মনপুরা উপজেলা
মনপুরা | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে মনপুরা উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°১৮′৭″ উত্তর ৯০°৫৮′৩১″ পূর্ব / ২২.৩০১৯৪° উত্তর ৯০.৯৭৫২৮° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | বরিশাল বিভাগ |
জেলা | ভোলা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩৭৩.১৯ বর্গকিমি (১৪৪.০৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১)[১] | |
• মোট | ৬৭,৩০৪ |
• জনঘনত্ব | ১৮০/বর্গকিমি (৪৭০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪১% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ১০ ০৯ ৬৫ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
মনপুরা উপজেলা বরিশাল বিভাগ এর ভোলা জেলার দক্ষিণে অবস্থিত। মনপুরা থানার ৪ টি ইউনিয়ন, ২২ টি মৌজা ও ৩৩ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। মনপুরা উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৭৬,৫৮২ জন। সাক্ষরতার হার ৪১%। এখানকার মানুষ কৃষি ভিত্তিক পেশা পরিচালনা করে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ মনপুরা এর সংসদীয় আসন ভোলা-৪। মনপুরা ও চরফ্যাশন উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি জাতীয় সংসদ এ ১১৮ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত [২] ।
অবস্থান
[সম্পাদনা]ভৌগোলিক অবস্থান ২২°১৭′৫৫″ উত্তর ৯০°৫৮′৪৫″ পূর্ব / ২২.২৯৮৬° উত্তর ৯০.৯৭৯২° পূর্ব উপজেলার উত্তরে তজুমদ্দিন উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা, পশ্চিমে তজুমদ্দিন উপজেলা, লালমোহন উপজেলা ও চরফ্যাশন উপজেলা।
পটভূমি
[সম্পাদনা]ভোলা জেলা হতে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত।এটি ভোলা দ্বীপ তৈরি হওয়ার সমসাময়িক সময়ে রচিত হয়েছে। তাই প্রথমদিকে এটি ভোলা ভূ-খন্ডের সাথে ছিল।
মনপুরার প্রবীন ব্যক্তিগন মনে করেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহ বিভিন্ন কারণে এখানের আগন্তুকদের কে মন ভরিয়ে রাখতো। তাই এই উপজেলার নাম মনপুরা রাখা হয়েছে। আবার কেউ মনে করেন, মনগাজী শাহবাজপুর জমিদার এর নিকট হতে এই ইজারা এলাকাটি। তারাই নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছে। অধিকাংশ এর অভিমত এখানে বনে বাঘ ও হাতীসহ বিভিন্ন হিংস্র জন্তু থাকতো, মনগাজী নামের ব্যক্তিকে বাঘ আক্রমণ করে এর ফলে তিনি মারা গিয়েছেন। তারই নাম অনুসারে নামকরণ করা হয়েছে মনপুরা।
একসময় আরাকান ও পর্তুগিজ জলদূস্যুরা এই দ্বীপকে তাদের আশ্রয় স্থল তৈরি করেছিল। তাদের লুন্ঠিত মালামাল এখানে এনে রাখতো। [৩]
প্রশাসনিক এলাকা
[সম্পাদনা]মনপুরা ১৮৭৫ সাল পর্যন্ত বাকেরগঞ্জ ১৩৩ টি চরের অন্তভুক্ত ছিল। এটি ছিল তজুমদ্দিন উপজেলার একটি ইউনিয়ন ছিলো। ১৭৮১ সালে মনপুরা দক্ষিণ শাহবাজপুর এর জমিদারদের সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
১৮৩৪ সালে সুন্দরবনের কমিশনার ডামপেয়ার মনপুরা বাজেয়াপ্ত করেন। ১৮৩৭ সালে চট্টগ্রামের কমিশনার মিঃ রিকটস মনপুরা বন্দোবস্ত প্রস্তাব দেন। ১৯৪৭ সালে পূর্ব চর কৃষ্ণপ্রসাদ ও চর যতীন ও কয়েকটি মৌজার রাজা ছিলেন রাজেশকান্ত রায় ও হরেন্দ্র রায়।
১৯৭০ সালের বন্যার পর মনপুরাকে পৃথক মনপুরা থানা হিসেবে উন্নীত করা হয়। ১৯৮৩ সালের ৭ ই নভেম্বর এটিকে মনপুরা উপজেলায় উন্নীত করা হয়।
মনপুরাতে ৪টি ইউনিয়ন, ২২টি মৌজা ও ৩৩টি গ্রাম আছে।
সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম মনপুরা থানার আওতাধীন।
- ১নং মনপুরা
- ২নং হাজিরহাট
- ৩নংউত্তর সাকুচিয়া
- ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ মনপুরা উপজেলা সংসদীয় আসন ভোলা-৪। চরফ্যাশন উপজেলা ও মনপুরা উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি জাতীয় সংসদে ১১৮ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৮৬ নির্বাচন হয় এবং মনপুরা সংসদীয় আসনটি তৈরি করা হয়। প্রথম নির্বাচনে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টি (এরশাদ) দলের সাদ জগলুল হায়দার। পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ১৯৯১ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মনোনায়নে অধক্ষ্য নজরুল ইসলাম নির্বাচিত হন।ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ, সপ্তম জাতীয় সংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এর মনোনায়নে নাজিম উদ্দিন আলম নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদ,দশম জাতীয় সংসদ ও একাদশ জাতীয় সংসদ এ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর মনোনায়নে আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব নির্বাচিত হন।
