রাজেন্দ্র বিক্রম শাহ
এই নিবন্ধে তথ্যসূত্রের একটি তালিকা রয়েছে, কিন্তু উক্ত তালিকায় পর্যাপ্ত সংগতিপূর্ণ উদ্ধৃতির অভাব বিদ্যমান। (নভেম্বর ২০২০) |
রাজেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব | |
---|---|
নেপালের রাজা | |
রাজত্ব | ২০ নভেম্বর ১৮১৬ – ১২ মে ১৮৪৭ |
পূর্বসূরি | গার্বন যোদ্ধা বিক্রম শাহ |
উত্তরসূরি | সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ |
জন্ম | ৩ ডিসেম্বর ১৮১৩ বসন্তপুর, নেপাল |
মৃত্যু | ১০ জুলাই ১৮৮১ (বয়স ৬৭)[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ভক্তপুর, নেপাল |
দাম্পত্য সঙ্গী | সাম্রাজ্য লক্ষ্মী দেবী রাজ্য লক্ষ্মী দেবী |
বংশধর | সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ উপেন্দ্র বিক্রম শাহ রণেন্দ্র বিক্রম শাহ বীরেন্দ্র বিক্রম শাহ |
রাজবংশ | শাহ রাজবংশ |
পিতা | গার্বন যোদ্ধা বিক্রম শাহ |
মাতা | গোরাক্ষ রাজ্য লক্ষ্মী দেবী |
ধর্ম | হিন্দুধর্ম |
রাজেন্দ্র বিক্রম শাহ ( নেপালি: राजेन्द्र विक्रम शाह ) (১৮১৩–১৮৮১) ১৮১৬ থেকে ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত নেপালের রাজা ছিলেন । তাঁর রাজত্বকালে রানা বংশের উত্থান ঘটে। ১৮৪৬ সালে, জঙ্গবাহাদুর রানা ক্ষমতায় আসেন এবং পরের বছর, রাজেন্দ্র তাঁর পুত্র সুরেন্দ্রর পক্ষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]পিতা গার্বন যোদ্ধা বিক্রম শাহ দেবের মৃত্যুর পর তিনি তিন বছর বয়সে রাজা হন। তাঁর পিতার মত, রাজেন্দ্রর শাসনের অধিকাংশই ছিল তাঁর সৎ দাদী রাণী ললিতা ত্রিপুরা সুন্দরী দেবী (মৃত্যু ১৮৩২) এবং প্রধানমন্ত্রী ভীমসেন থাপার অধীনে। রাজপ্রতিনিধি হিসেবে ভীমসেন থাপা, রাজাকে অন্তরীণ করে রেখেছিলেন—এমনকি অনুমতি ছাড়া প্রাসাদ থেকে বের হওয়ার স্বাধীনতাও তাঁর ছিল না।
রাজত্ব
[সম্পাদনা]রাজেন্দ্র ১৮৩২ সালে প্রাপ্তবয়স্ক হন, এবং ১৮৩৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ব্যতীত স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনার ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি ভীমসেন থাপা এবং থাপার ভাগ্নে মাথাবর সিংকে তাদের সামরিক কর্তৃত্ব থেকে সরিয়ে দেন। এর কিছুকাল পরেই রাজেন্দ্রর জ্যেষ্ঠা রাণীর কনিষ্ঠ পুত্র মারা যান, এবং রাজকুমারকে বিষ খাওয়ানোর বানোয়াট অভিযোগে দিয়ে ভীমসেন থাপাকে গ্রেফতার করা হয়। থাপাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ভীমসেন থাপা আট মাসের বিচারের পর বেকসুর খালাস পান, কিন্তু ততদিনে থাপারা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। রানা জং পান্ডে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভীমসেন থাপাকে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করেন, যিনি ১৮৩৯ সালে কারাগারে আত্মহত্যা করেন।
রাজা রাজেন্দ্রকে সাধারণত একজন দুর্বল, অক্ষম এবং দ্বিধান্বিত শাসক হিসাবে বর্ণনা করা হয়। তিনি সকল শাসন কার্যক্রম থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং ১৮৩৯ থেকে ১৮৪১ সাল পর্যন্ত কার্যত তার জ্যেষ্ঠা স্ত্রী রাণী সাম্রাজ্য, নেপালের শাসক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ১৮৪১ সালে জ্যেষ্ঠা রাণীর মৃত্যুর পর, কনিষ্ঠা রাণী, রাণী রাজ্য লক্ষ্মী, সে দায়িত্ব নেন।
