শিরডি সাই বাবা
শিরডি সাই বাবা | |
---|---|
জন্ম | ২৮ সেপ্টেম্বর ১৮৩৮[১] ফালোদি জাগির, যোধপুর রাজ্য, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে ফলোদি জেলা, রাজস্থান, ভারত) [২] বাপাথরি, আওরঙ্গাবাদ জেলা, হায়দ্রাবাদ রাজ্য, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পারভানি জেলা, মহারাষ্ট্র, ভারত)[৩] |
মৃত্যু | ১৫ অক্টোবর, ১৯১৮ (বয়স ৮৩) |
যুগ | বিংশ শতাব্দী |
অঞ্চল | ভারত |
ধারা | হিন্দুধর্ম (অদ্বৈত বেদান্ত) ও ইসলাম (সুফিবাদ) |
শিরডি সাঁই বাবা (১৮৩৫ - ১৫ অক্টোবর, ১৯১৮) (মারাঠি: शिरडीचे श्री साईं बाबा শিরডীচে শ্রী সাইঁ বাবা,উর্দু: شردی سائیں بابا) ছিলেন একজন ভারতীয় ধর্মগুরু, যোগী ও ফকির। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ভক্তরাই তাকে সন্ত আখ্যা দিয়েছিলেন।
হিন্দু ভক্তেরা তাকে দত্তাত্রেয়ের অবতার মনে করতেন। অনেক ভক্তের মতে, তিনি ছিলেন সদ্গুরু, সুফি পির বা কুতুব। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়লেও, ভারতেই তিনি সর্বাধিক শ্রদ্ধা অর্জন করেছিলেন।
সাই বাবার প্রকৃত নাম জানা যায় না শিরডিতে আগমনের পর তাকে "সাই" নাম দেওয়া হয়। তার জন্ম বা জন্মস্থান সংক্রান্ত কোনো তথ্যও জানা যায় না। সাই বাবা তার পূর্বাশ্রমের কথা জানিয়ে যাননি। সাই শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে উৎসারিত। এই শব্দের অর্থ "সাক্ষাৎ ঈশ্বর" বা "দিব্য"। ভারতীয় ভাষাগুলিতে সাম্মানিক "বাবা" কথাটির অর্থ "পিতা", "পিতামহ", "বৃদ্ধ ব্যক্তি" বা "মহাশয়"। অর্থাৎ, সাই বাবা নামের অর্থ "দিব্য পিতা" বা "পিতৃরূপী সন্ত"।[৪]
তার পিতামাতা, জন্মের বৃত্তান্ত এবং ষোলো বছর বয়সের পূর্বের কথা জানা যায় না। তাই তার পূর্বাশ্রম সম্পর্কে নানা জল্পনা-কল্পনা করা হয়ে থাকে।
সাই বাবা পার্থিব বস্তুর প্রতি আগ্রহী ছিলেন না। তার একমাত্র চিন্তা ছিল আত্ম-উপলব্ধি। তিনি সন্ত হিসেবে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। বিশ্বের নানা অংশের মানুষ তার পূজা করেন। তিনি ভালবাসা, ক্ষমা, পরস্পরকে সহায়তা, দান, সন্তুষ্টি, আন্তরিক শান্তি ও ঈশ্বর ও গুরুর প্রতি ভক্তির শিক্ষা দিতেন। সাই বাবার শিক্ষার উপাদান সংগৃহীত হয়েছিল হিন্দু ও ইসলাম উভয় ধর্ম থেকেই। যে মসজিদে তিনি বাস করতেন, তার একটি হিন্দু নামও দিয়েছিলেন। এই নামটি হল "দ্বারকাময়ী"।[৫] তিনি হিন্দু ও মুসলিম উভয় ধর্মেরই অনুষ্ঠানাদি পালন করতেন। উভয় সম্প্রদায়ের ভাষা ও ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ দিয়ে উপদেশ দান করতেন। শিরডির একটি হিন্দু মন্দিরে তাকে সমাহিত করা হয়। তার বিখ্যাত উক্তি "সবকা মালিক এক" ("একই ঈশ্বর সকলকে শাসন করেন")। কথাটি ইসলাম ও সুফিবাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তিনি সর্বদা "আল্লাহ্ মালিক" ("ঈশ্বরই রাজা") কথাটি উচ্চারণ করতেন।
শিষ্য
[সম্পাদনা]বহু হিন্দু ও সুফি ধর্মনেতা সাই বাবাকে শ্রদ্ধা করতেন। তার কয়েকজন শিষ্য বিশিষ্ট ধর্মগুরুও হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপাসনি মহারাজ, সন্ত বিদকর মহারাজ, সন্ত গঙ্গাগির, সন্ত জানকিদাস মহারাজ ও সতী গোদাবরী মাতাজি।[৬][৭]
রামকৃষ্ণ যোগ