স্বাস্থ্য
[সম্পাদনা]হাসপাতাল/স্বাস্থ্যকেন্দ্র - হাসপাতাল-০১টি যেটি ৫১ শয্যা বিশিষ্ট[৪], ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র -৪টি ।
স্বাস্থ্য কর্মসূচী- কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা সহ ইপিআই, এনআইডি, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।
জনসংখ্যার উপাত্ত
[সম্পাদনা]২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মনপুরা উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৭৬,৫৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৮,৭৪৬ জন এবং মহিলা ৩৭,৮৩৬ জন। মোট পরিবার ১৭,০৮০টি।[৫]
শিক্ষা
[সম্পাদনা]২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মনপুরা উপজেলার সাক্ষরতার হার ৩২.১%।[৫]
মনপুরা উপজেলা শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের অন্য সব শহরের মতই। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধানত পাঁচটি ধাপ রয়েছে: প্রাথমিক (১ থেকে ৫), নিম্ন মাধ্যমিক (৬ থেকে ৮), মাধ্যমিক (৯ থেকে ১০), উচ্চ মাধ্যমিক (১১ থেকে ১২) এবং উচ্চ শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা সাধারণত ৫ বছর মেয়াদী হয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়, ৩ বছর মেয়াদী নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), ২ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক শিক্ষা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়।
মূলত বাংলা ভাষায় পাঠদান করা হয় তবে ইংরেজি ব্যাপকভাবে পাঠদান ও ব্যবহৃত হয়। অনেক মুসলমান পরিবার তাদের সন্তানদের বিশেষায়িত ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন মাদ্রাসাতে প্রেরণ করেন। মাদ্রাসাগুলোতেও প্রায় একই ধরনের ধাপ উত্তীর্ণ হতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোন শিক্ষার্থী সাধারণত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ সরকারী : ১৪টি, রেজিঃ ২৩টি ,২টি আইডিএল একাডিমি । জুনিয়র বিদ্যালয় : ০১টি । মাধ্যমিকঃ মোট ০৭টি, ০১ বালিকা। মাদ্রাসাঃ আলিম : ০৬টি , ফাজিল : ০১টি । কলেজ : ০৩ (তিন) টি।[৬]
কলেজগুলোর নামঃ
• মনপুরা সরকারী ডিগ্রী কলেজ
• মনোয়ারা বেগম মহিলা কলেজ
• আব্দুল্লাহ্ আল ইসলাম জ্যাকব কলেজ
অর্থনীতি
[সম্পাদনা]মনপুরা বাংলাদেশের একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এই দ্বীপের সাথে ডালচর কলাতলীর চর মনপুরার সাথে যুক্ত। এই দ্বীপে কৃষি খাতে উৎপাদন হয় ধান, মুগডাল, চিনাবাদাম।
- ধান বছরে দুইবার উৎপাদন হয় আউশ ধান ও আমন ধান। বছরে আনুমানিক ৫০ হাজার টন ধান উৎপাদন হয়।
- মুগডাল বছরে ১ বার উৎপাদন হয়। আনুমানিক বছরে ১০ হাজার টন মুগডাল উৎপাদন হয়।
- চিনাবাদাম বছরে একবার উৎপাদন হয়। আনুমানিক বছরে ২০ হাজার টন চিনাবাদাম উৎপাদন হয়।
- একানে প্রতি বছর বিপুল পরিমানে ইলিশ মাচ হয় ,
এছাড়া এখানে নানান জাতের ফসল উৎপাদন হয়। এখানে জেলে পড়িবার সহ নানান পেশাজীবি ব্যক্তি রয়েছেন যারা তাদের কর্মের মাধ্যমে অর্থনীতি দিক সচল রাখেন।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]ভোলা জেলার বৃহত্তম দ্বীপ তাই এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা নদী পথে চলাচল বেশি হয়। ঢাকা সদরঘাট থেকে হাজীরহাট বা মনপুরা লঞ্চ চলাচল করে ,বর্তমানে চট্রগ্রাম থেকে বারো আউলিয়া লঞ্চ চলা চল করে। এছাড়া এক ইউনিয়ন হতে অন্য ইউনিয়নে বা অভ্যন্তরীন চলাচলের জন্য স্থানীয় যানবাহন রয়েছে অটো রিক্সা ,রিক্সা , হুন্ডা, বোরাক ,টেম্পু নিজস্ব রয়েছে সাইকেল।
উল্লেখ্যযোগ্য স্থান
[সম্পাদনা]সুন্দর প্রাকৃতিক সবুজ বন এর সাথে চারপাশে নদীর ঢেউ
- উপজেলা পরিষদের ০৫টি দিঘী,
- উপজেলার দক্ষিণের ঘন বনাঞ্চল,
- চৌধুরী ফিসারিজ
- চৌধুরী বাড়ীর প্রজেক্ট,
- দক্ষিনে রয়েছে দক্ষিনা হাওয়া ছিবিছ
এবং আলমনগর কেওড়া বনে হরিণ বা নদীর পারে [৭] ।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মনপুরা উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৫ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "আসন বিস্তারিত"। ২০২০-০৪-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা ভোলা জেলা" পৃষ্টা নং২৯-৩০
- ↑ "রোগীর দুয়ারে মনপুরার ডাক্তার"। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)। web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "একনজরে মনপুরা উপজেলা"। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "ভোলার মনপুরায় লোকালয়ে হরিণ"। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
বরিশাল বিভাগের স্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |