দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্র
একটি দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্র বলতে এমন একটি রাষ্ট্রকে বোঝায় যেটি এক বা একের অধিক দ্বীপপুঞ্জের সমবায়ে গঠিত এবং এটিতে দ্বীপপুঞ্জ বহির্ভূত অন্যান্য দ্বীপও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। যখন একাধিক দ্বীপের একটি দল, দ্বীপগুলিকে সংযোগকারী জলরাশি ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি একত্রে একটি সুসংহত ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সত্তা গঠন করে, তখন সেটিকে দ্বীপপুঞ্জ বলে।[১]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিভিন্ন মহাসাগরের অভ্যন্তরে অবস্থিত দ্বীপদেশগুলি স্বাধীনতা অর্জন করলে দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্র ধারণাটির সূত্রপাত ঘটে। ১৯৮২ সালে সমুদ্র আইন বিষয়ে জাতিসংঘ সমঝোতাতে এই পরিভাষাটির আইনি সংজ্ঞা প্রদান করা হয়। ১৯৮২ সালে ১০ই ডিসেম্বর তারিখা বাহামা, ফিজি, ইন্দোনেশিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি ও ফিলিপাইন প্রথম পাঁচটি দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্র হিসেবে ঐ সমঝোতাতে স্বীকৃতি পায়। এদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্র। দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্রের দ্বীপগুলির মধ্যবর্তী জলরাশিও ঐ রাষ্ট্রের সার্বভৌম কর্তৃত্বের অধীনে থাকে, এগুলিকে দ্বীপপুঞ্জীয় জলরাশি বলে। এছাড়া দ্বীপপুঞ্জের বহিঃস্থ দ্বীপগুলির চারপাশে অঙ্কিত ভূমিরেখা দ্বারা আবদ্ধ জলরাশিগুলিও ঐ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ জলরাশি হিসেবে গণ্য হয়।
২০১৫ সালের ২০ই জুন পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী মোট ২২টি সার্বভৌম রাষ্ট্র দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্রের মর্যাদা দাবি করেছে। এগুলি হল অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, বাহামা, কাবু ভের্দি, কোমোরোস, গ্রেনাডা, দোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, জামাইকা, ফিজি, কিরিবাস, মালদ্বীপ, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, পাপুয়া নিউ গিনি, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন, সাঁউ তুমি ও প্রিঁসিপি, সেশেলস, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, মরিশাস, ত্রিনিদাদ ও তোবাগো, তুভালু ও ভানুয়াতু। কিছু কিছু দেশ ভৌগোলিকভাবে দ্বীপপুঞ্জ হলেও দ্বীপপুঞ্জীয় রাষ্ট্রের মর্যাদা দাবি করে না। এগুলির মধ্যে জাপান, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, কিউবা ও আইসল্যান্ড উল্লেখ্য।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Archipelagic States"। International Law Studies। Stockton Center for International Law। ২০২১।