বিষয়বস্তুতে চলুন

লঙ্কা, আসাম

স্থানাঙ্ক: ২৫°৫৫′ উত্তর ৯২°৫৭′ পূর্ব / ২৫.৯১৭° উত্তর ৯২.৯৫০° পূর্ব / 25.917; 92.950
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লঙ্কা
লংকা
শহর
লঙ্কা আসাম-এ অবস্থিত
লঙ্কা
লঙ্কা
ভারতবর্ষের আসামে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৫°৫৫′ উত্তর ৯২°৫৭′ পূর্ব / ২৫.৯১৭° উত্তর ৯২.৯৫০° পূর্ব / 25.917; 92.950
দেশ ভারত
রাজ্যআসাম
জেলাহোজাই
সরকার
 • শাসকলঙ্কা পৌরসভা
জনসংখ্যা (২০০১)
 • মোট৩৪,৪২৩
ভাষা
 • দাপ্তরিকঅসমীয়া
সময় অঞ্চলভাপ্রস (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন৭৮২৪৪৬
এসটিডি কোড০৩৬৭৪

লঙ্কা ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলার একটি শহর ও শহরাঞ্চল সমিতি।

ভৌগোলিক অবস্থান

[সম্পাদনা]

আসামের হোজাই জেলার লঙ্কা শহরটি জেলা সদর হোজাই থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

জনপরিসংখ্যান

[সম্পাদনা]

২০০১ সনের ভারতীয় আদম শুমারি অনুসারে[] লঙ্কা শহরটি ১১ টি ওয়ার্ডের একটি পৌরসভা পর্ষদ  এবং ইহার মোট জনসংখ্যা ৩৪,৪২৩।[] এর মধ্যে পুরুষদের জনসংখ্যা ৫২% এবং মহিলাদের জনসংখ্যা ৪৮%।লঙ্কার সাক্ষরতার হার ৭৩% যা জাতীয় গড় আয় ৫৯.৫% এর চেয়ে বেশি: পুরুষদের সাক্ষরতার হার ৭৮%,এবং মহিলাদের মধ্যে এই হার ৬৮%। লঙ্কার জনসংখ্যার ১৩% হার ৬ বছর বয়সের কম।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

লঙ্কা শহর পূর্বকালীন জাতীয় মহাসড়ক ৫৪ দিয়ে  নিকটবর্তী দবকা শহরকে(২৫ কি.মি.) শিলচর শহরের (৩০৫ কি.মি.) সঙ্গে সংযুক্ত রছে। এই মহাসড়ক এখন এন.এইচ. -২৭ নামে গণিত পূর্ব- পশ্চিম করিডোর হয়ে আসামের শিলচর পর্যন্ত গুজরাত-এ পোর্বান্দার-কে সংযোগ করেছে। মহাসড়কটি ভারতবর্ষের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চার-গলির মহাসড়ক হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। লঙ্কার একটি রেললাইন পরিবেশিত হয় যা গুয়াহাটি - লামডিং ব্রডগেজ লাইন দিয়ে আসামের সর্বপ্রান্তকে ছাড়াও দিল্লি, হাওড়া প্রভৃতিকে সংযোগ করেছে। শহরটি গুয়াহাটি মহানগর থেকে রেলপথে প্রায় ১৫০ কি.মি.  এবং ১৮৫ কি.মি. সড়কপথে দূরত্বে অবস্থিত। 

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ভৌম পাল বরাহি বংশের একজন রাজার রাজত্বকালে লঙ্কা দবক রাজ্যের রাজধানী ছিল। ইতিহাসবিদ রাজমোহন নাথের মতে, 'দবক' শব্দটি সংস্কৃত শব্দ ' দেবর্ক' থেকে ব্যুৎপন্ন হয়েছে। একদা অঞ্চলটিতে জলাভাব ছিল, এবং স্থানীয় ভাষায়  "জলাভাব  অঞ্চল" - কে " ল্যাঙ খাঁ "  বলে, সেই থেকে এই অঞ্চলটির নাম লঙ্কা হয়।

সেই সময় অঞ্চলটি একটি অনুর্বর ভূমি ছিল। ব্রিটিশ আক্রমণকালে ওয়াগনে করে অঞ্চলটিতে জল আনা হয়েছিল, এবং এছাড়াও  ব্রিটিশরা ব্রিটিশদের বেস ক্যাম্প তৈরি করেছিল। ১৯৫০ সনের ভূমিকম্পের পর অঞ্চলটির জল স্তর পুনরুত্থিত হয়। রঙমহল,লঙ্কার উপকণ্ঠে একটি স্থান যা রাজার বিনোদনমূলক প্রাসাদ ছিল। পরিত্যক্ত লঙ্কার শাসকদের পর, খাসিয়া-জৈন্তিয়া শাসন করতে শুরু করেছিল। দবকের শাসক রাজা বিশ্বসুন্দরের শাসনকালে লঙ্কা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল। দবকের কাছাকাছি তেরো শতকের লঙ্কা সম্পর্কে নিম্নলিখিত পঙক্তির একটি শিলালিপি আবিষ্কৃত হয় :

"কাছাড় রাজ্যত জয়ন্তয় লঙ্কান্ত রাজ্য়বন্ত যাজ্ঞমেনং দাবেকা মণ্ডলী মথাস্থ কার্যমাসা"। এই স্থানটির ঐতিহাসিক তাৎ্পর্যতা হচ্ছে লঙ্কেশ্বরী মন্দির যা লঙ্কার সংস্কৃতি ও চিত্তের একটি যোগসূত্র।

যথাযথ ১৫০৫ সনে শিখদের প্রথম ধর্মপ্রবক্তা, গুরু নানক দেব আসামের কামরূপ পরিদর্শন করেন। এই বিষয়টি গুরু নানকের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক ভ্রমণকালের বিষয়ে নথিতে লিপিবদ্ধ করা আছে। কথিত আছে যে, তিনি শ্রীমন্ত শঙ্করদেব, মহাপুরুষ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ধর্মগুরু হিসেবে ঢাকা থেকে আসাম ভ্রমণ করেন।

প্রথম গুরুর পর, নবম গুরু বা শিখ ধর্মপ্রবক্তা গুরু তেগ বাহাদুর ও ১৬৬৮ সনে আসাম পরিদর্শন করেন। এই সময় যখন আওরঙ্গজেবের সেনাদলরা ব্রহ্মপুত্র নদী অতিক্রম করে আসামে প্রবেশ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল। তারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অাহোম সেনাপতি লাচিত বরফুকন কর্তৃক পরাজিত হয়েছিল। গুরু তেগ বাহাদুর ধুবড়ি নামে স্থানটিও পরিদর্শন করেন। বিখ্যাত শিখ গুরুদ্বার ওনার ভ্রমণের স্মৃতিরক্ষাত্রে নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রতি বছর শিখ সম্প্রদায়ের লোকেরা সারা ভারতবর্ষ এবং বিদেশী থেকে এই পবিত্র স্থানে পরিদর্শন করতে আসেন। বাধিত অহোম রাজা গুরুজীকে ভূষিত করতে কামাখ্যা মন্দিরে আমন্ত্রণ জানান। কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেন এবং কিছু পাঞ্জাব ফিরে যান, কয়েকজন আসামে বসতি স্থাপণ করেন এবং তাদের পরিবের গড়ে তোলেন। তাদের বংশধরেরা আজ - বেশিরভাগ নগাঁও জেলার কেন্দ্রীভূত হয় - সব ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে অসমীয়া ভাষা ব্যবহার করে এবং অনেকে পাঞ্জাবি কথা বলতে পারে না। কিন্তু তারা অবিরত তাদের শিখ পরিচয় বজায় রাখার চেষ্টা করে এবং মতবাদ এবং ধর্মের ঐতিহ্য পালন করে থাকে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "ভারত ২০০১ সনের আদমশুমারি: ২০০১ আদমশুমারির তথ্য, শহর ও গ্রাম সহ (গণনা)"। Census Commission of India। ২০০৪-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০১ 
  2. "শহর ও জনসংখ্যার বর্ণানুক্রমিক তালিকা" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ 

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • An essay on Lankeswari Than by Pramod Bora, Pushpanjali, `লঙ্কা সেপ্টেম্বর ২০১১
  • "WSN-Punjab News-Assamese Sikhs trace their Punjabi roots". Worldsikhnews.com. 18 March 2009. ১৮ জুলাই ২০১০ তারিখে সংগৃহীত।
  • Puneet Singh Lamba (25 August 2003). "News and Analysis – The Sikhs of Assam". The Sikh Times. ১৮ জুলাই ২০১০ তারিখে সংগৃহীত।