Logo
Logo
×

সারাদেশ

বাহাত্তরের সংবিধান ছিল ভারতের চাপিয়ে দেওয়া গোলামির সংবিধান

Icon

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম

বাহাত্তরের সংবিধান ছিল ভারতের চাপিয়ে দেওয়া গোলামির সংবিধান

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, বাহাত্তরের সংবিধান, এটি এ দেশের সাধারণ মানুষের সংবিধান নয়। এটি ছিল ভারতের পক্ষ থেকে চাপিয়ে দেওয়া গোলামির সংবিধান। স্বাধীন দেশে আর গোলামির সংবিধান চলবে না। এ দেশের মানুষ এখন সংস্কার চায়। দেশের অধিকাংশ মানুষের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। ১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। ১৯৭১ সালে ইসলামের কথা বলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কুরআন সুন্নাহবিরোধী কাজ করেছে আওয়ামী লীগ।

বৃহস্পতিবার বিকালে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় স্বাধীনতার এক মাস। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে জুলুম নির্যাতনের দিন শেষ হয়েছে। গত ১৫ বছর শেষ হাসিনা এক দলীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রতিশোধ ও বিভাজনের রাজনীতি করে গেছে। গত ১৫ বছরে হাসিনা সরকার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে পিলখানা সেনা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের শত শত নেতাকর্মীর লাশ গুম, দেশের প্রখ্যাত আলেম নির্দোষ আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করেছে। সিলেটের সিংহ পুরুষ ইলিয়াস আলীকে গুমসহ নির্বিচারে খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। নির্যাতন সেল আয়নাঘর তৈরি করি নিরপরাধ মানুষকে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। হাসিনার নির্মম অত্যাচার নমরুদ-ফেরাউনের শাসনকেও হার মানিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের রাজনীতি ছিল গুম, খুন ও প্রতিহিংসার। দেশের টাকা বিদেশে পাচার, নিরীহ মায়ের কোল খালি করা। আলেম ওলামাকে জেল-জুলুম খাটানো। এ কারণে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের মাটির এক ইঞ্চিতেও তার ঠাঁই হয়নি। শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। অন্তবর্তীকালীন সরকার এটা করতে ব্যর্থ হলে এদেশের মানুষ বরদাশত করবে না।

মামুনুল হক আরও বলেন, শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। গত ১৫ বছরে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত এনে দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। এগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।

মামুনুল হক বলেন, ৫ আগস্ট বাংলাদেশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা এবং দেশের সব শ্রেণির মানুষের আন্দোলনে দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে। এটি বাংলাদেশের মুক্তির মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এই চেতনাকে ধারণ করতে হবে। ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর দেশের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা অনেক ষড়যন্ত্র করেছে কিন্তু ছাত্র-জনতা তা ব্যর্থ করে দিয়েছে। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ইস্পাত কঠিন শপথ নিতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।

হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা আলেম-ওলামাদের প্রতি আস্থা রাখুন- ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর মাদ্রাসাছাত্ররা মন্দির পাহারা দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ১৫ বছর শাসনকালে যেভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর অনেক নির্যাতন হয়েছে; কিন্তু গত এক মাসে দেশে একটি নির্যাতনও হয়নি। আপনাদের ধর্ম-কর্ম পালনে কোনো বাধা নেই। আপনারা বিনাদ্বিধায় আপনাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করুন। কারো কান কথা বিশ্বাস করবেন না। কারো ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেবেন না।

খেলাফত মজলিসের সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মুফতি আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি হাফিজ সৈয়দ জয়নুল আবেদীনের সঞ্চালনায় সমাবেশ অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ ও মাওলানা আতাউলাহ আমিন, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফয়েজ আহমদ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোমতাজুল হাসান আবেদ, জমিয়তে উুলামায়ে ইসলামের সৈয়দ তালহা আলম, হেফাজতে ইসলামের সেক্রেটারি মুফতি আব্দুল হক, খেলাফত মজলিশ নেতা মাওলানা আব্দুল মুত্তালিব, ডা. আতাউর রহমান, মাওলানা দিলোয়ার হোসাইন, মাওলানা সৈয়দ ফেদাউল হক প্রমুখ।

মাওলানা মামুনুল হকের সুনামগঞ্জে সমাবেশ সফল করতে সকাল থেকে শহরের পুরাতন বাসস্টেশন এলাকায় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মিছিল নিয়ে আসতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মামুনুল আসার আগেই গোটা পুরাতন বাসস্টেশন এলাকা হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম