ভ্রমণ কালীন তথ্যে উল্লেখ করেছেন যে, হেবরনে কাচ কারখানায় ১৫০ জন কর্মরত ছিলো;[১১] যেখানে পরবর্তীতে, পুরাতন এবং নতুন টেষ্টামেন্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত পবিত্র বাইবেল-এর নতুন এবং সম্পূর্ণ ইতিহাস (A New and Complete History of the Holy Bible as Contained in the Old and New Testaments) (১৮৪৪) গ্রন্থে রবার্ট সিয়ার্স লিখেছেন, “হেবরনের লোকসংখ্যা সহনীয় সংখ্যক: অধিবাসীরা কাচের বাতিদানি উৎপাদন কাজে যুক্ত, যেগুলো মিশরে রপ্তানি করা হয়। অসংখ্য ধরনের কাঁচজাত দ্রব্য এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দোকান রয়েছে।”[১২]
ইউরোপ থেকে আমদানি কৃত কাঁচজাত সামগ্রীর সাথে প্রতিযোগিতার ফলশ্রুতিতে এই শতকের শেষ দিকে উৎপাদন হ্রাস পায়। যদিও, বিশেষত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর, বিশেষ করে শহর থেকে আসা ইহুদি ব্যবসায়ী ভ্রমণকারীদের নিকট হেবরনের পণ্যসামগ্রীর বিক্রয় অব্যাহত থাকে।[১৩] ১৮৭৩ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মেলায় হেবরন কাঁচজাত অলংকার প্রদর্শন করেছিলো। ১৮৮৬ সালে ফরাসি কনসাল প্রেরিত একটি প্রতিবেদনে পরামর্শ দেয়া হয় যে, কাচ উৎপাদন হেবরনের আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে, যেখানে চারটি কারখানায় বার্ষিক ৬০,০০০ ফ্রঁ মূল্যের কাচ জাত সামগ্রী উৎপাদিত হয়।[১৪]
হেবরনের উত্তরে এবং সন্নিকটবর্তী হালহুল শহরের দক্ষিণে অবস্থিত পুরানো শহরের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার বাইরে তিনটি কারখানায় প্রথাগত কাচ ফুঁকানো পদ্ধতিটি ২১ শতকেও প্রচলিত রয়েছে যেখানে সাধারণত গৃহস্থলির ব্যবহার্য শৌখিন তৈজস-দ্রব্যাদী উৎপাদিত হয়। নাতশী পরিবার (The Natsheh Family) দুটি কারখানার স্বত্ত্বাধিকারী। প্রতিটি কারখানা সংলগ্ন বড় হল ঘরগুলোতে এগুলো প্রদর্শিত হয়।[৪]
দেশীয় এবং বিদেশী - উভয় ধরনের পর্যটকদের জন্যই হেবরন কাচ একটি অন্যতম আকর্ষণ। যদিও বর্তমানে চলমান রপ্তানি সমস্যার কারণে, পর্যটন ব্যবসায় ধ্বসে এবং দ্বিতীয়ত ইন্তিফাদা পরবর্তী সময়-কালে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিধি-নিষেধের ফলে শিল্প উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। আরআইডব্লিউএকিউ: সেন্টার ফর আর্কিট্যাকচারাল কনজারভেশন (RIWAQ: Centre for Architectural Conservation)-এর পরিচালক নাজমী আল-জু'বাহ-এর মতে, এই পরিস্থিতিতে হেবরন কাচ শিল্পের উত্তোরণ প্রশ্নের সম্মুক্ষিণ।[৪]
উৎপাদন
