ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিদেশ বিভাগের সব খবর

গাজা থেকে ইসরাইলে বিরল রকেট হামলা

গাজা থেকে ইসরাইলে বিরল রকেট হামলা

ফিলিস্তিনের গাজায় ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েও বুক চেতিয়ে লড়াই করছেন ফিলিস্তিনি যুদ্ধারা। বুধবার ভোর থেকে দফায় দফায় ইসরাইলে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। ইসরাইল হামাসের এ হামলার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরাইলে বিরল চারটি রকেট হামলা করা হয়েছে। তবে এতে কোনো ক্ষতি হয়নি দাবি ইসরায়েলের। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে। খবর আলজাজিরার। ইসরাইলের সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, বুধবার ভোরে গাজা থেকে ছোড়া দুটি রকেট খোলা জায়গায় পড়েছে। পরে আরও দুটি রকেট হামলা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করার দাবি করেছে আইডিএফ। ফিলিস্তিনের রকেট হামলার সময় ইসরাইলের বেশ কিছু স্থানে সাইরেন বেজে ওঠে। এ ছাড়া বুধবার সকালে পশ্চিমতীরের নাবলুসে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৩ ইসরাইলি সেনা আহত হয়েছে। পরে তারা পালিয়ে গিয়ে জেরুজালেমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। গাজায় অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।

সিরিয়ায় বলীয়ান তুরস্ক, সামরিক শক্তিতেও অপ্রতিরোধ্য

সিরিয়ায় বলীয়ান তুরস্ক, সামরিক শক্তিতেও অপ্রতিরোধ্য

সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে তুরস্কের নাম। বিশেষ করে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের হাতে দেশটির স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের পতনের পর থেকে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে তুরস্ক। কারণ গৃহযুদ্ধের শুরু থেকেই বিদ্রোহীদের এককভাবে সমর্থন দিয়ে গেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ধারণা করা হয় যুদ্ধের পুরোটা সময় বিদ্রোহীদের অস্ত্র থেকে শুরু করে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে গেছে তুরস্ক। ফলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের জয়লাভের মধ্য দিয়ে নতুন করে সামনে আসছে তুরস্কের সামরিক সক্ষমতার বিষয়টি। খবর ইরনার।

আফগানিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে মন্ত্রী নিহত

আফগানিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে মন্ত্রী নিহত

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন দেশটির শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী খলিল উর রহমান হাক্কানি। কাবুলে শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিজ কার্যালয়ে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসির। বুধবার কাবুলে শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বিস্ফোরণে মন্ত্রীর প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটেছে বলে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন হাক্কানির ভাতিজা আনাস হাক্কানি। নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, কাবুলে শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মন্ত্রী খলিল উর রহমান হাক্কানিসহ তার কয়েকজন সহকর্মী নিহত হয়েছেন। আফগানিস্তানে তালেবানের দুই দশকের বিদ্রোহের সময় সবচেয়ে সহিংস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাপক পরিচিত দেশটির সশস্ত্র সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ক। মন্ত্রী খলিল উর রহমান হাক্কানির ভাই জালালউদ্দিন হাক্কানি এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বিস্ফোরণে নিহত খলিল উর রহমান হাক্কানি দেশটির তালেবান নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানির চাচা। ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর দেশটির ক্ষমতায় আসে সশস্ত্র ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান। আফগানিস্তানের এই গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছে।

