প্রাগৈতিহাসিক মিশর বলতে মিশরে প্রথম মানববসতি স্থাপন থেকে শুরু করে খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ অব্দ নাগাদ আদি রাজবংশীয় যুগের সূত্রপাতের মধ্যবর্তী সময়ের মিশরকে বোঝায়। এই প্রাক্-রাজবংশীয় যুগ প্রথাগতভাবে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ অব্দে শুরু হওয়া এবং আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে নাকাদা ৩ পর্যায়ে সমাপ্ত হওয়া শেষ নব্যপ্রস্তরযুগের সমতুল্য।
প্রাক-রাজবংশীয় যুগের সময়কাল প্রথম সংজ্ঞায়িত হয়েছিল মিশরে ব্যাপক হারে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য শুরু হওয়ার আগেই। সাম্প্রতিক আবিষ্কারগুলি অত্যন্ত ক্রমিক প্রাক্-রাজবংশীয় অবস্থান্তর ইঙ্গিত করে, যা থেকে এই যুগের সমাপ্তির কাল নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। এই জন্য কোনও কোনও মিশরতত্ত্ববিদ প্রাক্-রাজবংশীয় বোঝাতে আবার অন্যেরা আদি-রাজবংশীয় বোঝাতে এই যুগের অংশবিশেষের নাম হিসেবে "প্রত্ন-রাজবংশীয় যুগ", "শূন্য রাজবংশ" বা "রাজবংশ ০"-এর মতো শব্দগুচ্ছ ব্যবহৃত হত।[১]
প্রাক্-রাজবংশীয় যুগটি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পর্যায়ে বিভক্ত। প্রত্যেকটি পর্যায়ের নামকরণ করা হয়েছে সেই সব স্থানের নামানুসারে যেখানে মিশরীয় জনবসতির কোনও না কোনও ধরন প্রথম আবিষ্কৃত হয়। যদিও প্রত্ন-রাজবংশীয় যুগের বৈশিষ্ট্যসূচক একই ক্রমিক অবস্থান্তর সমগ্র প্রাক-রাজবংশীয় যুগ ধরেই অব্যাহত ছিল। স্বতন্ত্র "সংস্কৃতি"গুলিকে পৃথক পৃথক সত্ত্বা হিসেবে ব্যাখ্যা করা না গেলেও সমগ্র যুগটিকে বোঝার সুবিধার জন্য বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক উপবিভাগে ভাগ করা হয়।
প্রাক্-রাজবংশীয় প্রত্নসামগ্রীগুলির বৃহত্তর অংশ পাওয়া গিয়েছে উচ্চ মিশরে। কারণ, নীল নদের পলিমাটি বদ্বীপ অঞ্চলে অধিকতর মাত্রায় সঞ্চিত হয় সমগ্র বদ্বীপটিকে আধুনিক যুগের পূর্বাবধি নিমজ্জিত অবস্থায় রেখেছিল।[২]