শওকত ওসমান
শওকত ওসমান | |
---|---|
জন্ম | শেখ আজিজুর রহমান ২ জানুয়ারি ১৯১৭ সাবলসিংহপুর, হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা ভারত) |
মৃত্যু | ১৪ মে ১৯৯৮ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮১)
পেশা | লেখক, সাহিত্যিক, কবি |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
ধরন | ছোটগল্প, উপন্যাস |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | জননী, ক্রীতদাসের হাসি |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | একুশে পদক, বাংলা একাডেমি, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার |
শওকত ওসমান (বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত লেখক ও কথাসাহিত্যিক। জন্মসূত্রে তাঁর নাম শেখ আজিজুর রহমান।[১] শওকত ওসমান একাধারে নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, রাজনৈতিক লেখা ও শিশু-কিশোর সাহিত্য রচনা করেছেন। তিনি মুক্তচিন্তার বুদ্ধিজীবী হিসাবে সমধিক পরিচিত ছিলেন।[২]
২ জানুয়ারি ১৯১৭–মে ১৪, ১৯৯৮ ) বিংশ শতাব্দীর''ক্রীতদাসের হাসি'' তাঁর প্রসিদ্ধ উপন্যাস। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৬৬ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সরকারের প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৭), ১৯৮৩ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ইত্যাদি শীর্ষপর্যায়ী পুরস্কার ও পদকে ভূষিত হন।[১]
জন্ম ও কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের হুগলি জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ মোহাম্মদ এহিয়া, মাতা গুলজান বেগম। পড়াশোনা করেছেন মক্তব, মাদ্রাসা, কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও অর্থনীতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। কিন্তু একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।[৩] আইএ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন। এমএ পাস করার পর ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে প্রভাষক পদে নিযুক্ত হন।[৩] ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অব কমার্সে (বর্তমানে সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম) যোগ দেন এবং ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্বেচ্ছা অবসরে যান।[৩] চাকরি জীবনের প্রথমদিকে কিছুকাল তিনি ‘কৃষক’ পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেন। প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন 'অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ'। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভাগের পর তিনি চলে আসেন পূর্ববঙ্গে।[৪]
সাহিত্যকৃতি
[সম্পাদনা]গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ছোট গল্প, নাটক, কবিতা, আত্মজীবনী, স্মৃতিখণ্ড, শিশুতোষ ইত্যাদি বিষয়ে লিখেছেন অনেক। তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী ওসমানের কবিতা বুলবুল পত্রিকায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে তাঁকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে আসেন।[৫]
উপন্যাস
[সম্পাদনা]- জননী (১৯৫৮) (প্রথম উপন্যাস)
- ক্রীতদাসের হাসি (১৯৬২)
- সমাগম (১৯৬৭)
- চৌরসন্ধি (১৯৬৮)
- রাজা উপাখ্যান (১৯৭১)
- জাহান্নম হইতে বিদায় (১৯৭১)[মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক]
- দুই সৈনিক (১৯৭৩)[মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক]
- নেকড়ে অরণ্য (১৯৭৩)[মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক]
- পতঙ্গ পিঞ্জর (১৯৮৩)
- আর্তনাদ (১৯৮৫)
- রাজপ
গল্পগ্রন্থ
[সম্পাদনা]- জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প (১৯৫২)
- মনিব ও তাহার কুকুর (১৯৮৬)
- ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৯০)