[সম্পাদনা]হেবরন কাচ উৎপাদনে ঐতিহ্যগতভাবে হেবরনের পূর্ব দিকের বনী না'ঈম গ্রাম থেকে প্রাপ্ত বালু এবং মৃত সাগর থেকে সংগৃহীত সোডিয়াম কার্বোনেট ব্যবহৃত হয়। বালুর পরিবর্তে আজকাল হেবরনের কাচ তৈরির প্রাথমিক কাঁচামাল হিসাবে “পুনর্ব্যবহৃত কাচ” (Recycled Glass) ব্যবহৃত হয়।[৪]
সঠিক উৎপাদন প্রক্রিয়াটি একটি বাণিজ্যিক গোপনীয়তা যা কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারের নিকট জ্ঞাত, যারা বর্তমানে হেবরন কাচ উৎপাদনে নিয়োজিত কারখানাগুলো পরিচালনা করছে;[২] যাতে শিশুদের শিক্ষানবীশ হিসাবে নিয়োগের মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে প্রক্রিয়াটির প্রসারণ ঘটানো হয়। যেমনটি একজন সুদক্ষ শিল্পী বলছিলেন, “আপনি যে-কোন বয়সে 'অউদ বাজানো শিখতে পারবেন, কিন্তু আপনি যদি শিশু বয়স থেকে [কাচ-কর্ম] শুরু না-করেন, তবে কখনোই সুনিপুন শিল্পী হয়ে উঠতে পারবেন না।”[৪]
হলি ল্যান্ড হ্যান্ডিক্রাফ্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটির ভাষ্য অনুসারে, কাচে ফুঁ দেয়ার কৌশলটি প্রাচীন ফিনিশীয়দের ব্যবহৃত পদ্ধতির ন্যায়; [২] যদিও কাচ বিশারদ প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকগণ একমত হয়েছেন যে, ফুঁ দেয়ার কৌশলটি বিগত কয়েক খ্রিস্ট-পূর্বীয় শতকের অনুরূপ নয়। গলিত কাচ চুল্লি থেকে সরিয়ে একটি লোহার নলের প্রান্তভাগে রাখা হয়; যাতে স্ফুটিত কাঁচকে আকৃতি দানে খামাশা (kammasha) নামে পরিচিত একটি ধাতব যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। নল থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি শীতলীকরণ প্রকোষ্ঠে স্থাপন করার পূর্ব পর্যন্ত এটিকে চুল্লিতে ফিরিয়ে আনা এবং একই পদ্ধতিতে পুনআকৃতি দেয়ার প্রক্রিয়া চলতে থাকে।[৪][১৫]
অলংকার
[সম্পাদনা]ঐতিহ্যগতভাবে হেবরনে গহনায় ব্যবহৃত কাচের পুঁতি উৎপাদিত হয়। নীল পুঁতি এবং চক্ষুযুক্ত কাচের পুঁতি (owayneh) তৈরী করা হয় তাবিজে ব্যবহারের জন্য; যা কুদৃষ্টির বিরুদ্ধে বিশেষ কার্যকরী বলে মনে করা হয়।[৪][১৭] ব্রিটিশ মিউজিয়ামের মানবজাতির সংগ্রহশালা বিভাগে হেবরনে তৈরী প্রচুর কাচের গলার হার রাখা আছে যেগুলো ব্রিটিশ শাসনাধীন কালের বা তার পূর্বের। নীল ও সবুজ পুঁতি এবং চক্ষুযুক্ত পুঁতি দিয়ে তৈরি নেকলেস ছাড়াও, আরো রয়েছে নবী মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমার হাতের প্রতিকৃতি হিসাবে বিবেচিত হামসা নামে পরিচিত পুঁতির ক্ষুদ্রাকৃতির পাঞ্জা।[১৮] একজন নারীকে তার বিয়ের সময় সর্বাধিক অলংকার প্রদান করা হয়; ১৯২০-এর দশকের প্রথমদিকে বায়েত দাজান অঞ্চলে, হেবরনে তৈরী কাচের ব্রেসলেট (ghwayshat) নববধূর সাজের একটি প্রয়োজনীয় অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হতো।[১৯]