১৮৪৩ সালের জানুয়ারীতে, রাজেন্দ্র ঘোষণা করেন যে তিনি শুধুমাত্র তার কনিষ্ঠা রাণী রাজ্যলক্ষ্মীর পরামর্শ এবং মতামত অনুযায়ী দেশ শাসন করবেন, এবং এমনকি তার নিজের ছেলে সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ এর উপর রাণীকে মেনে চলতে তাঁর প্রজাদেরকে আদেশ দেন। দেশের অভিজাত দলগুলোর মধ্যে অব্যাহত সংঘর্ষ অবশেষে ১৮৪৬ সালে কোট গণহত্যা সংঘটিত করে।
রানা বংশের উত্থান
[সম্পাদনা]জঙ্গবাহাদুর কুনওয়ার (নেপালি: जंग बहादुर कुँवर), রানা রাজবংশের সূচনা করেন। তিনি ১৮৪৬ সালের কোট গণহত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন (নেপালি: कोत पर्व) যাতে প্রধানমন্ত্রী এবং রাজার এক আত্মীয় চৌতারিয়া ফতে জঙ্গ শাহ সহ প্রাসাদ বিচারালয়ের ৩৬ জন সদস্য নিহত হন।
এসময় রাজা রাজেন্দ্রকে অপমান করা হয় এবং তাঁর বিশ্বস্ত দেহরক্ষীর শিরশ্ছেদ করা হয়। তাঁর কনিষ্ঠা স্ত্রী রাণী রাজ্যলক্ষ্মী ভেবেছিলেন যে জঙ্গবাহাদুর রানা তাঁর পুত্র রাজকুমার রণেন্দ্রকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হতে সাহায্য করবে কিন্তু জঙ্গবাহাদুর তার নিজের উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই রাণীকে এমন কথা বলেছিলেন। রানী রাজ্যলক্ষ্মী এতে ক্ষুব্ধ হন এবং জঙ্গবাহাদুরকে হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু করেন কিন্তু তা উন্মোচিত হয়ে যায়। রাণী রাজ্যলক্ষ্মী ও তাঁর দুই পুত্র নির্বাসিত হন, এবং বারাণসী তীর্থযাত্রার জন্য রাজা রাজেন্দ্র তাদের সঙ্গ দেন। রাজার অনুপস্থিতিতে, যুবরাজ সুরেন্দ্রকে শাসক বানানো হয়। নির্বাসনে থেকে, রাজেন্দ্র একটি সৈন্য বাহিনী গঠন করে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু জঙ্গবাহাদুর রাজেন্দ্রর পরিকল্পনা জানতে পারেন এবং আলাউতে তার শিবির আক্রমণ করেন। পলায়নরত অবস্থায় তাঁকে আটক করা হয় এবং তাঁকে তাঁর ছেলে সুরেন্দ্রের হাতে সিংহাসন ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।[১]
পরবর্তী জীবন
[সম্পাদনা]জঙ্গবাহাদুরের বাহিনী ১৮৪৭ সালে রাজেন্দ্রকে আটক করে ভক্তপুরে নিয়ে আসে এবং পরে তাকে হনুমান ধোকা প্রাসাদে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়।
জঙ্গবাহাদুর রানা এমন ব্যবস্থা করেন যাতে তার অনুমতি ছাড়া কেউ প্রাক্তন রাজা রাজেন্দ্রর সাথে দেখা করতে না পারে। তিনি নিশ্চিত করেন যে রাজেন্দ্রর দ্বিতীয় পুত্র রাজকুমার উপেন্দ্র, মন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া রাজেন্দ্রর কাছে যেতে পারবেন না। রাজা সুরেন্দ্রকে প্রতি মাসে একবার তাঁর বাবার সাথে দেখা করতে হতো। যাইহোক, জঙ্গবাহাদুর নিশ্চিত করেন যে প্রাক্তন রাজা রাজেন্দ্রের সাথে কোন বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যেন পরামর্শ করা না হয় এবং তিনি যেন রাজার সম্মতি ছাড়া দরবার ত্যাগ করতেও না পারেন। বাকি জীবন, রাজেন্দ্র গৃহবন্দী হিসেবে কাটান।
১৮৮১ সালের ১০ জুলাই তাঁর প্রপৌত্রের রাজত্বকালে ৬৭ বছর বয়সে ভক্তপুর দরবারে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- নেপালের রাজকীয় আদালত -- আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে
- রাজেন্দ্র বিক্রম শাহ জীবনী - নেপাল হোম পেজ
- লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস কান্ট্রি স্টাডিজ: নেপাল
রাজেন্দ্র বিক্রম শাহ জন্ম: ৩ ডিসেম্বর ১৮১৩ মৃত্যু: ১০ জুলাই ১৮৮১
| ||
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী গার্বন যোদ্ধা বিক্রম শাহ |
নেপালের রাজা ১৮১৬–১৮৪৭ |
উত্তরসূরী সুরেন্দ্র বিক্রম শাহ |