বাংলাদেশ চা বোর্ড
গঠিত | ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫১ |
---|---|
সদরদপ্তর | নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ |
যে অঞ্চলে কাজ করে | বাংলাদেশ |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা |
চেয়ারম্যান | মেজর জেনারেল শেখ মোঃ সরওয়ার হোসেন- এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি। |
প্রধান প্রতিষ্ঠান | বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ) |
ওয়েবসাইট | teaboard |
বাংলাদেশ চা বোর্ড (ইংরেজি: Bangladesh Tea Board),[১] একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান যেটি চা উৎপাদন, নিয়ন্ত্রণ এবং চা উৎপাদনে উৎসাহমুখী নীতি প্রণয়নের দায়িত্ব পালন করে। এটি নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশে অবস্থিত।[২][৩] মেজর জেনারেল শেখ মোঃ সরওয়ার হোসেন, এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যান, তিনি ১৫ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।[৪]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]উপমহাদেশে প্রথম চা চাষ শুরু হয় ভারতবর্ষের আসামে। তারই হাত ধরে ১৮২৮ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে চা চাষের জন্য জমির পরিমাণ নির্ধারিত হয়।[৫] ১৮৪০ সালে চট্টগ্রাম ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে সর্বপ্রথম চা গাছের বাগান স্থাপিত হয়। কুন্ডদের বাগান হিসেবে পরিচিত চা বাগানটি বিলুপ্ত হয়ে যায় কিছুদিন পরেই।[৬] পরবর্তীতে ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠার পর ১৮৫৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু হয় বাংলাদেশে।[৭] দেশভাগের আগ পর্যন্ত উপমহাদেশের চা শিল্প ভারতীয় চা কর আইন, ১৯০৩ এর অনুযায়ী চলতো।[৮] দেশভাগের পর ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫১ সালে চায়ের গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে পাকিস্তান চা আইন, ১৯৫০ এর অধীনে পাকিস্তান চা বোর্ড গঠিত হয়।[৯][১০] ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পাকিস্তান চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান শেখ মুজিবুর রহমান; পুনর্গঠিত হয় পাকিস্তান চা বোর্ড।[১১] তিনিই ছিলেন চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে ৮ আগস্ট, ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান চা আইন, ১৯৫০ বাতিল করে চা অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ জারি করা হয়।[১২] স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে কেবল দুইটি জেলাতেই চা উৎপাদন করা হতো– চট্টগ্রামের সুরমা ভ্যালি এবং সিলেটের সুরমা ভ্যালিতে।[১৩] স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে চা অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ বাতিল করে চা অধ্যাদেশ, ১৯৭৭ জারি করা হয় এবং পাকিস্তান চা বোর্ডের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ চা বোর্ড করা হয়।[১৪] পরবর্তীতে ১ আগস্ট, ২০১৬ সালে চা অধ্যাদেশ, ১৯৭৭ রহিত করে চা আইন, ২০১৬ জারি করা হয়, এবং এই আইনের অধীনে চা বোর্ড পরিচালিত হচ্ছে।[১৫][১৬]
প্রদর্শনী
[সম্পাদনা]বাগানের সবুজ চা পাতা শ্রমিকদের হাত ঘুরে কারখানায় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কীভাবে ভোক্তার কাছে আসে তা তুলে ধরতে, দেশে প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় চায়ের প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ টি এক্সপো’-২০১৭।[১৭][১৮] বাংলাদেশ চা বোর্ড এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে।[১৮] বাংলাদেশের চা শিল্পকে পরিচিত করতে একটি মাধ্যম গড়ে তোলা এবং দেশে-বিদেশে চা প্রেমীদের কাছে এ শিল্পকে তুলে ধরাই এ প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য।[১৯] এ প্রদর্শনীতে ৩০টি প্যাভিলিয়ন এবং ১৬টি স্টল অংশগ্রহণ করে। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার পুষ্পগুচ্ছ হলে ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল- সিটি গ্রুপ, ডানকান ব্রাদার্স বাংলাদেশ লিমিটেড, ফিনলে টি, এইচআরসি, ইস্পাহানী এবং সিলোন টি।[১৯]
অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]পরিচালনা পর্ষদ