[সম্পাদনা]তারা ছিলেন সমসাময়িক, কিন্তু দেশের দুই রাজ্যে। একজন বাংলায়, অন্য জন সুদূর মহারাষ্ট্রে। বাংলার রামকৃষ্ণ পরমহংস জন্মেছিলেন ১৮৩৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। অন্য দিকে, সাঁই বাবার জন্মতারিখ নিয়ে দোলাচল থাকলেও, অনেকের মতে তিনি জন্মেছিলেন ১৮৩৫ সালের সেপ্টেম্বরে। ঠাকুর রামকৃষ্ণ নিজে কালী ভক্ত হলেও, তার কাছে সব ধর্মই ছিল সমান। একই ভাবে, সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়েছিলেন সাঁই বাবাও। তাদের দর্শনেই যে শুধু মিল ছিল, তা নয়। অবাক হতে হয় এক তথ্য জানলে যে, ঠাকুর ও সাঁই বাবার মৃত্যুতেও ছিল এক অদ্ভুত যোগসূত্র। কোথাও লিপিবদ্ধ না থাকলেও, কথিত যে, ১৮৮৬ সালের অগস্ট মাস নাগাদ সাঁই বাবা সমাধিস্থ হন তিন দিনের জন্য। জানা যায়, ওই একই সময়ে, বাংলায় তখন মৃত্যুশয্যায় ছিলেন ঠাকুর। এবং তিন দিন পরে সাঁই বাবা নিজের দেহে ফিরে এলে, ঠাকুর চলে যান নশ্বর দেহ ছেড়ে। কথিত, সাঁই বাবা ফিরে এসে বলেন যে, তিনি তো চিরদিনের জন্যই ‘আল্লা’র কাছে চলে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সেখানে গিয়ে জানতে পারেন যে, তার বন্ধু শ্রীরামকৃষ্ণও যেতে চান ভগবানের কাছে। তাই তিনি ফিরে আসেন ধরাধামে। প্রসঙ্গত, এমনও শোনা যায় যে, ঠাকুর রামকৃষ্ণ নাকি সাঁই বাবা সম্পর্কে বলতেন যে, এমনই এক ফকির এসেছেন পৃথিবীতে, যাঁকে হিন্দুরা পুজো করে ঈশ্বর হিসেবে আর মুসলমানরা করে পীর হিসেবে।[৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ thequint.com/lifestyle/shirdi-sai-baba-birth-anniversary-wishes-quotes-and-images-messages-day "শিরডি সাই বাবার জন্মবার্ষিকী: শুভেচ্ছা, উক্তি এবং ছবি"
|url=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ was-puskaran-brahmin-of-falodi-claiming-thanvi-family-amid-going-dispute-over-borthplace-126595074.html "शिर्डी में जन्मस्थली कोना का बीच थानवी परिवार दावा- फलोदी के पुष्करण ब्राह्मण थे साईंबाबा"
|url=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ quotes-and-images-messages-day "শিরডি সাই বাবার জন্মবার্ষিকী: শুভেচ্ছা, উক্তি এবং ছবি"
|url=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ Rigopoulos, Antonio (১৯৯৩)। The Life and Teachings of Sai Baba of Shirdi। SUNY। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 0791412687।
- ↑ Hoiberg, Dale (২০০০)। Students' Britannica India। Popular Prakashan। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০১। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - ↑ Ruhela, S. P. (ed), Truth in Controversies about Sri Shirdi Sai Baba, Faridabad, Indian Publishers Distributors, 2000. আইএসবিএন ৮১-৭৩৪১-১২১-২
- ↑ Dabholkar, Govind Raghunath, Shri Sai Satcharita: the life and teachings of Shirdi Sai Baba (1999)
- ↑ "রামকৃষ্ণ"।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Arulneyam, Durai, The Gospel of Shri Shirdi Sai Baba. A Holy Spiritual Path, New Delhi, Sterling, 2008. আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-২০৭-৩৯৯৭-০
- Bharadwaja, Acharya, Sai Baba the Master, Andhra Pradesh, Sree Guru Paduka Publications, 1996 available online
- Dabholkar, Govindrao Raghunath (alias Hemadpant), Shri Sai Satcharita Shri Sai Baba Sansthan Shirdi, (translated from Marathi into English by Nagesh V. Gunaji in 1944) available online or downloadable