হেবরনের পুঁতির মুদ্রা
[সম্পাদনা]১৭৯৯ সালে ইংরেজ পর্যটক উইলিয়াম জর্জ ব্রাউনি উল্লেখ করেন যে, ফিলিস্তিনে উৎপাদিত "মোটা কাচের পুঁতিগুলো... হার্শ এবং মুঞ্জির" নামে পরিচিত; বড় পুঁতিগুলোকে "মুঞ্জির" (মোনগুর) এবং ছোটগুলোকে "হার্শ" (হারিশ) বলা হয়।[২০] হেবরনের এই কাচের পুঁতিগুলো ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য ব্যবহার করা হতো এবং ১৯'শতকের প্রথম থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এগুলো প্রাথমিকভাবে আফ্রিকায় রপ্তানি করা হতো। এগুলোর প্রান্ত ভাগ বৃত্তাকারে পরস্পরের সাথে মাপমতো সুসংহতভাবে সংযুক্ত থাকতো; যা নাইজেরিয়ার কানো হতে সারা পশ্চিম আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে এগুলো "কানো পুঁতি" নামে পরিচিত হতে থাকে, যদিও এটি মূলত কানোতে উৎপাদিত হতো না। ১৯৩০-এর দশকের মধ্যে তাদের মূল্যমান কমে যায়; ১৯৩৭ সালে দাফুরে হাউসা বণিকরা সুদানী নারীদের নিকট "একটি গানের জন্য" পুঁতিরমালা প্রদান করছে বলে এ. জে. আর্কেল লিপিবদ্ধ করেছেন।[২১]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ স্পালডিং এন্ড ওয়েলচ, ১৯৯৪, ২০০-২০১ পৃষ্টা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "ভেস"। পবিত্র ভূমি হস্তশিল্প সমবায় সমিতি। ২০১১-০৭-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৪-১৩।
- ↑ "হেব্রন বিডস"। ডিপিএইচজুয়েলারি.কম। ২০১২-১০-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ নাজমী আল-জুবাহ (জানুয়ারি ২৫, ২০০৮)। "হেব্রন গ্লাস:শতাব্দীর পুরাতন ঐতিহ্য"। ইন্সটিটিউট ফর মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং (মূল "ফিলিস্তিনের এই সপ্তাহে")। ২৫ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ বিয়ার্ড, ১৮৬২, পাতা ১৯
- ↑ পেরোট, চিপিজ এবং আর্মস্ট্রং ১৮৮৫, পাতা ৩২৮
- ↑ কোমেই, ২০০১, পাতা ১৩
- ↑ সিমন্স, গেইল। ২০১৩ "হেরবন কাঁচের ইতিহাস." ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে সৌদি আরামকো ওয়ার্ল্ড। জানুয়ারী/ফেব্রুয়ারি ২০১৩। পৃষ্ঠা ৫।
- ↑ ভিট্রি, ১৮৯৬, পাতা. 92-93
- ↑ ফ্যাব্রি, ১৮৯৩, পাতা. 411
- ↑ সিটজেন, ১৮৫৫, খন্ড ৩, পাতা ৫-৬. শ্লোচ, ১৯৯৩, পাতা ১৬১
- ↑ সিয়ার্স, ১৮৪৪, পাতা. ২৬০.
- ↑ ডেলপুগেট, ডেভিড: ১৮৬৫ সালে আলেকজান্দ্রিয়া, জাফা এবং জেরুজালেমের ইহুদি, বোর্দো, ১৮৬৬, পৃ. ২৬. শ্লোচ (১৯৯৩) এ উদ্ধৃত; পৃ.১৬১, ১৬২
- ↑ শ্লোচ এ উদৃত (১৯৯৩); পাতা ১৬১, ১৬২
- ↑ থম্পসন, ১৮৬১, পাতা ৫৮৪
- ↑ উইয়ার, ১৯৮৯, পাতা. ১৯২, ১৯৩.
