জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাক্তন নাম | জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় |
---|---|
ধরন | গবেষণাধর্মী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ২০ আগস্ট ১৯৭০ |
অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
বাজেট | ৳ ২৭৯.১২ কোটি (২০২৪-২৫)[১] |
ইআইআইএন | ১৩৬৫৮৯ |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
উপাচার্য | মোহাম্মদ কামরুল আহসান |
প্রাধ্যক্ষ | ১৬ |
ডিন | ৬ |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৭৫৫ (২০১৪) |
শিক্ষার্থী | ১৬,৭৮১ (২০১৪)[২] |
স্নাতক | ১০,৯৮৩ (২০১৪) |
স্নাতকোত্তর | ৩,৫০১ (২০১৪) |
২,২৭৪ (২০১৪) | |
ঠিকানা | , ২৩°৫২′৫৭″ উত্তর ৯০°১৬′০২″ পূর্ব / ২৩.৮৮২৪° উত্তর ৯০.২৬৭১° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | ৬৯৭.৫৬ একর |
সংক্ষিপ্ত নাম | জাবি |
ওয়েবসাইট | www |
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষিপ্ত: জাবি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভার উপজেলায় অবস্থিত একটি স্বায়ত্তশাসিত গবেষণাধর্মী সরকারি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭০ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।[৩][৪][৫]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি নতুন বিশ্বুবিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা শুরু হয়। ১৯৬৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ঢাকার ৩২ কিলোমিটার উত্তরে সরকারী ডেইরি ফার্মের ৭৫০ একর স্থান বরাদ্দ করা হয়। ১৯৬৮ সালের এপ্রিলে 'জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প' শিরোনামে নির্মাণকার্য শুরু হয়।[৬] প্রকল্পপ্রধান ছিলেন ড. সুরত আলী খান। ১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট পূর্ব পাকিস্তান সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ‘জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়’ নামকরণ করে। মূলত ঢাকা শহরের পূর্বনাম জাহাঙ্গীরনগর এর সাথে মিল রেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখা হয়। ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম উপাচার্য হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন অধ্যাপক ড. মফিজউদ্দিন আহমদ। নভেম্বর মাসে ছাত্রভর্তি শুরু হয়।[৭] বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের প্রথম ও একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[৮][৩] প্রথম শিক্ষাবর্ষে পাঁচটি অনুষদ চালুর পরিকল্পনা ছিল।[৬] ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম আহসান আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন। তার আগের সপ্তাহে ৪ জানুয়ারি থেকে ১৫০ ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগের ক্লাস শুরু হয়।[৯][১০]
১৯৭৩ সালের ৮ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এক্ট' আইন করা হয়।[৬] এক্টের বাইলজ অনুযায়ী নাম সংক্ষিপ্ত করে 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়' নামকরণ করা হয়।[১১][১২]
বিভিন্ন সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রখ্যাত কবি সৈয়দ আলী আহসান, লোকসাহিত্যবিদ মজহারুল ইসলাম, লেখক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, আ ফ ম কামালউদ্দিন, আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ আব্দুল বায়েস, আলাউদ্দিন আহমেদ, খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান প্রমুখ। অধ্যাপক সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায়, লেখক হায়াত্ মামুদ, লেখক হুমায়ুন আজাদ, নাট্যকার সেলিম আল দীন, কবি মোহাম্মদ রফিক, অধ্যাপক মুস্তাফা নূরুল ইসলাম, আবু রুশদ মতিনউদ্দিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, ইতিহাসবিদ বজলুর রহমান খান, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আনু মুহাম্মদ প্রমুখ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে পুরোদমে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ক্রমে বিভাগের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বাংলাদেশের একমাত্র প্রত্নতত্ত্ব বিভাগও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুরুতে দুইটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা করলেও পরের বছর কলা ও মানবিকী অনুষদ খোলা হয়। আইন অনুষদের অধীন আইন ও বিচার বিভাগ ২০১১ সালে পদচারনা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যক্রম শুরু করে।[১৩]
বাংলাদেশের স্বায়ত্বশাসিত প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ছাত্রসংখ্যায় এটি ক্ষুদ্রতম। কিন্তু বিভিন্ন জাতীয় ও অভ্যন্তরীণ আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এরশাদ সরকারের আমলে শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনে ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে।
বিদ্যায়তনিক পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্য। মৌলিক বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এছাড়া উয়ারী ও বটেশ্বরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খননকার্য, দেশীয় নাট্যচর্চায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অবদান, বিদ্যায়তনিক নৃবিজ্ঞান চর্চায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের পথপ্রদর্শন সুবিদিত।
অবস্থান ও ক্যাম্পাস
[সম্পাদনা]জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানী থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে ঢাকা–আরিচা মহাসড়কের পশ্চিমে অবস্থিত। এটি ৬৯৭.৫৬ একর (২.৮ বর্গকিলোমিটার) জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটির উত্তরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, উত্তর-পূর্বে সাভার সেনানিবাস, দক্ষিণে বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং পূর্বে একটি বৃহৎ দুগ্ধ উৎপাদন খামার (ডেইরি ফার্ম) দ্বারা পরিবেষ্টিত। বিশ্ববিদ্যালয়টির শ্যামল পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য জলাশয় একে পরিযায়ী পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে যার ফলে এটি পাখি পর্যবেক্ষকদের এক পছন্দের জায়গা। এটিই বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সার্বজনীন স্বীকৃত।
অনুষদ এবং ইনস্টিটিউট সমূহ
[সম্পাদনা]-
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
-
রসায়ন বিভাগ
অনুষদসমূহ
[সম্পাদনা]বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগ রয়েছে।[১৪]
এগুলো হলো:
সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
[সম্পাদনা]- অর্থনীতি বিভাগ
- ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ
- সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
- নৃবিজ্ঞান বিভাগ
- নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ
- লোকপ্রশাসন বিভাগ
গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদ
[সম্পাদনা]- গণিত বিভাগ
- পরিসংখ্যান বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
- ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ
- কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
- পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ
কলা ও মানবিকী অনুষদ
[সম্পাদনা]- বাংলা বিভাগ
- ইংরেজি বিভাগ
- ইতিহাস বিভাগ
- দর্শন বিভাগ
- নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ
- প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ
- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
- জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ
- চারুকলা বিভাগ
জীববিজ্ঞান অনুষদ
[সম্পাদনা]- উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
- প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
- ফার্মেসী বিভাগ
- প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ
- মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ
- বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ
- পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ
[সম্পাদনা]- ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগ
- একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগ
- মার্কেটিং বিভাগ
- ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ
আইন অনুষদ
[সম্পাদনা]- আইন ও বিচার বিভাগ
ইনস্টিটিউটসমূহ
[সম্পাদনা]- ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ-জেইউ)[১৫]
- ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আই আই টি)
- ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং এন্ড জিআইএস
- বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট
অন্যান্য
[সম্পাদনা]- ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র
- ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র
- ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র
- সেন্টার অব এক্সিলেনস ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ
[সম্পাদনা]শহীদ মিনার
[সম্পাদনা]স্থপতি রবিউল হুসাইনের তত্বাবধানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সম্মুখে ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনের ও ১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক হিসাবে ৫২ ফুট ব্যাস ও ৭১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু শহিদ মিনারটি অবস্থিত। ৮টি সিঁড়ি ও ৩টি স্তম্ভ বিশিষ্ট; দৃঢ়তার প্রতীক ত্রিভুজ আকৃতির ঋজু কাঠামোটিতে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের জন্য শহিদ-গণের আত্মত্যাগের মহিমা বিধৃত হয়েছে। ৮টি সিঁড়ি বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ৮টি তাৎপর্যপূর্ণ বছর ( ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭০ ও ১৯৭১) এবং তিনটি স্তম্ভের একটি বাংলাভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অপর দুইটি মাটি ও মানুষ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে।
ভাস্কর্য
[সম্পাদনা]বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য সংশপ্তক। এই ভাস্কর্যে এক পা ও এক হাত হারিয়েও এক সংশপ্তক মুক্তিযোদ্ধা বিজয়ের হাতিয়ার উর্ধ্বে তুলে ধরেছেন। এর স্থপতি হামিদুজ্জামান খান।
অমর একুশ
[সম্পাদনা]সমাজবিজ্ঞান ভবনের সামনে এবং ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সাথেই রয়েছে ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ভাস্কর্য। মা-বাবা তার গুলিবিদ্ধ সন্তানকে ধরে রেখেছে অমর একুশে। এর স্থপতি শিল্পী জাহানারা পারভীন।
সরণিসমূহ
[সম্পাদনা]- কবির সরণি
সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদল নেতা হাবিবুর রহমান কবিরের স্মরণে কবির সরণির নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক থেকে আ.ফ.ম কামালউদ্দিন হল পর্যন্ত এ সরণি বিস্তৃত।
- মুন্নী সরণি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মুন্নীর স্মরণে আল বেরুনী হলের সামনে রয়েছে মুন্নী সরণি।
- জুবায়ের সরণি
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অসন্তোষ-কে কেন্দ্র করে ২০১২ সালে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল পর্যন্ত এ সরণি বিস্তৃত।
- স্বপ্না সরণি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নার স্মরণে মিহির চত্ত্বর থেকে নওয়াব ফয়েজুন্নেসা হল পর্যন্ত বিস্তৃত এ সরণি।
আবাসিক হলসমূহ
[সম্পাদনা]এই অনুচ্ছেদটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট হল সংখ্যা ২১টি, এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য ১১টি এবং ছাত্রীদের জন্য ১০টি হল রয়েছে।
আল বেরুনী হল
[সম্পাদনা]১৯৭০ সালে স্থাপিত এ হলের আসন সংখ্যা ৬০০ এর বেশি। ১ঌ৬৮-৬ঌ সালে ১২৮ কক্ষ বিশিষ্ট ৪ তলার এই ছাত্রাবাসটি নির্মিত হয়৷ ১ঌ৭ঌ সালে খ্যাতনামা জ্ঞানসাধক 'আল-বেরুনী'র নামানুসারে এই হলের নামকরণ করা হয়৷ এই হল এ একটি মূল ভবনের পাশাপাশি একটি সম্প্রসারিত ভবন ও রয়েছে। বর্তমানে এর সম্প্রসারিত ভবনটি ছাত্রাবাসের পরিবর্তে চারুকলা বিভাগের সম্প্রসারিত ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে মহিলাদের জন্য আলাদা কোন হল না থাকায় আল বেরুনী হলের সাথে সংযুক্ত করে ১ঌ৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষে মোট (তেইশ) জন ছাত্রীর নামে হলে সিট বরাদ্দ করা হয়; ১ঌ৭৮ সনে ছাত্রীদের জন্য ১টি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হল (নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল) নির্মিত হলে আল বেরুনী হলের ছাত্রী ভর্তি বন্ধ করা হয়৷
মীর মশাররফ হোসেন হল
[সম্পাদনা]১৯৭৩ সালে "মীর মশাররফ হোসেন হল" ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে নির্মিত হয়েছে। ১ঌ৭৮ সালের ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বিশিষ্ট কথাশিল্পী মীর মশাররফ হোসেনের নামানুসারে ১৯৭৮ সালে এই প্রজাপতি হলের নাম নির্ধারণ করা হয় 'মীর মশাররফ হোসেন হল'৷ হলটির ছাত্র ধারণ ক্ষমতা ৯০০+
আয়তন ও ধারণক্ষমতায় এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় হল। প্রজাপতির প্রতিকৃতিতে নকশাকৃত এই হলটির স্থপতি ছিলেন, মাজহারুল ইসলাম।[১৬][১৭]
শহীদ সালাম-বরকত হল
[সম্পাদনা]১৯৮৭ সালে স্থাপিত এ হলের আসন ৫০০। ১ঌ৮৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বৃহত্তম এই হলের যাত্রা শুরু হয় ও ১ঌ৮৫ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ১০৬তম সভায় নাম রাখা হয় শহীদ সালাম-বরকত হল৷
আ. ফ. ম. কামালউদ্দিন হল
[সম্পাদনা]১৯৮৬ সালে স্থাপিত এ হলের আসন ৫০০। ১ঌ৮৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি এ হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম কামালউদ্দিন; এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১ঌ৮ঌ সালের ৩১ ডিসেম্বর, কিন্তু হলের নির্মাণ কাজ শেষ হবার আগেই কর্মরত অবস্থায় উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম কামালউদ্দিন মৃতু্বরণ করেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচিত উপাচার্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১ঌ৮৮ সালের ১০ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় তার নামে এই হলের নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়৷
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল
[সম্পাদনা]১৯ আগস্ট ২০১৭ সাল হতে হলটি ছাত্রদের বসবাসের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। বর্তমানে প্রায় ৭০০ ছাত্র হলটিতে বসবাস করতে পারে। হলটির বর্তমান প্রাধ্যক্ষ হচ্ছেন অধ্যাপক নাজমুল হোসেন তালুকদার। হলের পাশে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ছায়াময় শান্তিনিকেতন। অপরুপ সৌন্দর্যময় ও দৃষ্টিনন্দন জায়গাটি হলের পাশে অবস্থিত।
মওলানা ভাসানী হল
[সম্পাদনা]মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে ১৯৯২ সালে নির্মিত হয় ছেলেদের পঞ্চম হল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিখ্যাত বটতলার পশ্চিমেই এই হলের অবস্থান। হলের সামনেই রয়েছে একটি পুকুর। পুকুরঘাট, হলের আকৃতি ও অবস্থানের কারণে হলটিকে "রাজবাড়ি" ও বলা হয়। হলের বর্তমান আসন সংখ্যা ৭৬৮টি ও হলের বর্তমান প্রাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এইচ.এম.সায়েম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল
[সম্পাদনা]২০০১ সালে স্থাপিত এ হলের আসন ৭৮৪। কম্পিউটার বিজ্ঞান ভবনের পাশেই হলটির অবস্থান। হলের দক্ষিণ পাশে খেলার মাঠ রয়েছে যা সিডনি ফিল্ড হিসেবে পরিচিত।
শহীদ রফিক-জব্বার হল
[সম্পাদনা]৭০০+ আসন বিশিষ্ট হলটি ভাষা শহীদ রফিক ও জব্বারের নামে নামকরণ করা হয়। এটি স্থাপিত হয় ২০১০ সালে।
২০২২ সালে রফিক-জব্বার হলের পাশে নবনির্মিত শেখ রাসেল হল চালু হলে, নিজেদের অস্তিত্ব সংকটে ও পরবর্তীতে দুই হলের মধ্যকার ঝামেলা এড়ানোর জন্য রাস্তায় দেয়াল তৈরী করে দিয়ে পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার কারণে শেখ রাসেল হলের ১০০০ শিক্ষার্থীর বটতলা ও একাডেমিক এরিয়ার সাথে যোগাযোগ বাধাপ্রাপ্ত হয় ও বিকল্প পথ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়।
