লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
তথ্য | |
ধরন | সরকারি |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৮৭ সালে |
প্রধান শিক্ষক | জনাব উত্তম কুমার সাহা |
শ্রেণি | মাধ্যমিক |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | প্রায় ১২০০ জন |
শিক্ষায়তন | ১০ একর। |
লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় লক্ষ্মীপুর জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। উক্ত বিদ্যালয়টি লক্ষ্মীপুর জেলার জেলা স্কুল হিসাবেও খ্যাত। এখন যে নামে এর পরিচয় প্রতিষ্ঠালগ্নে এ নাম ছিল না। “লক্ষ্মীপুর মডেল হাই স্কুল” ও “লক্ষ্মীপুর এইচ. এ. সামাদ একাডেমি” দুটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মাননীয় মহাপরিচালক ড. হাফিজ আহমদ মহোদয়ের মধ্যস্থতায় একত্রীকরণ করা হয় এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জাতীয়করণকৃত লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নামে আত্মপ্রকাশ করে।
এই বিদ্যালয়ে কেবলমাত্র ছাত্ররা পড়তে পারে। স্কুলটি প্রতি বছর সুনামের সাথে ভাল ফলাফল করে আসছে। বিদ্যালয়টি প্রাতঃ শাখা (সকাল ৮.৩০ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত) এবং দিবা শাখা (সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪.৪০ পর্যন্ত) এই দুই ভাগে বিভক্ত। লক্ষ্মীপুর জেলার অনেক কৃতি সন্তান এই বিদ্যালয় থেকে অধ্যয়ন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বনামধন্য সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে কর্মরত রয়েছেন।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]লক্ষ্মীপুর মডেল হাই স্কুলঃ
সমাজ ও সভ্যতার এক মাত্র বাহন শিক্ষা। শিক্ষা ব্যতীত মানুষের সুপ্ত প্রতিভার উন্মেষ সাধন অসম্ভব। এ তাগিদে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও আইনজীবীদের উদ্যোগে ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান লক্ষ্মীপুর কালী বাড়িতে লক্ষ্মীপুর মডেল হাই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। পৌর দীঘির চার পাশের ভূমি তখন স্কুলের মালিকানাধীন সম্পত্তি ছিল। ১৮৯০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এটিকে উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় হিসেবে স্থায়ী অনুমোদন দান করে। ২৫ জন গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক ঐ সময় কর্মরত ছিলেন। সমাজ বিবর্তনে সময়ের চাহিদা পূরণে ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে স্কুল কমিটির উদ্যোগে বঙ্গীয় শিক্ষা দফতরের সেক্রেটারি মিস্টার জন. এফ. ফার এর অনুমোদনক্রমে বর্তমান এলাকায় স্থানান্তর করার মানসে স্থানীয় জনসাধারণ হতে ৭.৯৬ একর ভূমি সরকার কর্তৃক হুকুম দখল করা হয় এবং বর্তমানে ৯.০০ একরে উন্নীত হয়। ১৯১২ খ্রি. হতে ১৯১৮ খ্রি. পর্যন্ত তৎকালীন লক্ষ্মীপুর আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে ও মুন্সেফ সাহেবের নেতৃত্বে বিরাট ইমারতটি গড়ে ওঠে এবং এর নামকরণ করা হয় ‘লক্ষ্মীপুর ইংলিশ স্কুল’। ইতিহাসের নীরব সাক্ষী উক্ত ভবনটি এখন বিলুপ্ত। ১৮৯৪ খ্রি. হতে ১৯২০ খ্রি. পর্যন্ত বাবু কৈলাশ চন্দ্র চক্রবর্তী, বাবু মনোরঞ্জন সেন গুপ্ত, বাবু হেম চন্দ্র গুহ, বাবু যোগেশ চন্দ্র সেন, বাবু বরদা কুমার চক্রবর্তী এবং বাবু পার্শ্বনাথ সেন পর্যায়ক্রমে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯২১ খ্রি. হতে ১৯৩১ খ্রি. পর্যন্ত বাবু যোগেশ চন্দ্র মুখার্জি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর আমলে প্রধান শিক্ষকের বাস বভনের সম্পত্তি খরিদ করা হয়। ১৯৩২ খ্রি. হতে ১৯৪৬ খ্রি. পর্যন্ত বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন বাবু চুনি লাল গাংগুলি। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জনাব আবদুল গণি বি.এ.বি.টি সাহেব প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও কর্মদক্ষতার ফলে বিদ্যালয়টি বিভিন্ন উন্নয়ন স্কীমে যথা- মডেল স্কীম, বাইলেটারেল স্কীম, মাল্টি লেটারেল স্কীমে অন্তর্ভূক্তি লাভ করে। ১৯৫০ সালে জমিদার পেয়ারী লাল রায় বাহাদুর এর ৫০,০০০ টাকা অনুদানে বিদ্যালয়ের হল রুম, দ্বিতল ভবনসহ এর সংস্কার করা হয়। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পর বিদ্যালয়ের হাল ধরেন জনাব মোহাম্মদ সোকান্দর। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁর অব্যাহতি লাভের পর স্বল্পকালীন সময়ের জন্য জনাব মোঃ রুহুল আমিন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। অবশেষে ১৯৭৪খ্রি. হতে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের শেষ লগ্ন অর্থাৎ জাতীয়করণের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত জনাব মোহাম্মদ মোফাচ্ছের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জন্মলগ্ন থেকে বিদ্যালয়টি অতীব গৌরবের সহিত এর সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি লাভ করে।
লক্ষ্মীপুর এইচ.এ.সামাদ একাডেমীঃ
লক্ষ্মীপুর এইচ.এ.সামাদ একাডেমির জন্ম ইতিহাস অতীব বিচিত্র। ইসলামী মূল্যবোধের লালন ও আধুনিক শিক্ষার প্রতি মুসলমানদের উদ্বুদ্ধ করার মানসে লক্ষ্মীপুর মুন্সেফ কোর্টের তৎকালীন সুযোগ্য মুন্সেফ জনাব ইব্রাহীম হোসেন এবং এলাকার বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে স্থানীয় তালুকদার মরহুম মোহাম্মদ ওরফে সোনা মিঞা, আহম্মদ আলী মিঞা ও ইব্রাহীম মিঞা স্টেটের এক্সিকিউটিব মরহুমা কুলসুমা বানুর দানকৃত সম্পত্তির উপর আজকের এ প্রতিষ্ঠানটি জুনিয়র মাদ্রাসা রূপে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জুনিয়র মাদ্রাসাটিকে হাই মাদ্রাসায় রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং মাত্র ১৮ বৎসরের জুনিয়র মাদ্রাসাটি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে হাই মাদ্রাসায় উন্নীত হয়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে জনাব আলহাজ্ব সিরাজুল হক এম.এ সুপারিনটেনডেন্ট পদে আসীন হন। তাঁর দক্ষ ও যোগ্য পরিচালনায় হাই মাদ্রাসাটি দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠে। সরকার কর্তৃক জুনিয়র/হাই মাদ্রাসা প্রথা বিলুপ্ত ঘোষণা করায় ১৯৫৮খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠানটিকে হাই মাদ্রাসা থেকে হাই স্কুলে রূপান্তরিত করা হয় এবং তিনিই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ খ্রিস্ট্রাব্দে টুমচর নিবাসী স্বনামধন্য দানবীর জনাব সামছুল করিম চৌধুরীর ১০ (দশ) একর জমি যা চর আলী আহসান ও চর রমনীমোহনে অবস্থিত ও নগদ ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকা দানে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুষ্ট হয়ে উঠে। ফলে তাঁর জান্নাতবাসী পিতা হাজী আবদুস সামাদ সাহেবের নামানুসারে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় হাজী আবদুস সামাদ একাডেমি; সংক্ষেপে এইচ.এ.সামাদ একাডেমি। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মরহুম মোহাম্মদ আবদুল জব্বার এম.এ. (প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্বর্ণপ্রদক প্রাপ্ত, ট্রিপল এম.এ) সাহেব এই প্রতিষ্ঠানে কিছুকাল প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানটির গৌরব বর্ধন করেছেন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে জনাব সামছুদ্দিন এম.এ.বি.টি সাহেব প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৬২ খ্রি. হতে ১৯৬৪ খ্রি. পর্যন্ত জনাব মোঃ সফিক উল্যাহ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন অত:পর ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস হতে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জনাব মুহাম্মদ শাহ আলম এম.এ.বি.টি সাহেব প্রধান শিক্ষক হিসেবে অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করেন। তাঁর সুযোগ্য পরিচালনায় ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি শিক্ষা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। ১৯৭০ সালে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী মাসুম মানবিক শাখা হতে সম্মিলিত মেধা তালিকায় কুমিল্লা বোর্ডে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ১৯৭৬ সালে ডি.এইচ আলমগীর বিজ্ঞান শাখা হতে সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। এছাড়া প্রতিবছরই ৬/৭ জন ছাত্র বোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান দখল করতো। শিক্ষা ক্ষেত্রে এ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সদাসয় বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে লক্ষ্মীপুর এইচ.এ. সামাদ একাডেমীকে পাইলট স্কীমে অন্তর্ভূক্ত করেন।
লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় রূপে নামকরণ ও জাতীয়করণ:
স্থানীয় জনসাধারণ ও উভয় বিদ্যালয়ের (মডেল ও সামাদ) পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায়, উভয় প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে এবং বিদ্যালয় দুটির পাশাপাশি অবস্থান বিবেচনায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এর তৎকালীন মাননীয় মহাপরিচালক ড. হাফিজ আহমদ মহোদয় এর উপস্থিতিতে উভয় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সম্মতি ও সিদ্ধান্তক্রমে বিদ্যালয় দু'টিকে একত্রীভূত করা হয়। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি হতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বিদ্যালয়টিকে ‘লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে জাতীয়করণ করেন। পরবর্তীতে সদাশয় বাংলাদেশ সরকার ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন হতে এই বিদ্যালয়ে দুইটি শিফট চালু করেন।
অবস্থান
[সম্পাদনা]লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে দেশের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়’। বিদ্যালয়টি জেলা শহরের অন্যতম ব্যস্ত ও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক এস.আর. রোড এবং কলেজ রোড এর সংযোগ মোড়ে অবস্থিত। এটি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের সমসেরাবাদ এবং বাঞ্চানগর গ্রামের মধ্যে পড়েছে।
কৃতি শিক্ষার্থীবৃন্দ
[সম্পাদনা]স্বনামধন্য বিদ্যালয়টির খ্যাতিমান অসংখ্য কৃতি শিক্ষার্থীর মধ্যে আমরা যাঁদেরকে স্মরণ করি তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন-
- মোহাম্মদউল্লাহ - মহামান্য রাষ্ট্রপতি (১৯৭৩ - ১৯৭৫), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।
- ওয়াহিদুল হক - অর্থমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।
- আবুল আহসান - সার্কের প্রথম মহাসচিব; যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত; বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব।
- মফিজুল্লাহ্ কবীর - প্রথম উপ-উপাচার্য (১৯৭৬ - ১৯৮১), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
- রাজকুমার - প্রথম এম.এস.সি পাস, বৃহত্তর নোয়াখালী।
- মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী (মাসুম) - বোস অধ্যাপক, টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা। (আন্তর্জাতিক লেকচারার)।
- রামেন্দু মজুমদার - সাবেক সভাপতি, আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট (ITI); একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট অভিনেতা, মঞ্চ নির্দেশক ও নির্মাতা।
- এ. কে. এম. শাহজাহান কামাল - বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী (২০১৮ - ২০১৯), গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; সাবেক সংসদ সদস্য, লক্ষ্মীপুর-৩ সংসদীয় আসন।
- এ এস এম মাকসুদ কামাল - সাবেক উপাচার্য- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সাবেক নির্বাচিত সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
- শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি - সাবেক সংসদ সদস্য, লক্ষ্মীপুর-৩ সংসদীয় আসন; বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।
ক্যাম্পাস
[সম্পাদনা]বিদ্যালয়টি প্রায় ১০ একর ভুমির উপর অবস্থিত। এর ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রাতঃ ও দিবা শাখার জন্য দুটি আলাদা একাডেমিক ভবন, একটি মসজিদ, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি স্কুল হোস্টেল, একটি অডিটেরিয়াম, দুটি বড় পুকুর এবং একটি বিশাল মাঠ বিদ্যমান।
বিদ্যালয় ভবন: ভবন সংখ্যা ৭ টি।
১। প্রশাসনিক ভবন।
২। প্রাক্তন এইচ, এ, সামাদ একাডেমীর টিনশেড ভবন।
৩। রজনীগন্ধা (উত্তরপাশের ত্রিতলভবন)।
৪। শাপলা (মাঠের পূর্বপাশের ত্রিতল ভবন)।
৫। ভোকেশনাল বিল্ডিং।
৬। অডিটরিয়াম।
৭। টিনশেড ছাত্রাবাস।
খেলার মাঠ: বিদ্যালয়ে দুটি খেলার মাঠ রয়েছে।
(ক) প্রাক্তন মডেল হাইস্কুল মাঠ: এটি খেলাধুলার ক্ষেত্রে যুগযুগ ধরে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন বিশাল সমাবেশ এ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আন্ত:স্কুল ফুটবল, বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্ট এমনকি গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সুদূর কলকাতা মোহামেডান ও মোহনবাগের প্রখ্যাত খেলোয়াড়গণ এ মাঠে ফুটবল খেলায় বিভিন্ন সময় অংশ গ্রহণ করেছিলেন। লক্ষ্মীপুর স্টেডিয়াম নির্মিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ মাঠই লক্ষ্মীপুরের খেলাধুলার প্রাণকেন্দ্র ছিল। এই মাঠের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে লক্ষ্মীপুরকে মহকুমা এবং রাষ্ট্রপতি হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে লক্ষ্মীপুরকে জেলা ঘোষণা করেন। মাঠের দক্ষিণ পাশে অডিটোরিয়াম সংলগ্ন পুকুর পাড়ে সে-ই উদ্ভোধনি ফলক এখনো দৃশ্যমান।
(খ) লক্ষ্মীপুর এইচ. এ. সামাদ একাডেমীর খেলার মাঠ:
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের মসজিদ, শহীদ মিনার এর অংশ বিশেষ এবং জেলা শিক্ষা অফিস এই খেলার মাঠের অন্তর্ভুক্ত।
বিদ্যালয়ের হলরুম ও অডিটরিয়ামঃ প্রাক্তন লক্ষ্মীপুর মডেল হাইস্কুল মাঠের দক্ষিণে অবস্থিত সুপরিসর এই অডিটোরিয়াম এবং ল্যাবরেটরি ভবনটি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রধান শিক্ষক জনাব আবদুল গণি বি.এ.বি টি মহোদয় যখন প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন তখন ১৯৬৫/৬৬ অর্থবছরে সদাসয় সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থে নির্মাণ করা হয়। বিভিন্ন প্রকারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, মঞ্চনাটক ইত্যাদি এই অডিটরিয়ামে সুদীর্ঘ সময় ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
পরিসংখ্যান
[সম্পাদনা]- প্রতি শিফটে প্রতিটি শ্রেণির জন্য দুইটি করে মোট চারটি শাখা রয়েছে। প্রতিটি শাখায় ৬০ জন করে প্রায় ১২০০ জন ছাত্র পড়াশোনা করে।
- ছাত্রদের পাঠদানের জন্য প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষক রয়েছেন।
- ফলাফলের ক্ষেত্রে প্রায় প্রতি বছর প্রথম স্থানে থাকে।
- বিদ্যালয়ের পাশের হার ৯৯%