- প্রস্তর ফলক
- সাবেক কাহিনী
- জন্ম যদি তব বঙ্গে[মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক]
- পুরাতন খঞ্জর
- বিগত কালের গল্প
- নেত্রপথ
- উভশৃঙ্গ
- পিজরাপোল
- উপলক্ষ
প্রবন্ধগ্রন্থ
[সম্পাদনা]- ভাব ভাষা ভাবনা (১৯৭৪)
- সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই (১৯৮৫)
- মুসলিম মানসের রূপান্তর (১৯৮8)
নাটক
[সম্পাদনা]- আমলার মামলা (১৯৪৯)
- পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা (১৯৯০)
- তস্কর ও লস্কর
- কাঁকর মনি
- বাগদাদের কবি (১৯৫৩)
শিশুতোষ গ্রন্থ
[সম্পাদনা]- ওটেন সাহেবের বাংলো (১৯৪৪)
- মস্কুইটো ফোন (১৯৫৭)
- ক্ষুদে সোশালিস্ট (১৯৭৩)
- পঞ্চসঙ্গী (১৯৮৭)
রম্যরচনা
[সম্পাদনা]- নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত (১৯৮২)
স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ
[সম্পাদনা]- স্বজন সংগ্রাম (১৯৮৬)
- কালরাত্রি খ-চিত্র (১৯৮৬)
- অনেক কথন (১৯৯১)
- গুড বাই জাস্টিস মাসুদ (১৯৯৩)
- মুজিবনগর (১৯৯৩)
- অস্তিত্বের সঙ্গে সংলাপ (১৯৯৪)
- সোদরের খোঁজে স্বদেশের সন্ধানে (১৯৯৫)
- মৌলবাদের আগুন নিয়ে খেলা (১৯৯৬)
- আর এক ধারাভাষ্য (১৯৯৬)
অনূদিত গ্রন্থ
[সম্পাদনা]- নিশো (১৯৪৮-৪৯)
- লুকনিতশি (১৯৪৮)
- বাগদাদের কবি (১৯৫৩) (নাটক)
- টাইম মেশিন (১৯৫৯)
- পাঁচটি কাহিনী (লিও টলস্টয়, ১৯৫৯)
- স্পেনের ছোটগল্প (১৯৬৫)
- পাঁচটি নাটক (মলিয়ার, ১৯৭২)
- ডাক্তার আবদুল্লাহর কারখানা (১৯৭৩)
- পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে মানুষ (১৯৮৫)
- সন্তানের স্বীকারোক্তি (১৯৮৫)
অন্যান্য গ্রন্থসমূহ
[সম্পাদনা]- মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসসমগ্র
- উপন্যাসসমগ্র ১
- উপন্যাসসমগ্র ২
- উপন্যাসসমগ্র ৩
- গল্পসমগ্র
- কিশোরসমগ্র ১
- কিশোরসমগ্র ২
পুরস্কার
[সম্পাদনা]- বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২)
- আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬)
- প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৭)
- একুশে পদক (১৯৮৩)
- মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১)
- স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৭)[৬]
- আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৭)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "ওসমান, শওকত - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৭।
- ↑ শওকত ওসমান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে|দৈনিক সমকাল|১৪ মে ২০১১
- ↑ ক খ গ দ্য ডেইলি স্টার, ৪ জানুয়ারি, ২০১২ইং, মুদ্রিত সংস্করণ, পৃষ্ঠা-৯
- ↑ শওকত ওসমান:সার্থক কথাশিল্পী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে দৈনিক কালের কন্ঠ, ১৪ মে ২০১১
- ↑ নেসার ওসমান, জাঁ। "'আমার কথাশিল্পী বাবা'"। Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-২৭।
- ↑ "শওকত হোসেনের জন্মদিন"। ১৭ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১১।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- বাংলাদেশী সাহিত্যিক
- ১৯১৭-এ জন্ম
- ১৯৯৮-এ মৃত্যু
- ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক বিজয়ী
- ছোটগল্পে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
- স্বাধীনতা পুরস্কার বিজয়ী
- আদমজী সাহিত্য পুরস্কার প্রাপক
- হুগলি জেলার ব্যক্তি
- আলাওল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
- বাংলাদেশী পুরুষ ঔপন্যাসিক
- বাঙালি লেখক
- ঢাকা কলেজের শিক্ষক
- মাদ্রাসা-ই আলিয়া, কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- একুশে পদক বিজয়ী
- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী
- বাঙালি ঔপন্যাসিক
- পশ্চিমবঙ্গের ঔপন্যাসিক
- পশ্চিমবঙ্গের লেখক
- সেন্ট জেভিয়ার'স কলেজ, কলকাতার প্রাক্তন শিক্ষার্থী