ফরেনসিক রসায়ন
ফরেনসিক রসায়ন
[সম্পাদনা]ফরেনসিক রসায়ন মূলত: রসায়ন এবং এর উপশাখা ফরেনসিক বিষবিদ্যার (forensic toxicology) আইনি ক্ষেত্রে প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করে । একজন ফরেনসিক রসায়নবিদ কোনও অপরাধস্থলে (crime scene).[১] পাওয়া অজানা বস্তুর শনাক্তকরণে সহায়তা করেন । অজানা বস্তুর শনাক্তকরণের জন্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা অনেকরকম যন্ত্র এবং পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন । সাধারণত ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলির মধ্যে high-performance liquid chromatography(HPLC), gas chromatography-mass spectrometry(GCMS),atomic absorption spectroscopy(AAS), Fourier transform infrared spectroscopy (FTIR), এবং thin layer chromatography(TLC) ইত্যাদি প্রধান । অপরাধস্থলে অনেক ধরনের অজানা পদার্থ পাওয়া যেতে পারে এবং শনাক্তকরণে ব্যবহৃত কোনো কোনো যন্ত্র ধংসাত্মক পদ্ধতিতে কাজ করে, তাই শনাক্তকরণে কী পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে তা ঠিক করা খুব গুরুত্বপূর্ণ । যেখানে সম্ভব, সেখানে প্রথমে অ-ধংসাত্মক পদ্ধতি প্রয়োগ করার চেষ্টা করা হয় । এতে প্রামাণ্য বস্তূও নষ্ট হয় না, আবার কোন ধংসাত্মক পদ্ধতি ব্যবহার করলে শনাক্তকরণ সহজ হবে, তারও ধারণা পাওয়া যায় ।
অন্যান্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সাথে সাথে ফরেনসিক রসায়নবিদরা আদালতে উপস্থিত হয়ে প্রত্যক্ষদর্শীর মত তাঁদের প্রমাণ পেশ করেন । ফরেনসিক রসায়নবিদদের কাজ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা,(যেমন Scientific Working Group on the Analysis of Seized Drugs) দ্বারা প্রস্তাবিত নিয়মাবলী ও মানদন্ড মেনে চলতে বাধ্য । নিয়ন্ত্রক সংস্থা নির্ধারিত মানদন্ড ছাড়াও , বিভিন্ন ফরেনসিক সংস্থা তাদের ফলাফল ও যন্ত্রপাতির গুণমানের নিশ্চয়তা বজায় রাখতে নিজস্ব কিছু বাড়তি নিয়মকানুন অনুসরণ করে । প্রাপ্ত ফলাফল যাতে নিখুঁত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য ফরেনসিক রসায়নবিদরা যন্ত্রপাতি এবং বিভিন্ন রাসায়নিকের পরিমাণ তারা ঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারছে কী না , তা নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা হয় ।
তদন্তে সহায়তা
[সম্পাদনা]ফরেনসিক রসায়নবিদরা তদন্তের দিকনির্দেশ করতে এবং তদন্তকারীর কোনও অনুমান সমর্থন বা বাতিল করায় সাহায্য করেন । ঘটনাস্থলে পাওয়া অজানা পদার্থের পরিচয় জানা গেলে কোন পথে তদন্ত এগোবে, সেটা ঠিক করা সহজ হয় । যেমন, অগ্নিঘটিত ঘটনায়, ফরেনসিক রসায়নবিদ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন যে আগুন লাগাতে কোনও অতিদাহ্য পদার্থ , (যেমন পেট্রল বা কেরোসিন )ব্যবহৃত হয়েছিল কিনা ; সেক্ষেত্রে আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছিল এই সিদ্ধান্তে আসা যায় [৩] । আবার সন্দেহভাজনদের মধ্যে কার নাগালে বিশেষ কোনও জিনিস আছে, তা জানলে অপরাধীর তালিকা বাছাই করতে সুবিধা হয় । যেমন, বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে , RDX বা C-4 পাওয়া গেলে তা দুর্ঘটনার সাথে মিলিটারি সংযোগের প্রমাণ দেয় , কারণ এই সব বিস্ফোরক মিলিটারীরই ব্যবহার করে থাকে । আবার, যদি TNT ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়, তবে সন্দেহভাজনের তালিকা বেড়ে যায়, কেননা, এটা মিলিটারি আর ভাঙ্গার কাজ, দুটোতেই ব্যবহার করা হয় [৪] । বিষপ্রয়োগের ঘটনার তদন্তে ,নির্দিষ্ট কিছু বিষ পাওয়া গেলে সেটা গোয়েন্দার জিজ্ঞাসাবাদের সময় সহায়ক হয় । যেমন ,যদি রাইসিন প্রয়োগে মৃত্যু হয়ে থাকে , তবে তদন্তকারী এর সম্ভাব্য উত্স (রেড়ী গাছের বীজ )খুঁজতে পারেন । অন্যদিকে, যদি স্ট্রিকনিন প্রয়োগে মৃত্যু হয়ে থাকে, তবে এর গাছ বা এর বীজ অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কে কিনেছিল, তা জানা যেতে পারে ।
তদন্তকারীদের যদি সন্দেহ হয় যে ড্রাগ বা এলকোহল প্রয়োগ করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে ফরেনসিক রসায়নবিদ পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত অথবা বাতিল করতে পারেন । ফরেনসিক রসায়নবিদরা যে সব যন্ত্র ব্যবহার করেন, সেগুলো খুব সামান্য মাত্রায় ও কোনও বস্তুর উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে । তাই সম্ভাব্য বস্তুর পরিমাণও তদন্তে খুব গুরুত্বপূর্ণ । যেমন, মদ খেয়ে গাড়ী চালালে রক্তে এলকোহলের মাত্রা মেপে শাস্তি হবে কিনা , তা বলা যায় [৫]। অতিমাত্রায় ড্রাগ গ্রহণের ফলে মৃত্যু হয়েছে , এমন ঘটনায় মৃত ব্যক্তির শরীরে পাওয়া ড্রাগের পরিমাণ মেপে তা নিশ্চিত করা যায় ।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;FC def
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;OK bombing
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;arson acc
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;mil explosive
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;WHO DUI
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
বহিসংযোগ
[সম্পাদনা]- বিজ্ঞান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে
- ↑ "A Simplified Guide to Forensic Drug Chemistry" (পিডিএফ)। ২১ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫।
- ↑ Browne, Malcolm W. (এপ্রিল ২১, ১৯৯৫)। "Terror in Oklahoma: The Science; Experts Search for Debris to Link Bomb to a Suspect"। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৮, ২০১৫।
- ↑ Stern, Wal। "Modern Methods of Accelerant Analysis"। T.C. Forensic। মার্চ ৩, ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৮, ২০১৫।
- ↑ "Common Explosives"। The National Counterterrorism Center। ১৩ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৮, ২০১৫।
- ↑ "Legal BAC limits Data by country"। World Health Organization। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৩০, ২০১৫।