বিষয়বস্তুতে চলুন

নিশাচর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নিশাচর প্রাণীরূপে পেঁচার সুখ্যাতি রয়েছে। অবশ্য কিছু প্রজাতির পেঁচাকে দিনের বেলায়ও সক্রিয় হতে দেখা যায়।

নিশাচর (ইংরেজি: Nocturnality) জীবজগতে বিদ্যমান বিশেষ প্রাণীদের এক ধরনের চরিত্রগত আচরণবিশেষ। নিশাচর প্রাণীরা প্রধানত রাতে সক্রিয় থাকে।[] শিকার কিংবা খাদ্যের সন্ধানে তারা রাতে বাইরে বের হয় বা বিচরণ করে। বিপরীতক্রমে দিবাভাগে অধিকাংশ প্রজাতির প্রাণী চলাফেরা করে ও খাদ্য সংগ্রহ করে। এছাড়াও তারা দিনের বেলা ঘুমায়। তাদের প্রাত্যহিক জীবন বংশ পরম্পরায় এভাবেই অগ্রসর ও প্রবাহিত হয়। ল্যাটিন ভাষায় নক্স বা নাইট, ডার্কনেস থেকে নিশাচর শব্দটির উদ্ভব।[]

বিজ্ঞানীরা অনেক সময় নিশাচর প্রাণীদের ক্ষেত্রে ক্রেপাসকুলার বা গোধূলীলগ্নের প্রাণী নামেও নিশাচর প্রাণীকে বিবৃত করে থাকেন যারা খুব গভীর রাত্রে সক্রিয় থাকে না। এ জাতীয় প্রাণী গোধূলী, ঊষালগ্ন কিংবা কখনো কখনো উজ্জ্বল চন্দ্রকিরণে শিকারে বের হয়।

বৈশিষ্ট্যাবলী

[সম্পাদনা]

নিশাচর প্রাণীরা প্রকৃতিগতভাবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইন্দ্রিয়শক্তির অধিকারী হয়ে থাকে। শ্রবণশক্তি, ঘ্রাণশক্তিসহ দৃষ্টিশক্তি - এ ইন্দ্রিয়গুলোর অন্যতম। তাদের চোখ বিশেষ ধরনের হয় যা টর্চলাইটের আলো কিংবা অন্য কোন দৃষ্টিগ্রাহ্য আলোর সাহায্যে উজ্জ্বল লাল, কমলা, হলুদ ধরনের দেখা যায়। আবার, বিড়াল এবং নকুলজাতীয় প্রাণীরা তাদের চোখ দিয়ে নিম্ন পর্যায় কিংবা দিনের উজ্জ্বল আলোয় চলাফেরা করতে সক্ষম। কিন্তু বাদুড়জাতীয় প্রাণী শুধুমাত্র রাতের আলোয় দেখতে পারে। অনেক নিশাচর প্রাণী যেমন - পেঁচা তার শারীরিক আকারের তুলনায় বৃহৎ আকৃতির চোখের অধিকারী।

দিবাচর প্রাণী হিসেবে কাঠবিড়ালী, গায়কপাখী ইত্যাদিগুলো দিবাভাগে তাদের কার্যাদি সম্পাদন করে। ক্রেপাসকুলার প্রজাতির খরগোশ, বিড়াল, হায়েনাকে নিশাচর প্রাণী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। কেথিমেরাল প্রজাতি হিসেবে সিংহ দিন ও রাত - উভয় সময়েই চলাচলে সক্ষম।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

[সম্পাদনা]

রাতে সক্রিয় থাকায় দিবাভাগের প্রাণীর সাথে তাদের খাদ্যের সাংঘর্ষিকতা হয় না। বাজপাখী এবং পেঁচা প্রায় একই ধরনের শিকার করলেও একটি দিবাচর ও অন্যটি নিশাচর প্রকৃতির। সিংহ তার স্বতন্ত্র চোখের দৃষ্টির কারণে রাতের আঁধারে শিকার করতে ভালবাসে। কেননা, তার খাদ্য হিসেবে জেব্রা, এন্টিলোপ ইত্যাদি প্রাণীগুলো দূর্বল দৃষ্টিশক্তির অধিকারী। দিবাভাগে খাদকে পরিণত হবার হাত থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র প্রজাতির অনেক ইঁদুরজাতীয় প্রাণী রাতে বের হতে পছন্দ করে। এছাড়াও, দিবাভাগের অনেক প্রজাতি নিশাচর বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। অনেক সামুদ্রিক পাখী এবং সামুদ্রিক কচ্ছপও আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবার উদ্দেশ্যে রাতে বের হয়।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ""Nocturnal". BBC. Retrieved 2011-04-25"। ২০১৮-০১-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-২৭ 
  2. Collins Pocket Latin Dictionary (First ed.). HarperCollins. 2008. p. 230. আইএসবিএন ৯৭৮০০০৭২৬৩৭৪৫