বিষয়বস্তুতে চলুন

উবাইদাহ ইবনে হারিস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উবাইদাহ ইবনে হারিস
মুহাম্মাদের সাহাবা
জন্ম৫৬০ খ্রিষ্টাব্দ
মক্কা, সৌদি আরব
মৃত্যু৬২৩ খ্রিষ্টাব্দ
সাফরা, মদিনা
যার দ্বারা প্রভাবিতমুহাম্মাদ, আবু বকর
পিতামাতা
  • আল হারিস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব (পিতা)
  • সুখাইলা (মাতা)
উল্লেখযোগ্য কাজবদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ
আত্মীয়তিন ভাই ছিলো; উবাইদা, তুফাইল ও হুসাইন

উবাইদাহ ইবনুল হারিস উপনাম নাম উবাইদাহ। রাসুলের একজন বিশিষ্ট সহচর-সাহাবী। যিনি ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। [][]

জন্ম ও বংশ পরিচয়

[সম্পাদনা]

উবাইদার পিতার নাম আল হারিস এবং মাতার নাম সুখাইলা। দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব ইবন আবদে মান্নাফ। তিনি কুরাইশ গোত্রের সন্তান। তিন ভাই ছিলেন উবাইদা, তুফাইল ও হুসাইন।

ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত

[সম্পাদনা]

উবাইদাহ ইবনুল হারিস, আবু সালামা ইবনে আবদিল আসাদ, আল আরকাম ইবন আবিল ‍আরকাম এবং উসমান ইবন মাজউন, আবু বকরের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে এক সাথে ঈমান আনেন। উবাইদাহ বনী আবদে মান্নাফের নেতা থাকা অবস্থায় আবু সালামা ইবনে আবদিল আসাদ, আল আরকাম ইবন আবিল ‍আরকাম এবং উসমান ইবন মাজউন এর সাথে হযরত আবু বকরের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন । এরপরে তিনি তার দুই ভাই তুফাইল, হুসাইন এবং মিসতাহ ইবন উসাসাহকে সাথে করে মদীনায় রওয়ানা হলেন। এক খন্ড দান করা জমিতে বসতি স্থাপন করে বসবাস শুরু করেন। []

যুদ্ধে অংশগ্রহণ

[সম্পাদনা]

মক্কার মুশরিকদের গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য হিজরতের আট মাস পরে ৬০ জন মুহাজিরের একটি দলের নেতৃত্ব দিয়ে রাসূল উবাইদা ইবন হারিস রাবেগের দিকে পাঠান। ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় অভিযান ছিলো এটি । তারা রাবেগের নিকটে পৌঁছলে আবু সুফইয়ানের নেতৃত্বে দুশো মুশরিকের একটি বাহিনীর সাথে তাদের সামান্য সংঘর্ষ হয়। ব্যাপারটি যুদ্ধ ও রক্তপাত পর্যন্ত না গড়িয়ে কিছু তীর ও বর্শা ছোঁড়াছুড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এ ঘটনার পর বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি । কাতারবন্দী হওয়ার পর মুশরিকদের পক্ষ থেকে উতবা, শাইবা ও ওয়ালীদ বেরিয়ে এসে চিৎকার করে বলতে থাকে- আমাদের সাথে লড়বার কেউ আছে কি? রাসূল বাছাই করে হযরত আলী, হামযা ও উবাইদাহ ইবনে হারেস এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। হযরত উবাইদাহ ও বিপক্ষে ওয়ালীদ এর মধ্যে দীর্ঘ সময় লড়াই চললো। তারা দুজনই মারাত্মক যখম হলেন। []

তবে আলী ও হামযা উভয়েই প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে ফেলেছিলো। তারা এক সাথে ওয়ালীদ এর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে তাকে হত্যা করেন এবং হযরত উবাইদাহকে রণাঙ্গণ থেকে আহত অবস্থায় তুলে নিয়ে আসেন। হযরত উবাইদাহর একটি পা হাঁটুর নীচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি আপাদমস্তক রক্তে রঞ্জিত হয়ে পড়েন। রাসূল তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য তার হাঁটুর ওপর স্বীয় মাথাটি রেখে দেন।

হযরত উবাইদা খুশিতে এই বলে তিনি "আবু তালিবের" একটি কবিতার এই পঙ্‌ক্তি আবৃত্তি করেন, “আমরা মুহাম্মাদের হিফাজত করবো। এমনকি চারপাশে মরে পড়ে থাকবো এবং আমাদের সন্তান ও স্ত্রীদের আমরা ভুলে যাব । []

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ তাকে সাথে করে মদীনার দিকে রওয়ানা হন। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। পথে ‘সাফরা’ নামক স্থানে ৬৩ বছর বয়সে ইনতিকাল করেন। সাফরার বালুর মধ্যে তাকে দাফন করা হয়।[]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]
  • রেফারেন্স বই - আসহাবে রাসূলের জীবনকথা

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. মুসলিম শরীফ- (হাদিস নং ৭৪৫২) 
  2. সুনানে আবু দাউদ- (হাদিস নং- ১৫/২৬৬৫) মল্লযুদ্ধ সম্পর্কে 
  3. আসহাবে রাসুলের জীবন কথা। পৃষ্ঠা ১২। 
  4. সীরাতু ইবন হিশাম- ( ২/২৪ ) 
  5. সীরাতু ইবন হিশাম-( ২ ) 
  6. সীরাতু ইবন হিশাম- (২৫\ ৪১) 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]