শেখ রাসেল হল
[সম্পাদনা]শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠতম সন্তান শেখ রাসেলের নামে হলটির নামকরণ করা হয়েছে। লিফটসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পূর্ণ ১০ তলা বিশিষ্ট হলটিতে শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা ১০০০+
তাজউদ্দিন আহমেদ হল
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ এর নামে এ হলের নামকরণ করা হয়। লিফটসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পূর্ণ ১০ তলা (মাটির নিচে তলাসহ ১১ তলা) বিশিষ্ট হলটির আসন সংখ্যা ১০০০+
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল
[সম্পাদনা]জাতীয় কবির নামে এ হলের নামকরন করা হয়। ১০ তালাবিশিষ্ট হলটির আসন সংখ্যা ১০০০+, এটি ২০২৫ সালে চালু হতে পারে।
ফজিলতুন্নেসা হল
[সম্পাদনা]১ঌ৮৬ সালের অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটি মহিলা হল নং-২ রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ও ১ঌ৮৭ সালের জানুয়ারিতে প্রথম এই হলে ছাত্রীদের সিট বরাদ্দ করা হয়৷ ১ঌঌ০ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪৫ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফজিলতুন্নেসা হল নামে নামকরণ করা হয়৷
২০২২ সালে চালু করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮নং হল। এবং ফজিলতুন্নেসা হলের সকল শিক্ষার্থীকে ১৮নং হলে স্থানান্তরিত করে ফজিলতুন্নেসা হল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফজিলতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীদের দাবীতে পরবর্তীতে সিন্ডিকেট সভায় ১৮নং হলের নামকরণ করা হয় "ফজিলতুন্নেসা হল"।
নওয়াব ফয়জুননেসা হল
[সম্পাদনা]আসন ৪০০+, স্থাপিত ১৯৭৮। ১ঌ৭৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে এটি স্বতন্ত্র হল ও ১৪ এপিল সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে এই ছাত্রী হলটির নামকরণ করা হয় নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল৷ হলটি এক নম্বর হল বলেও পরিচিত।
প্রীতিলতা হল
[সম্পাদনা]আসন ৮০০+, স্থাপিত ১৯৯৪। স্থাপতি ফয়সাল মাহবুব এর নকশাকার। ১ঌঌ৭ সালের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বিশেষ সভার এটি “প্রীতিলতা হল” নামে নামকরণ করা হয়৷ দুদিকে লেক বেষ্টিত এ হলে ৫০৪ জন ছাত্রীর আসন রয়েছে৷
জাহানারা ইমাম হল
[সম্পাদনা]আসন ৭০০+, ১ঌঌ৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করা হয়৷
বেগম খালেদা জিয়া হল
[সম্পাদনা]বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামানুসারে এই হলের নামকরণ করা হয়। আসন ৬০০+, স্থাপিত ২০০৫ প্রভোস্টঃ অধ্যাপক তাহমিনা আক্তার।[১৮]
প্রভোস্টঃ জনস্বাস্থ্যবিদ এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ।
শেখ হাসিনা হল
[সম্পাদনা]বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ৬ষ্ঠ হল হিসেবে শেখ হাসিনা হল ২০১৪ সালের ১২ জুন থেকে যাত্রা শুরু করে।
প্রভোস্টঃ অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ
বেগম সুফিয়া কামাল হল
[সম্পাদনা]বাংলা সাহিত্যে কবি বেগম সুফিয়া কামালের অবদানকে স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ৭ম হল হিসেবে ২০১৫ বেগম সুফিয়া কামাল হল যাত্রা শুরু করে। আসন সংখ্যা ৭৭০।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা হল
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব -এর নামে মেয়েদের ৮ম হল হিসেবে ২০১৭ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা হল যাত্রা শুরু করে।আসন সংখ্যা ৮৫০।
রোকেয়া হল
[সম্পাদনা]বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেনের নামে ২০২৪ সালে চালু করা হয় রোকেয়া হল। শুরুতে হলের নাম "বেগম রোকেয়া হল" নির্বাচিত হলেও পরবর্তীতে 'বেগম' বাদ দিয়ে শুধু "রোকেয়া হল" রাখা হয়। এর আসন সংখ্যা ১০০০.
