আপেক্ষিকতার মূলনীতি
পদার্থবিজ্ঞানে, আপেক্ষিকতার মূলনীতি বলতে একটি পূর্বশর্তকে বোঝায়। আর তা হলো, পদার্থবিদ্যার নীতি বর্ণনাকারী সকল সমীকরণ সকল গ্রহণযোগ্য প্রসঙ্গ কাঠামোতে একই রূপে থাকবে।
উদাহরণস্বরূপ, বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের রূপরেখায়, সকল জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণের চেহারা একই। সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের রূপরেখায়, ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণ তথা আইনস্টাইনের ক্ষেত্র সমীকরণ যেকোন প্রসঙ্গ কাঠামোতে একই রূপে বিদ্যমান থাকবে।
আপেক্ষিকতার কিছু কিছু মূলনীতি সফলতার সাথে বিজ্ঞানের সকল শাখায় প্রয়োগ করা সম্ভব হয়েছে, কোথাও পরোক্ষভাবে (যেমন, নিউটনীয় বলবিদ্যা) আবার কোথাও কোথাও প্রত্যক্ষভাবে (যেমন, আলবার্ট আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা ও সাধারণ আপেক্ষিকতা)
মূল ধারণা
[সম্পাদনা]বিজ্ঞানের অধিকাংশ শাখায়, আপেক্ষিকতার বিশেষ কিছু মূলনীতি ব্যাপকভাবে ধরে নেয়া হয়। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, এটা ধরে নেয়া যে, যেকোন প্রাকৃতিক নীতিই কাল-নিরপেক্ষ; বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানগুলোতেও সাধারণভাবে এটা ধরেই নেয়া হয় যে, প্রাকৃতিক নীতি যে ব্যক্তি তা মাপছে তার উপর নির্ভর করে না, যে-ই মাপামাপি করুক না কেন, সর্বক্ষেত্রে ফলাফল একই আসবে। এই ধরনের মূলনীতিগুলো বৈজ্ঞানিক জিজ্ঞাসার একদম প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আপেক্ষিকতার যেকোন মূলনীতি, প্রাকৃতিক নীতিতে প্রতিসাম্যের ব্যাপারটিকে ফুটিয়ে তোলেঃ আর তা হলো, নীতিগুলো অবশ্যই একজন পর্যবেক্ষকের নিকট যেভাবে প্রতীয়মান হয়, অন্যদের কাছেও ঠিক একই রূপে ধরা দেবে। নেদারের উপপাদ্য নামক একটা তাত্ত্বিক অনুসন্ধানের ফলাফল থেকে জানা যায়, এমন যেকোন প্রতিসাম্য একইসাথে একটা সংরক্ষণশীলতা নীতিকেও তুলে ধরে। উদাহরণস্বরূপ, যদি দুজন পর্যবেক্ষক দুটি ভিন্ন সময়ে হুবহু একই নীতির উপস্থিতি দেখতে পান, তাহলে শক্তি নামক একটা রাশি সংরক্ষিত থাকবে, অর্থাৎ শক্তির নিত্যতা সূত্র সত্য বলে প্রমাণিত হবে। এর আলোকে, আপেক্ষিকতার মূলনীতিগুলো প্রকৃতির আচরণ বিষয়ক এমন কিছু ভবিষ্যদবাণী করতে সক্ষম যা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা সম্ভব; সুতরাং এগুলো কীভাবে বিজ্ঞানীর ভাষায় নীতি লেখা যায় সে বিষয়ক কিছু বক্তব্যমাত্র নয়।
আপেক্ষিকতার বিশেষ মূলনীতি
[সম্পাদনা]বিশেষ আপেক্ষিকতার প্রথম স্বীকার্য অনুসারে,[১]
বিশেষ আপেক্ষিকতার মূলনীতি: যদি ক স্থানাংক ব্যবস্থার একটা সিস্টেম নেয়া হয় যাতে এর সাথে সম্পর্কিত পদার্থবিজ্ঞানের নীতিগুলি তাদের সহজতম রূপে বিদ্যমান থাকে তবে, ওই নীতিগুলি সেই একই রূপে পূর্বের সিস্টেমের সাথে সমবেগে চলমান খ স্থানাংক ব্যবস্থার অন্য কোন সিস্টেমেও বজায় থাকবে।
এই স্বীকার্য জড় প্রসঙ্গ কাঠামোকে সংজ্ঞায়িত করে।
বিশেষ আপেক্ষিকতার মূলনীতি বলছে যে, পদার্থবিজ্ঞানের নীতিগুলো প্রত্যেক জড় প্রসঙ্গ কাঠামোতে অভিন্ন হওয়া উচিত, তবে অ-জড় কাঠামোতে সেগুলো বিভিন্ন রূপ নিতে পারে। এই মূলনীতি নিউটনীয় বলবিদ্যা এবং বিশেষ আপেক্ষিকতা এই উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হয়েছে। বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে এই মূলনীতির প্রভাব এতই বেশি যে, ম্যাক্স প্লাংক মূলনীতির নাম থেকেই এই বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের নামকরণ করেছেন। [২]
অনুগ্রহ করে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করে এর উন্নতিতে সহায়তা করুন। অতিরিক্ত তথ্যের জন্য আলাপ পাতা দেখতে পারেন।
|
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Einstein, A., Lorentz, H. A., Minkowski, H., and Weyl, H. (১৯৫২) [1923]। Arnold Sommerfeld, সম্পাদক। The Principle of Relativity: A Collection of Original Memoirs on the Special and General Theory of Relativity। Mineola, NY: Dover Publications। পৃষ্ঠা 111। আইএসবিএন 0-486-60081-5।
- ↑ Weistein, Galina (২০১৫)। Einstein's Pathway to the Special Theory of Relativity। Cambridge Scholars Publishing। পৃষ্ঠা 272। আইএসবিএন 978-1-4438-7889-0। Extract of page 272