চাক ফ্লিটউড-স্মিথ
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | লেসলি ও’ব্রায়ান ফ্লিটউড-স্মিথ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | স্টওয়েল, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ৩০ মার্চ ১৯০৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৬ মার্চ ১৯৭১ ফিটজরয়, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৬২)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | চাক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি (১.৯৬ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি লেগ স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলিংয়ে অভিজ্ঞ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৫৩) | ১৪ ডিসেম্বর ১৯৩৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২০ আগস্ট ১৯৩৮ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৩১–১৯৪০ | ভিক্টোরিয়ান বুশরেঞ্জার্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ ডিসেম্বর ২০১৭ |
লেসলি ও’ব্রায়ান চাক ফ্লিটউড-স্মিথ (ইংরেজি: Chuck Fleetwood-Smith; জন্ম: ৩০ মার্চ, ১৯০৮ - মৃত্যু: ১৬ মার্চ, ১৯৭১) ভিক্টোরিয়ার স্টওয়েলে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন চাক ফ্লিটউড-স্মিথ।
তরুণ অবস্থায় উভয় হাতেই বোলিং করতে পারতেন। খেলোয়াড়ী জীবন শেষে নেশাসক্ত হয়ে পড়েন। অনেকগুলো বছর গৃহহীন অবস্থায় মেলবোর্নের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন। কখনোবা মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের কাছাকাছি কয়েকশো মিটার দূরবর্তী খোলা জায়গায় ঘুমিয়ে পড়তেন যেখানে তিনি তার সেরা খেলাগুলোয় অংশ নিতেন। ১৯৬৯ সালে তাকে গ্রেফতার করা হলে সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ তার মুক্তির দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
খেলোয়াড়ী জীবন
[সম্পাদনা]১৯৩০-এর দশকে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট অঙ্গনে অসাধারণ প্রতিভারূপে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ধীরগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে তিনি অনুপযোগী বলকে স্পিন করাতে সমসাময়িক বোলারদের তুলনায় অধিকতর দক্ষতা প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। দূর্লভ প্রতিভাবান ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিতি পেলেও অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা তার ব্যক্তিগত জীবনেও বহমান ছিল।[১] অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে উদ্বোধনী সদস্যরূপে যুক্ত হওয়া বিল ও’রিলি এবং ক্ল্যারি গ্রিমেট - এ দুই স্পিনারের মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ ছিল তার খেলোয়াড়ী জীবন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি মাত্র দশ টেস্ট খেলার সুযোগ পান। তবে স্বতন্ত্র একটি ডেলিভারির কারণে স্মরণীয় হয়ে আছেন। ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে চতুর্থ টেস্টে ওয়ালি হ্যামন্ডকে আউট করার ধরনটি শেন ওয়ার্নের শতাব্দীর সেরা বলের সাথে তুলনীয়। টেস্ট খেলার এক ইনিংসে সর্বাধিকসংখ্যক রান প্রদানের ন্যায় অগৌরবজনক অধ্যায়ের সাথেও নিজ নামকে চিত্রিত করে রেখেছেন তিনি।
এ খেলার অন্যান্য বিভাগ যেমন ব্যাটিং ও ফিল্ডিংয়ে খুব কমই দক্ষতা প্রদর্শন করলেও স্বতন্ত্রধর্মী বামহাতি রিস্ট স্পিনের জন্য সবিশেষ পরিচিতি পেয়েছেন। নিশ্চিতরূপে তিনি প্রথম চায়নাম্যান বোলাররূপে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে প্রভাববিস্তার করতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন।[২]
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৫ তারিখে ফ্লিটউড-স্মিথ পূর্ব সেন্ট কিল্ডা এলাকার সেন্ট মেরিজ ক্যাথলিক চার্চে মেরি মলি এলিয়ট নাম্নী এক রমণীর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। বিবাহ অনুষ্ঠানটি সংবাদপত্রে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। মলির পরিবার মেলবোর্নের সুপরিচিত কোমলপানীয় ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। তার বাবা নগরকর্তা ছিলেন। তিনি এলিয়টের ব্যবসায় বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন। এরফলে মদের ব্যবসায় দৈনিক সম্পর্ক থাকায় তার মাদকাসক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে।
বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ
[সম্পাদনা]দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছড়িয়ে যাবার পর ফ্লিটউড-স্মিথ দ্বিতীয় অস্ট্রেলীয় ইম্পেরিয়াল ফোর্সে তালিকাভুক্ত হন। ফ্রাঙ্কস্টনের আর্মিজ ফিজিক্যাল এন্ড রিক্রিয়েশনাল ট্রেনিং স্কুলে নিয়োগ পান। ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে তিনি ডন ব্র্যাডম্যানের সাথে কাজ করেন। ধারকৃত সেনা পরিবহন চালনাকালে নৈশ মালবাহী পরিবহনের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। ব্যক্তিগত জরিমানা প্রদানের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটির নিষ্পত্তি ঘটে।[৩] চাকরি করার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ফেব্রুয়ারি, ১৯৪১ সালে তাকে শারীরিক অক্ষমতাজনিত কারণে অব্যাহতি দান করা হয়।
যুদ্ধের পর ১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে প্রথমবারের মতো মেলবোর্ন ক্লাবের পক্ষে খেলেন ফ্লিটউড-স্মিথ। চারটি প্রিমিয়ারশীপ দলের পক্ষে খেলে ৭৪টি জেলা পর্যায়ের খেলায় অংশ নেন। ১৭.৫২ গড়ে ২৫২ উইকেট নিয়ে ক্রিকেট জগৎকে বিদায় জানান।
এসময়ে তার বৈবাহিক জীবন ভেঙ্গে পড়ে। জুন, ১৯৪৬ সালে বিবাহ-বিচ্ছেদের জন্য তার স্ত্রী আবেদন করেন যা পরের বছর থেকে কার্যকরী হয়। এরফলে স্টওয়েলে বসবাসরত পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তাস্বত্ত্বেও প্রাক্তন স্ত্রী ফ্লিটউড-স্মিথের সাথে অবস্থান করতে থাকেন। যুদ্ধকালীন এলিয়টস কোম্পানি থেকে ছাঁটাই হন।[৪] এরপর ৯ জুলাই, ১৯৪৮ তারিখে মেলবোর্নের এক দলীয় সঙ্গীর বোন বিট্রিক্স কলিন্সের সাথে নিবন্ধন কার্যালয়ে বৈবাহিক কার্যাদি সম্পন্ন করেন। তিনি নিচু পর্যায়ের কার্যাদিতে যুক্ত থাকেন ও মদ্যপানের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। দ্বিতীয় বিয়েও ক্ষণস্থায়ী হয় তার।
দেহাবসান
[সম্পাদনা]মার্চ, ১৯৬৯ সালে ভবঘুরে ও চুরি করার অভিযোগে গ্রেফতার হন যা গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। তার এ ঘটনায় ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত বন্ধুমহল হতভম্ব হয়ে পড়ে। তন্মধ্যে সাবেক অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী স্যার রবার্ট মেনেজিস আইনগত সহায়তার মাধ্যমে তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। শুনানি কার্যক্রম স্থগিত করা হয় ও স্ত্রী সহযোগে ফিরে যান। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তারা একত্রে বসবাস করেন। তবে, গৃহহীন অবস্থায় থাকার ফলে স্বাস্থ্যহানি ঘটে। নিজ ৬৩তম জন্মদিনের এক পক্ষকাল পূর্বে ফিটজরয়ের সেন্ট ভিনসেন্টস হাসপাতালে ক্যান্সারজনিত কারণে চাক ফ্লিটউড-স্মিথের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Cashman et al. (1996), p 197.
- ↑ Rediff.com: Long march for the Chinamen. Retrieved 18 November 2007.
- ↑ Growden (1991), pp 163–165.
- ↑ Growden (1991), p 165.
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে চাক ফ্লিটউড-স্মিথ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে চাক ফ্লিটউড-স্মিথ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- Bradman, Don (১৯৫০)। Farewell to Cricket। Pavilion Library 1988 reprint। আইএসবিএন 1-85145-225-7।
- Cashman, Richard et al. — editors (1996): The Oxford Companion to Australian Cricket, OUP. আইএসবিএন ০-১৯-৫৫৩৫৭৫-৮.
- Coleman, Robert (1993): Seasons in the Sun — the Story of the Victorian Cricket Association, Hargreen Publishing. আইএসবিএন ০-৯৪৯৯০৫-৫৯-৩.
- Growden, Greg (1991): The Fleetwood-Smith Story — A Wayward Genius, ABC Books. আইএসবিএন ০-৭৩৩৩-০১৪২-৮.
- Haigh, Gideon; Frith, David (২০০৭)। Inside story:unlocking Australian cricket's archives। Southbank, Yarra: News Custom Publishing। আইএসবিএন 1-921116-00-5।
- Pollard, Jack (১৯৮২)। Australian Cricket — the Game and the Players। Hodder & Stoughton। আইএসবিএন 0-340-28796-9।
- Williams, Ken (2000): For Club and Country, MCC Library. আইএসবিএন ০-৯৫৭৮০৭৪-০-৬.
- Wisden Cricketers' Almanack (various editions).