তারামন বিবি হল
[সম্পাদনা]১০০০ আসন সংখ্যা বিশিষ্ট এই হলটি এখনো চালু হয়নি। ২০২৫ এর শুরুতে চালু হবার কথা রয়েছে।
সংগঠন
[সম্পাদনা]বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠন রয়েছে:
- রাজনৈতিক
বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলো হলো: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
- সাংস্কৃতিক
উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে: জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ধ্বনি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জলসিঁড়ি, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, আনন্দন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জাহাঙ্গীরনগর ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ক্যারিয়ার ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি কুইজ সোসাইটি, উত্থানপাঠ, প্রপদ, জাহাঙ্গীরনগর স্টুডেন্টস ফিল্ম সোসাইটি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, কহনকথা, অস্তিত্ব প্রভৃতি।
- জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মীদের সমন্বিত সামাজিক-রাজনৈতিক জোট বা সংগঠন। জোট ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু সাংস্কৃতিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে। পরে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় আন্দোলনে সংগঠনগুলো একইভাবে অংশগ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে এক ছাত্রসভায় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোট ছাত্র-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে। এই সকল আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় একটি স্থায়ী কাঠামোর প্রয়োজন অনুভূত হয়। এভাবেই আটানব্বই সালে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের ময়দানে যাত্রা করে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট। বর্তমানে এই জোটে ১৩টি সংগঠন রয়েছে: জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ধ্বনি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জলসিঁড়ি, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন, আনন্দন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি।
- বিজ্ঞান/প্রযুক্তি বিষয়ক সংঘ
- বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
- বাংলাদেশও ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান ক্লাব
- ই-বাণিজ্য ও উদ্যোক্তা সংগঠন
- বিবিধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সেবামূলক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন জেলার ছাত্র কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়াও সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীদের সমন্বিত উদ্যোগে রয়েছে সিলেট বিভাগীয় ছাত্র কল্যাণ সংস্থা। রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কেটিং ক্লাব, ফিজিক্যালি-চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ) জাবি, জাহাঙ্গীরনগর হায়ার স্টাডি ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, পাবলিক হেলথ ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর এডভেঞ্চার ক্লাব, লিও ক্লাব অব লিবার্টি, রোট্যারাক্ট ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগর, বাঁধন, গৌরব ৭১, জাহাঙ্গীরনগর প্রোগ্রামারস ক্লাব, এক্সপ্লোরার্স, লিও ক্লাব, পিডিএফ, কাশফুল, বন্ধুসভা, স্বজন সমাবেশ, যাযাদি ফ্রেন্ডস ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বি.এন.সি.সি. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কন্টিনজেন্ট, ইয়্যুথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশ, লিও ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল সমিতি।[২১]
উৎসব
[সম্পাদনা]- হিম উৎসব
২০১৫ সাল থেকে শীতকালে হিম উৎসব পালন করা হয়। হারিয়ে যেতে বসা ঐহিত্যবাহী লোকজ সংস্কৃতিগুলোতে তুলে আনা হয় এই উৎসবে। সাপ খেলা, লাঠি খেলা, গাজীর গান, পটের গান, পালাগানের আসর, গম্ভীরা, ঘাটুগান, পুতুলনাচ, আদিবাসী নাচ, মনিপুরী নৃত্য, সঙ, বাউল সন্ধ্যা, কাওয়ালী গান, কবিতা পাঠ, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর, কনসার্ট, আর্ট ক্যাম্প, পেইন্টিং ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা প্রকার আয়োজন থাকে হিম উৎসবে।[২২][২৩]
সমাবর্তন
[সম্পাদনা]জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৭ সালে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০১ সালে দ্বিতীয়, ২০০৬ সালে তৃতীয়, ২০১০ সালে চতুর্থ এবং ২০১৫ সালে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৬ষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, যেখানে অংশ নেন ১৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। সর্বশেষ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ নুরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। এছাড়াও সমাবর্তনে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।[২৪]
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
[সম্পাদনা]- হুমায়ূন ফরীদি - বাংলাদেশি অভিনেতা।
- আব্দুল্লাহ আল মামুন - পদার্থ বিজ্ঞানী।