- Dabholkar, Govind Raghunath, Shri Sai satcharita : the life and teachings of Shirdi Sai Baba (1999)
- Hoiberg, D. & Ramchandani, I., 'Sai Baba of Shirdi', in Students' Britannica India. Page available online
- Kamath, M. V. & Kher, V. B., Sai Baba of Shirdi: A Unique Saint, India: Jaico Publishing House (1997). আইএসবিএন ৮১-৭২২৪-০৩০-৯
- Osborne, Arthur, The Incredible Sai Baba. The Life and Miracles of a Modern-day Saint, Hyderabad, Orient Longman, 1957. আইএসবিএন ৮১-২৫০-০০৮৪-৪
- Panday, Balkrishna, Sai Baba’s 261 Leelas. A Treasure House of Miracles, New Delhi, Sterling, 2004. আইএসবিএন ৮১-২০৭-২৭২৭-৪
- Parthasarathy, Rangaswami, God Who Walked on Earth. The Life and Times of Shirdi Sai Baba, New Delhi, Sterling, 1996. আইএসবিএন ৮১-২০৭-১৮০৯-৭.
- Rao, Sham P. P., Five Contemporary Gurus in the Shirdi (Sai Baba) Tradition, Bangalore: Christian Institute for the Study of Religion and Society, 1972. LC Control No.: 75905429.
- Rigopoulos, Antonio, The Life and Teachings of Sai Baba of Shirdi State University of New York press, Albany, (1993) আইএসবিএন ০-৭৯১৪-১২৬৮-৭.
- Ruhela, S. P. (ed), What Researchers Say about Sri Shirdi Sai Baba, Faridabad, Sai Age Publications, 1994. আইএসবিএন ৮১-৮৫৮৮০-৮৫-৯
- Ruhela, S. P. (ed), Sri Shirdi Sai Baba – The Universal Master, Sterling Publishers Pvt. Ltd, New Delhi, 1994. আইএসবিএন ৮১-২৮৮-১৫১৭-২
- Ruhela, S. P. (ed), Truth in Controversies about Sri Shirdi Sai Baba, Faridabad, Indian Publishers Distributors, 2000. আইএসবিএন ৮১-৭৩৪১-১২১-২
- Shepherd, Kevin R. D., Gurus Rediscovered: Biographies of Sai Baba of Shirdi and Upasni Maharaj of Sakori, Cambridge: Anthropographia Publications, 1985. আইএসবিএন ০-৯৫০৮৬৮০-২-৭
- Shepherd, Kevin R. D., Investigating the Sai Baba Movement: A Clarification of Misrepresented Saints and Opportunism, Dorchester: Citizen Initiative, 2005. আইএসবিএন ০-৯৫২৫০৮৯-৩-১
- Venkataraman, Krishnaswamy, Shirdi Stories, Srishti Publishers, New Delhi, 2002. আইএসবিএন ৮১-৮৭০৭৫-৮৪-৮
- Warren, Marianne, Unraveling the Enigma. Shirdi Sai Baba in the Light of Sufism, Revised edition, New Delhi, Sterling Publishing, 2004. আইএসবিএন ৮১-২০৭-২১৪৭-০
- White, Charles S. J., The Sai Baba Movement: Approaches to the Study of India Saints in Journal of Asian Studies, Vol. 31, No. 4 (Aug., 1972), pp. 863–878
- White Charles S. J., The Sai Baba Movement: Study of a Unique Contemporary Moral and Spiritual Movement, New Delhi, Arnold-Heinemann, 1985.
- Williams, Alison, Experiencing Sai Baba’s Shirdi. A Guide, revised edition, Shirdi, Saipatham Publications. 2004 আইএসবিএন ৮১-৮৮৫৬০-০০-৬
- Walshe-Ryan, Lorraine, I am always with you, Reprint 2008, New Delhi, Sterling Publishing, 2006. আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-২০৭-৩১৯২-৯.