চাঁদনী বার
চাঁদনী বার | |
---|---|
পরিচালক | মধুর ভান্ডারকর |
প্রযোজক | লতা মোহন |
রচয়িতা | মোহন আজাদ (চিত্রনাট্য ও সংলাপ) মাসুদ মির্জা (সংলাপ) |
শ্রেষ্ঠাংশে | তাবু অতুল কুলকর্ণী রাজপাল যাদব |
সুরকার | রাজু সিং |
চিত্রগ্রাহক | রাজীব রবি |
সম্পাদক | হেমল কোঠারি |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৫০ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
চাঁদনী বার হল মধুর ভান্ডারকর পরিচালিত ২০০১ সালের ভারতীয়, হিন্দি ভাষার অপরাধ চলচ্চিত্র।[২] এটি পতিতাবৃত্তি, নৃত্য বার, গুলি এবং বন্দুকের অপরাধ সহ মুম্বই সমাজবিরোধী জগতের কঠিন জীবনকে চিত্রিত করেছে। ছবিতে তাবু এবং অতুল কুলকর্ণী মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[৩] এতে আরও অভিনয় করেছিলেন অনন্যা খারে, রাজপাল যাদব, মিনাক্ষী সাহানী এবং বিশাল ঠক্কর। ছবিটি সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল এবং এটি চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিল।[৪][৫][৬]
ঘটনা
[সম্পাদনা]মমতাজ (তাবু) এক সাদাসিধা গ্রামীণ মহিলা, যার পরিবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হয়েছিল। তার গ্রামটি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার পরে, সে তার মামার সাথে মুম্বাই চলে আসে, তার পরিবারের আর একমাত্র জীবিত সদস্য তার মামা। তারা মারাত্মকভাবে দরিদ্র। তার মামা তাকে চাঁদনী বারের বার নর্তকী হতে অনুরোধ করে এবং সে অস্বীকার করলে মানসিকভাবে তাকে পীড়ন করে। তাকে প্রতিশ্রুতি দেয় এই বলে যে এই কাজটি অস্থায়ী, যতক্ষণ না সে নিজে কোন চাকরি পাচ্ছে ততক্ষণের জন্য। মমতাজ লাজুক এবং এই কাজটি করতে তার ঘৃণা হচ্ছিল, তবুও সে নিজের ওপর জোর ক'রে, নাচ এবং প্রেমের ভান করা শুরু করল। কিন্তু তার মামা নিজের কথা রাখার কোন চেষ্টাই করেনি; সে মমতাজের উপার্জনে জীবনযাপন করা শুরু করল, মদ্যপান করে টাকা উড়িয়ে দিল, এবং সে কখনই চাকরি পায় নি। এক রাতে, মদ্য পান করার পরে এবং বার নর্তকীদের নাচ দেখার পরে, মমতাজের মামা তাকে ধর্ষণ করে। মমতাজ উন্মত্তপ্রায় হয়ে অন্য নর্তকীদের সব বলে ফেলে। যদিও তারা তাকে সান্ত্বনা দেয়, মমতাজ এক কঠিন সত্যের সম্মুখীন হয় যখন সে বুঝতে পারে যে বারে থাকা আরও অনেক নর্তকীরই সমান বিরক্তিকর এবং বেদনাদায়ক গল্প রয়েছে। সে নিজেকে টেনে তোলে এবং বারে নিজের কাজে নিজেকে নিমগ্ন করে।
অবশেষে, মমতাজ পট্টিয়া সাওয়ান্ত (অতুল কুলকর্ণী) নামে এক গুন্ডার নজরে পড়ে। সে তাকে প্ররোচিত করার চেষ্টা করে এবং অবশেষে অর্থ প্রদান করে তাকে লাভ করতে চায়। মমতাজ এই কাজে রাজী হয় না এবং পট্টিয়াকে তার ধর্ষণের কথা জানায়। ক্ষুব্ধ পট্টিয়া তার মামাকে হত্যা করে তাকে বিবাহ করে। মমতাজ বারে নাচা ছেড়ে দেয়, এবং পট্টিয়া তার অস্থির মেজাজ সত্ত্বেও দ্রুত অপরাধী পদের ওপর দিকে উঠে আসে। এই দম্পতি তাদের ছেলে অভয় এবং কন্যা পায়েলকে নিয়ে সুখী জীবন কাটাচ্ছিল। মমতাজ অভয় ও পায়েলকে শিক্ষিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে, এবং তার নৃত্য দুনিয়া ও পাট্টিয়ার গুন্ডা দুনিয়া থেকে অনেক দূরে থাকে।
পট্টিয়া নিজের আচরণ এবং মেজাজের ফলে নিজেকে সামলাতে না পেরে একজন পুলিশের চরকে হত্যা করে ফেলে, এর ফলস্বরূপ সে অপরাধ দুনিয়ায় বন্ধু এবং যোগাযোগ হারিয়ে বসে। সে পুলিশের লক্ষ্যে পরিণত হয়। মুম্বাইয়ের বিভিন্ন গুন্ডাদের 'নির্মূল' করার অভিযানে সে ধরা পড়ে এবং তাকে হত্যা করা হয়। ধীরে ধীরে শোকার্ত মমতাজের অর্থের সঞ্চয় শেষ হয়ে আসে এবং শীঘ্রই সে বুঝতে পারে যে পট্টিয়া প্রচুর পরিমানে ঋণ রেখে গেছে। আয়ের কোনও উৎস না থাকায় সে আবার চাঁদনী বারে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
অনেক বছর পেরিয়ে গেছে এবং মমতাজ এখনও চাঁদনী বারে কাজ করে: এখন সেখানে সে পরিচারিকা। সে অভয় এবং পায়েলের জন্য একটি স্থিতিশীল পরিবেশ দিয়েছে, তারা এখন কিশোর বয়স্ক। মমতাজ তার সন্তানদের স্কুলে ভাল করতে উৎসাহ দেয়, যাতে তারা তাদের চারপাশের অপরাধ জগৎ থেকে দূরে সরে যেতে পারে। অভয় পড়াশুনায় খুব ভালো এবং ক্লাসে ভাল ফল করে, কিন্তু হঠাৎ করেই তার একদল ঝামেলাবাজ এবং জালিয়াতদের সাথে বন্ধুত্ব হয়। মমতাজ সতর্ক করা সত্ত্বেও, সে তার বন্ধুদের সাথে মেলামেশা চালাতে থাকে। একদিন অভয় ও তার দলকে তোলা আদায়ের অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং কিশোর কারাগারে আটক করে। যদিও সে ঐ অপরাধের অংশ ছিল না, পট্টিয়ার পুত্র হওয়ার ফলে পুলিশকে তার নির্দোষিতার আবেদনকে উপেক্ষা করে। জেলের মধ্যে, একজোড়া বয়স্ক কয়েদী অভয়কে ধর্ষণ করে।
মমতাজ পুলিশের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে, কিন্তু কোনও ফল হয়নি। সে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে দেখা করে, যাদের পুলিশে যোগাযোগ রয়েছে এবং তারা অভয়ের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারে। তারা তাকে সাহায্য করতে রাজি হয় কিন্তু উচ্চ মূল্যের বিনিময়ে। তাকে সেই অর্থ দুদিনেরও কম সময়ে তাদের দিতে হবে। কোন উপায় না দেখে মমতাজ নিজের দেহ বিক্রি করে টাকা যোগাড় করে। তখনও টাকা কম পড়ছিল। মায়ের দুর্দশা দেখে, পায়েল চাঁদনী বারে নর্তকীর কাজ নেয় এবং মা কে টাকা এনে দেয়।
অর্থের যোগাড় হয়ে গেলে মমতাজ অভয়কে ছাড়িয়ে আনে। কিন্তু সে লক্ষ করে যে অভয় আর কয়েক দিন আগের মত একই সুখী ছেলে নেই। পরিবর্তে, সে শীতল, নির্মম হয়ে গেছে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছে। অভয় অপরাধ জগতে সংযোগ তৈরি করে এবং একটি বন্দুক পায়। সেই বন্দুক দিয়ে সে তার ধর্ষণকারী ছেলেদুটিকে হত্যা করে। মমতাজ ঘটনাস্থলে এসে তার পুত্রকে হত্যাকারী দেখতে পায়, সে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে।
এর পরে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে পায়েল তার মায়ের পদচিহ্ন অনুসরণ করতে চলেছে, এবং অভয় আরও একটি পট্টিয়া হতে চলেছে।
চরিত্র চিত্রণ
[সম্পাদনা]- তাবু- মমতাজ আলী আনসারী
- অতুল কুলকর্ণী- পট্টিয়া সাওয়ান্ত
- রাজপাল যাদব- ইকবাল চামদি
- শ্রীবল্লব ব্যাস- হাবিব ভাই
- বিনয় আপ্তে- ইন্সপেক্টর গায়কোয়াড়
- অনন্যা খারে- দীপা পান্ডে (বার নর্তকী)
- উপেন্দ্র লিমায়ে- দীপের স্বামী
- রজন্না- উমা শঙ্কর পান্ডে
- মিনাক্ষী সাহানী- পায়েল সাওয়ান্ত (মমতাজের মেয়ে)
- বিশাল ঠক্কর- অভয় সাওয়ান্ত (মমতাজের ছেলে)
- অভয় ভার্গব- হেগড়ে আন্না
- সুহাস পলশিকার- ইরফান মামু (মমতাজের মামা)
- শাব্বির মীর- চাচা পিন্টো
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Chandni Bar"। Times of India। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Chandni Bar"। Bollywood Hungama। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Happy Birthday Tabu: From Andhadhun, Astitva, Chandni Bar to Cheeni Kum, Drishyam, Haider; actor's best roles till date | Latest News & Updates at DNAIndia.com"। DNA India।
- ↑ "'Chandni Bar' completes 13 years, Madhur Bhandarkar says it changed his life forever"। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Directorate of Film Festival"। web.archive.org। ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩। Archived from the original on ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ "Chandni Bar completes 19 years: Madhur Bhandarkar thanks Tabu, Atul Kulkarni with a special video"। Mumbai Mirror।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Chandini Bar (ইংরেজি)
টেমপ্লেট:Madhur Bhandarkar টেমপ্লেট:National Film Award for Best Film on Other Social Issues