- ↑ উইয়ার, ১৯৮৯, পাতা ১৯৪. আরও দেখুন ফিলিস্তিনি জুয়েলারি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে
- ↑ উইয়ার, ১৯৮৯, পাতা. ২০১.
- ↑ উইয়ার, ১৯৮৯, পাতা. ২৩০.
- ↑ ব্রাউন, উইলিয়াম জি. (১৭৯৯): ১৭৯২ থেকে ১৭৯৬ সাল পর্যন্ত আফ্রিকা, মিশর এবং সিরিয়ায় ভ্রমণ। ক্যাডেল, ডেভিস, লংম্যান এবং রিস, লন্ডন। পৃষ্ঠা ৩০৩। উদ্ধৃত হিসাবে Hebron as Beadmaker ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে
- ↑ আরকেল , এ. জে. (১৯৩৭) হেব্রন বিডস ইন ডুরফুর, সুদান নোটস অ্যান্ড রেকর্ডস ২০(২):৩০০-৩০৫, যেমন উদ্ধৃত হয়েছে Hebron as Beadmaker ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- বেয়ার্ড, জন রেলি (১৮৬২)। দি পিপলস ডিকশোনারি অফ দ্যা বাইবেল। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি।
- ব্রাউন, ডব্লিউ. জি. (১৭৯৯), ১৭৯২ থেকে ১৭৯৮ সাল পর্যন্ত আফ্রিকা, মিশর এবং সিরিয়ায় ভ্রমণ।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- কোমেই, জোয়ান (২০০১)। হুস হু ইন দ্যা ওল্ড টেস্টামেন্ট। রাউটলেজ। আইএসবিএন 0-415-26031-0।
- সিয়ার্স, রবার্ট (১৮৪৪)। এ নিউ অ্যান্ড কমপ্লিট হিস্টোরি অফ দ্যা হোলি বাইবেল এস কন্টেইন্ড ইন দ্যা ওল্ড এন্ড নিউ টেস্টামেন্টস। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস।
- Spaulding, Mary; Welch, Penny (১৯৯৪)। Nurturing Yesterday's Child: A Portrayal of the Drake Collection of Paedeatric History। Dundurn Press Ltd.। আইএসবিএন 0-920474-91-8।
- Palestine Pilgrims' Text Society (১৮৯৩): Felix Fabri (circa 1480-১৪৮৩ A.D.) vol II, part II
- Palestine Pilgrims' Text Society (১৮৯৬): History of Jerusalem by Jacques de Vitry, A.D. ১১৮০,
- Perrot, Georges; Chipiez, Charles; Armstrong, Walter (১৮৮৫)। History of Art in Phœnicia and Its Dependencies। Chapman and Hall।
- Thompson, William McClure (১৮৬১)। The Land and the Book: Or, Biblical Illustrations Drawn from the Manners and Customs, the Scenes and Scenery of the Holy Land। Harper & Bros.।
- Seetzen, Ulrich Jasper (১৮৫৫)। Ulrich Jasper Seetzen's Reisen durch Syrien, Palästina, Phönicien, die Transjordan-länder, Arabia Petraea und Unter-Aegypten (German ভাষায়)। 3। Berlin: G. Reimer।
- Weir, Shelagh (১৯৮৯)। Palestinian Costume। British Museum Publications Ltd। আইএসবিএন 0-7141-2517-2।
- Schölch, Alexander (১৯৯৩)। দশকেরcho Palestine in Transformation, ১৮৫৬-১৮৮২
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। Institute for Palestine Studies। আইএসবিএন 0-88728-234-2।
বহিসংযোগ
[সম্পাদনা]- Glassblowing in Hebron ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে by Toine Van Teeffelen, 04.06.২০০৬, Palestine-Family.net
- Hebron Glass, gallery, Palestine Today
- Simmons, Gail. 2013. "Hebron's Glass History." Saudi Aramco World. January/February 2013. Pages 3-9.