[সম্পাদনা]বর্তমানে বাংলাদেশ চা বোর্ড ১৪জন প্রতিনিধির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে:[২০]
- চেয়ারম্যান
- সদস্য: ২জন
- বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম বিভাগ
- বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট বিভাগ
- বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর বিভাগ
- যুগ্ম-সচিব (রপ্তানি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)
- যুগ্ন-সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)
- প্রধান বন সংরক্ষক
- চেয়ারম্যান, বাংলাদেশীয় চা সংসদ
- চেয়ারম্যান, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ
- চা ব্রোকার প্রতিনিধি: ১জন
- চা উৎপাদনকারী প্রতিনিধি: ২জন
আরো দেখুন
[সম্পাদনা]বাংলাদে চা নিলাম ও ব্রোকার্স
[সম্পাদনা]১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ এ প্রথম নিলাম কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম এ। এর পর ২য় নিলাম কেন্দ্র শ্রীমঙ্গল ও ৩য় চা নিলাম কেন্দ্র পঞ্চগড় এ প্রতিষ্ঠিত হয়। চা বিপননে সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখে এই ব্রোকার্সগণ। এমন কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ ব্রোকার্স এর তালিকাঃ-
- ন্যাশনাল ব্রোকার্স লিমিটেড
- ইনডিগো ব্রোকার্স লিমিটেড
- ইউনিটি ব্রোকার্স লিমিটেড
- পূর্ব বাংলা ব্রোকার্স লিমিটেড
- প্রোডিউস ব্রোকার্স লিমিটেড
- প্রোগেসিভ ব্রোকার্স লিমিটেড
- শ্রীমঙ্গল ব্রোকার্স লিমিটেড
- জালাবাদ টি ব্রোকার্স লিমিটেড
- সোনার বাংলা ব্রোকার্স লিমিটেড
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Low price of tea leaves frustrates farmers"। thedailystar.net। The Daily Star। ১৬ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Plucking tea leaves brings fortune for 7,500 distressed women"। archive.dhakatribune.com। Dhaka Tribune। ১৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ মোঃ হাসিনুর রহমান (২০১২)। "বাংলাদেশ চা বোর্ড"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "চা বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান মেজর জে. আশরাফুল : রাষ্ট্রদূত হলেন মেজর জে. হাসনাত"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১৭।
- ↑ "চা জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বসা চেয়ারসহ দেড়শো বছরের ইতিহাস"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "পর্যটক মুখর দেশের প্রথম চা বাগান কোদালা"। cvoice24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "চায়ের আবির্ভাব ও প্রতিষ্ঠার ইতিহাস"। www.rtvonline.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "ACT No. IX OF 1903" (পিডিএফ)। indiacode.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "যেভাবে ব্রিটিশদের পরিচিত করা চা ক্রমশ হয়ে উঠলো পাকিস্তানিদের আটপৌরে পানীয়"। tbsnews.net। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "About, Bangladesh Tea Board"। devex.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "চায়ের বাগানে ইতিহাসের খোঁজে"। kalbela.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "The Tea Ordinance, 1959" (পিডিএফ)। pakistancode.gov.pk। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "ইতিহাসের আলপথ ধরে পাহাড়ি চট্টগ্রামে"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "The Tea Ordinance, 1977"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "চা আইন, ২০১৬"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "ইতিহাস, বাংলাদেশ চা বোর্ড"। teaboard.portal.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "গানে মাতোয়ারা চা মেলা'র প্রথম সন্ধ্যা"। banglatribune.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ ক খ "ঢাকায় চা প্রদর্শনী শুরু ১২ জানুয়ারি"। risingbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ ক খ "দেশের প্রথম চা প্রদর্শনী বৃহস্পতিবার"। risingbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "পরিচালনা পর্ষদ, বাংলাদেশ চা বোর্ড"। teaboard.portal.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।