- শহীদুজ্জামান সেলিম - অভিনেতা ও পরিচালক।
- মাশরাফি বিন মর্তুজা - ক্রিকেটার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। (জাবি'তে ভর্তি হলেও ড্রপ-আউট হয়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান)
- মুশফিকুর রহিম - ক্রিকেটার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।
- আনু মুহাম্মদ - বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী এবং অর্থনীতিবিদ।
- খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম - শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় উপাচার্য।
- সৌমিত্র শেখর - শিক্ষাবিদ ও উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমান)।
- আব্দুল হান্নান চৌধুরী - শিক্ষাবিদ, পরিসংখ্যানবিদ ও অর্থনীতিবিদ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য এবং গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
- শরিফ এনামুল কবির - শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
- আনন জামান - নাট্যকার ও গবেষক।
- সুমাইয়া শিমু - মডেল ও অভিনেত্রী।
- জাকিয়া বারী মম - মডেল ও অভিনেত্রী।
- মিম মানতাসা - মডেল ও অভিনেত্রী।
- আফসানা আরা বিন্দু - মডেল ও অভিনেত্রী।
- সজল নূর - মডেল ও অভিনেতা।
- ফারুক আহমেদ - খ্যাতিমান নাট্যকার ও অভিনেতা।
- মোবারক আহমদ খান - স্বাধীনতা পদক জয়ী বিজ্ঞানী।
- মোস্তাফিজুর নূর ইমরান - অভিনেতা।
- এ কে এম এনামুল হক শামীম - সংসদ সদস্য ও সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী।
- সাদাত হোসাইন - বাংলাদেশী কবি ও ঔপন্যাসিক।
- দীপংকর দীপন - চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "৫৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কে কত বাজেট পাচ্ছে"। thedailycampus.com। ২০২৪-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৪।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ "'জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়' অধ্যাদেশ - ১৯৭০"। ১২ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "Jahangirnagar University"। juniv.edu। ২০২৪-০৬-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-১৪।
- ↑ https://juniv.edu/center/7593/file/11650। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-২৭।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য) - ↑ ক খ গ "Country's first full-fledged residential public univ -"। দ্য ডেইলি অবজার্ভার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১২।
- ↑ মাহমুদ, আকতার (২০২৪-০৬-১১)। "জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারপ্ল্যান কেন জরুরি"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৫।
- ↑ "৪০ বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়"। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-০৬।
- ↑ সুমন, আহমেদ (২০১৮-০১-১২)। "অনন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২০।
- ↑ "সৃষ্টি সুখের উল্লাসে"। ১৭ জুলাই ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৫।
- ↑ "৪০ বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়"। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৭-০৬।
- ↑ "জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস"। ২২ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৫।
- ↑ Independent, The। "Jahangirnagar University to launch new institute"। Jahangirnagar University to launch new institute | theindependentbd.com। ২০১৮-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৫।
- ↑ "Faculties" (ইংরেজি ভাষায়)। Jahangirnagar University। ১০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "About IBA-JU"। Institute of Business Administration, Jahangirnagar University (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৬।
- ↑ Sangbad, Protidiner। "সৌন্দর্যমন্ডিত প্রজাপতি হল"। Protidiner Sangbad। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৫।
- ↑ "স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নিদর্শন জাবির মীর মশাররফ হোসেন হল"। বাংলাদেশ কন্ঠ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১০-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-২৫।
- ↑ "Jahangirnagar University"। juniv.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০১।
- ↑ "Student's Accommodation - Jahangirnagar University" (ইংরেজি ভাষায়)।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ প্রভোস্টঃ অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "জাবিতে হিম উৎসব শুরু ১৭ জানুয়ারি"। banglatribune.com। বাংলা ট্রিবিউন। ১৫ জানুয়ারি ২০১৯। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "জাবিতে ব্যতিক্রমী 'হিম উৎসব' শুরু বৃহস্পতিবার"। jugantor.com। দৈনিক যুগান্তর। ১৭ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "জাবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২৫ ফেব্রুয়ারি"। The Daily Ittefaq। ২০২৪-০৩-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২২।