সিরিয়ার নৌবহরে ইসরাইলি হামলা

সিরিয়ার নৌবহরে ইসরাইলি হামলা

সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে দেশটির নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। বুধবার সিরিয়ার বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। বাশার আল আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়াজুড়ে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮০টি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এর মধ্যে সিরিয়ার নৌবহরও রয়েছে। এদিকে সিরিয়ায় একটি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল গঠনের কথা জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ। এরই মধ্যে দেশটির দক্ষিণের ওই অঞ্চলে সিরিয়ার ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।   বুধবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আল-বাইদা ও লাতাকিয়া বন্দরে নোঙর করা সিরিয়ার নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। এই হামলার তথ্য স্বীকার করে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার সামরিক স্থাপনাগুলোকে অকার্যকর করার যে পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরাইল, এসব হামলা সেই পদক্ষেপেরই অংশ। এ ছাড়া ইসরাইলের স্থল বাহিনী সিরিয়া ও দখলকৃত গোলান মালভূমির মধ্যবর্তী বাফার জোনেরও দখল নিয়েছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, ইসরাইলের প্রতি হুমকির আশঙ্কা রয়েছে এমন সব স্থাপনা ধ্বংস করাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি সিরিয়ার নৌবহর ধ্বংস করাকে বিশাল সাফল্য হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আইডিএফ দাবি করেছে, আসাদ সরকারের পতনের পর অস্ত্র যাতে চরমপন্থিদের হাতে চলে না যায় সেজন্যই এ পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ মঙ্গলবার বলেন, তিনি সামরিক বাহিনীকে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে ইসরাইলি বাহিনীর স্থায়ী উপস্থিতি থাকবে না। তবে সেটি নিয়ন্ত্রিত হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি কাটজ। বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। বিদ্রোহীদের মাত্র ১২ দিনের তীব্র হামলায় পতন ঘটেছে ২৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের। এর মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটল আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের সাম্রাজ্যের। স্বৈরাচার পতনের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও উচ্ছ্বসিত সিরিয়ার বাসিন্দারা। তবে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তির বদলে দানা বেঁধেছে উদ্বেগ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮০ বার দেশটির কৌশলগত বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এর মধ্যে ১৫টি নৌযান, বিমান-বিধ্বংসী ব্যাটারি এবং কয়েকটি শহরে অস্ত্র উৎপাদনকারী কেন্দ্রও আছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ১৫টি নৌযান, বিমান-বিধ্বংসী ব্যাটারি এবং কয়েকটি অস্ত্র উৎপাদন সাইট ছিল। এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে- অস্ত্রের গুদাম, গোলাবারুদের গুদাম, বিমানবন্দর, নৌঘাঁটি ও গবেষণা কেন্দ্রসহ সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের মধ্যে কয়েকটি আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে যুক্ত। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো অভিপ্রায় নেই। তবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন আমরা তা করতে চাই। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লাখ লাখ নাগরিক প্রতিবেশীগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিল। বিশেষ করে তুরস্ক ও লেবাননে। ইউরোপের দেশগুলোতেও বিপুলসংখ্যক সিরিয়ার নাগরিক শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। তবে বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ার পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করেছে। সাধারণ নাগরিকরা রাস্তায় বেরিয়ে আনন্দ-উল্লাস করছেন। আসাদ পালিয়ে যাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন। এমন পরিস্থিতিতে যেসব নাগরিক প্রতিবেশী তুরস্ক ও লেবাননে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা এখন ফিরতে শুরু করেছেন। বহু শরণার্থীকে দেখা গেছে সীমান্ত দিয়ে সিরায়ায় প্রবেশ করেছেন। এ সময় তাদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহন করতে দেখা গেছে। এদিকে স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মোহাম্মাদ আল বশিরকে। তিনি আসাদ সরকারের পতনে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন। এক টেলিভিশন ভাষণে মোহাম্মাদ আল বশির জানিয়েছেন, ১ মার্চ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

আসাদকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রাশিয়ায় নেওয়া হয়েছে

আসাদকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রাশিয়ায় নেওয়া হয়েছে

সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দামেস্কে প্রবেশের খবরে ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রায়াবকভ। এনবিসি নিউজে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। খবর আরটির। এর আগে সোমবার ক্রেমলিন জানায়, তারা বাশার ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ১৩ বছর বাশারের ক্ষমতায় টিকে থাকার পেছনে দুই মিত্র দেশ রাশিয়া ও ইরানের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এই সময়ের মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো স্বৈরশাসক বাশারকে পদত্যাগের আহ্বান জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। রায়াবকভ বলেন, তিনি এখন সম্পূর্ণ নিরাপদ। এখান থেকে প্রমাণ হয়েছে, নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে রাশিয়া প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়। তবে কী পরিস্থিতির কারণে তিনি এখানে এলেন বা কীভাবে বিষয়গুলোর নিষ্পত্তি হবে, সে বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান রায়াবকভ। বাশার আল আসাদকে এখন বিচারের জন্য ফেরত দেয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রুশ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যে প্রচলিত ধারা চালু করেছে (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি), তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এদিকে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের পর নিজের প্রথম মন্তব্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, তেহরানের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে, সিরিয়ায় যা ঘটেছে তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী শাসকের (ইসরাইল) যৌথ পরিকল্পনার ফসল।