বিষয়বস্তুতে চলুন

ডারমট রিভ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডারমট রিভ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ডারমট আলেকজান্ডার রিভ
জন্ম (1963-04-02) ২ এপ্রিল ১৯৬৩ (বয়স ৬১)
কাউলুন, হংকং
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক, কোচ, ধারাভাষ্যকার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৫৩)
১৮ জানুয়ারি ১৯৯২ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১১৬)
২৭ মে ১৯৯১ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই৯ মার্চ ১৯৯৬ বনাম শ্রীলঙ্কা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮৩ – ১৯৮৭সাসেক্স
১৯৮৮ – ১৯৯৬ওয়ারউইকশায়ার
১৯৯৮সমারসেট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ২৯
রানের সংখ্যা ১২৪ ২৯১
ব্যাটিং গড় ২৪.৮০ ২৪.২৫
১০০/৫০ –/১ –/–
সর্বোচ্চ রান ৫৯ ৩৫
বল করেছে ১৪৯ ১১৪৭
উইকেট ২০
বোলিং গড় ৩০.০০ ৪১.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ১/৪ ৩/২০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

ডারমট আলেকজান্ডার রিভ, ওবিই (ইংরেজি: Dermot Reeve; জন্ম: ২ এপ্রিল, ১৯৬৩) হংকংয়ের কাউলুন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক এবং বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, কোচ ও ধারাভাষ্যকার।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ও দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন ডারমট রিভ। দলে তিনি মূলতঃ আনঅর্থোডক্স অল-রাউন্ডারের ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের কোচের দায়িত্বে রয়েছেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে তিন টেস্ট ও ঊনত্রিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার সুযোগ ঘটেছে তার। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স, ওয়ারউইকশায়ার ও সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।

হংকংয়ের বর্ষসেরা ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হয়েছেন তিনি যা ঐ দেশের ক্রীড়ায় অসামান্য অবদানের জন্য প্রদান করা হয়েছিল।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

ইংল্যান্ডের লর্ডসভিত্তিক ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী উদীয়মান খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া এমসিসি তরুণ ক্রিকেটারদের একাডেমিতে প্রথমবারের মতো খেলেন। ১৯৮৩ মৌসুমে সাসেক্সের পক্ষে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের ঐ মৌসুমে ২৯.৩৫ গড়ে ৪২ উইকেট পেলেও ব্যাট হাতে তেমন সফলতা দেখাতে পারেননি। ২০ ইনিংসে অংশ নিয়ে অর্ধ-শতকের কোটা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি আরও ছয় বছর সাসেক্সের সদস্য ছিলেন। ১৯৮৭ মৌসুমটি তার সেরা সময় ছিল। ৪০ ঊর্ধ্ব ব্যাটিং গড়ের পাশাপাশি ৩০-এর নিচে ৪২ উইকেট দখল করেন ডারমট রিভ।

কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

১৯৮৮ সালে ওয়ারউইকশায়ারে স্থানান্তরিত হন। এখানেই তিনি তার খেলোয়াড়ী জীবনের পূর্ণাঙ্গ সফলতা লাভ করেছিলেন। ১৯৯০ সালে গ্রীষ্মে ব্যাটসম্যানদের উপযোগী পীচে তিনি গড়ে ৫৪ রান তুলেন। তন্মধ্যে, কার্টলি অ্যামব্রোস সমৃদ্ধ তারকা খেলোয়াড়দের রুখে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অপরাজিত ২০২ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও আরও দুইটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ১,৪১২ রান তুলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে কাউন্টি দলকে স্বর্ণালী সময় পার করান। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপ, এএক্সএ ইকুইটি ও ল লীগ এবং বেনসন এন্ড হেজেস কাপের শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন ডারমট রিভ। কেবলমাত্র ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত হয়েছিল তার দল।

কয়েক বছর পর রিভ 'উইনিং ওয়েজ' শিরোনামে গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এতে ওয়ারউইকশায়ারের শীর্ষ ব্যাটসম্যান ব্রায়ান লারা থাকা স্বত্ত্বেও তার এ অর্জনের কথা তুলে ধরেন। কেবলমাত্র হ্যাম্পশায়ারের বামহাতি স্পিনার রাজেশ মারু'র বিপক্ষেই তার ব্যাট কথা বলেনি ও কাছাকাছি থাকা ফিল্ডারদের হাতে কট আউট থেকে বিরত ছিলেন তিনি।[]

পরের মৌসুমে ওয়ারউইকশায়ার চ্যাম্পিয়নশীপ ধরে রাখে ও ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিরও শিরোপা লাভ করে। তবে, ১৯৯৬ মৌসুমের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে খেলে দল ত্যাগ করেন। আর্থিক সুবিধা লাভের খেলায় £৪০০,০০০ পাউন্ড স্টার্লিং করমুক্ত অবস্থায় লাভ করেন।[] ১৯৯৬ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন। একই বছর তিনি ক্রিকেট খেলায় সবিশেষ অবদানের জন্য ওবিই পদবী লাভ করেন। এরপর তিনি সমারসেটের কোচের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে বেশ কয়েকটি একদিনের ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও এর পাশাপাশি চ্যানেল ফোর টেলিভিশনে ক্রিকেট ধারাভাষ্যকর্মে কাজ করতে শুরু করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯৮২ সালের আইসিসি ট্রফিতে হংকংয়ের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন ডারমট রিভ। ব্যাট হাতে ৩৪.৫০ গড়ে রান তুলেন ও বল হাতে ১৫.৭১ গড়ে উইকেট লাভ করেন। ১৯৯১ সালে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে তিনটি টেস্টে অংশ নিলেও একদিনের আন্তর্জাতিকে নিজেকে গড়ে তুলেন। ঐ স্তরের ক্রিকেটে ঊনত্রিশটি ওডিআইয়ে অংশ নেয়ার সুযোগ হয় তার। ১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। তবে ওডিআইয়ে কখনো বড় অঙ্কের রান সংগ্রহ করেননি।

তার ব্যাটিং অনেকাংশেই নিচু পর্যায়ের ছিল। কিন্তু, অধিকাংশ ইনিংসে অপরাজিত থাকার সুবাদে ব্যাটিং গড় উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে চলে যায়।

ধারাভাষ্যকর্মে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলার স্বত্ত্ব বিবিসি থেকে চ্যানেল ফোরে সম্প্রচারের ফলে রিভ ধারাভাষ্যকর্মে নিযুক্ত থাকেন। ক্রিকেট পণ্ডিতদের সাথে আলোচনা, ধারাভাষ্য, সূচনাপর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, বর্তমান ও সাবেক খেলোয়াড়দের স্বাক্ষাৎকার নিতেন তিনি। মে, ২০০৫ সালে কোকেন আসক্তির সাথে অভিযুক্ত হন। ২০০৪ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্ট শুরুর পূর্বে নেশাসক্ত অবস্থায় ধারাভাষ্য কক্ষে হাজির হন বলে জানা যায়।

এরপর পাঁচ বছর ধারাভাষ্য দলের সাথে কাজ করার পর চ্যানেল ফোর ত্যাগ করেন।[] এছাড়াও, ওয়ারউইকশায়ারের সক্রিয় খেলোয়াড় থাকাবস্থায়ও মারিজুয়ানা সেবনের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তবে এরজন্য কেবলমাত্র এক মৌসুম খেলার বাইরে ছিলেন।

কোচিংয়ে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

জুলাই, ২০০৮ সালে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের কোচের জন্য মনোনীত হন। এর দুই বছর পূর্বেই নিউজিল্যান্ডে পরিবারকে নিয়ে আসেন। ২০০৮-০৯ মৌসুমে চারদিনের প্লাঙ্কেট শিল্ড প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় দলকে নিয়ে যান। ২০০৯-১০ মৌসুমে টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় দলকে শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন। তবে কোচ হিসেবে তিনি বিতর্কের সৃষ্টি করেন।

একটি ঘটনায় তাকে জরিমানা করা হয় ও ঘরোয়া একদিনের খেলায় বল-টেম্পারিংয়ের ঘটনার সাথে জড়িত ইংল্যান্ডের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা রবি বোপারার জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হয়। ৭ এপ্রিল, ২০১০ তারিখে স্ট্যাগসের কোচ হিসেবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এর কারণ ছিল সিডনিতে বসবাসকারী পরিবারকে সঙ্গ দেয়া।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়ার পক্ষে কোচের দায়িত্বে ছিলেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]