আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ
انجمن اتحاد المدارس بنغلاديش | |
সংক্ষেপে | ইত্তেহাদ |
---|---|
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৫৯ |
প্রতিষ্ঠাতা | মুফতি আজিজুল হক |
দাপ্তরিক ভাষা | বাংলা, ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফারসি |
প্রধান প্রতিষ্ঠান | আল হাইআতুল উলয়া |
দেওবন্দি আন্দোলন |
---|
সিরিজের অংশ |
আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ ( আরবি: انجمن اتحاد المدارس بنغلاديش ) হল বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত একটি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড,[১] যা আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার অধীনে পরিচালিত হয়।[২] ১৯৫৯ সালে জামিয়া পটিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আজিজুল হকের তত্ত্বাবধানে হাজী মুহাম্মদ ইউনুস এই বোর্ডটি গঠন করেন।[৩]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]কওমি মাদ্রাসাসমূহের সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা, তত্ত্বাবধান এবং পাঠ্যসূচি সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে সামঞ্জস্য ও ঐক্য বহাল রাখার লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আজিজুল হকের উদ্যোগে আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠাতার জীবদ্দশায় মাদ্রাসাগুলাের পরিচালনা পদ্ধতিস্বরূপ উর্দু ভাষায় “দস্তুরে আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস ” নামে একটি সংবিধান রচিত হয়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই সংবিধানের সংশােধন এবং তাতে অনেক বিষয় সংযােজনের প্রয়ােজন দেখা দেয়। তদুপরি পরিচালনাধীন মাদ্রাসাগুলাের পক্ষ থেকে মাতৃভাষায় সংবিধান রচনার দাবি উত্থাপিত হতে থাকে। অনুরূপ পরিস্থিতিতে হাজী মুহাম্মদ ইউনুসের জীবদ্দশায় ১৯৯১ সালের ১২ জানুয়ারি তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ইত্তেহাদের মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশনে বাংলা ভাষায় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কওমি মাদ্রাসা সংবিধান রচনার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আর খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করার জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সাব কমিটি ১৯৯২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর একটি চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করে অনুমােদনের জন্য মজলিসে শুরা বরাবর পেশ করে। অতঃপর মজলিসে শুরার ১৯৯২ সালের ১২ ডিসেম্বর ইত্তেহাদের তদানীন্তন সভাপতি হারুন ইসলামাবাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে খসড়াটি পঠিত হয় এবং বিস্তারিত আলােচনা -পর্যালােচনা, পরীক্ষা - নিরীক্ষা এবং প্রয়ােজনীয় সংশােধন - সংযােজনের পর তা “ কওমি মাদ্রাসা সংবিধান, বাংলাদেশ ” রূপে অনুমােদন লাভ করে। উক্ত তারিখ থেকে সংবিধানের কার্যকরীকরণ এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তদুপরি উক্ত তারিখ থেকে এ সংবিধানের পরিপন্থী পূর্বের যাবতীয় দস্তুর, সংবিধান ও আইন-কানুন রহিত ঘােষিত হয়। পরবর্তীতে মজলিসে শুরার বিভিন্ন অধিবেশনে বিভিন্ন সংশােধনী অনুমােদিত হয়। অধিবেশনে এ সংবিধানের আরবি নাম ঘােষিত হয়, “দস্তুরুল মাদারিস আল-ইসলামিয়াহ আল-আহলিয়্যাহ, বাংলাদেশ”। ইত্তেহাদের পরিচালনাধীন প্রতিটি কওমি মাদ্রাসার জন্য অত্র সংবিধান অনুসরণ এবং এর আইন - কানুনগুলাের সার্বিক বাস্তবায়ন অপরিহার্য গণ্য হয়।[৪]
বিভাগসমূহ
[সম্পাদনা]আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসে নিম্নোক্ত বিভাগসমূহ রয়েছে:[৫]
- শিক্ষা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ
- শিক্ষক প্রশিক্ষণ
- পরিদর্শন
- ইসলামি গবেষণা
- পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ
- দাওয়াত ও প্রকাশনা
- রেজিস্ট্রেশন
- হিসাব নিকাশ
- আর্থিক সাহায্য ও অনুষ্ঠান
- সংস্কার ও প্রতিরক্ষা
কেন্দ্রীয় পরীক্ষা
[সম্পাদনা]আল হাইআতুল উলয়া গঠনের পূর্বে ইত্তেহাদের অধীনে ৬ টি কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হত। বর্তমানে আল হাইআতুল উলয়ার মাধ্যমে দাওরায়ে হাদিস ( মাস্টার্স ) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায়, ইত্তেহাদের অধীনে ৫ টি কেন্দ্রীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো হল :[৬]
- ফজিলত(স্নাতক পাস, দুই বছর মেয়াদি)
- সানাভিয়াহ আল উলিয়া (উচ্চ মাধ্যমিক)
- সানাভিয়াহ (মাধ্যমিক)
- মুতাওয়চ্ছিতাহ (অষ্টম শ্রেণী)
- ইবতেদাইয়াহ ( পঞ্চম শ্রেণি)
- হেফজ
উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান
[সম্পাদনা]- আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া
- আল জামিয়াতুল মাদানিয়া চট্টগ্রাম
- আল জামিয়া আল ইসলামিয়া টেকনাফ
- আল জামিয়া আল কুরআনিয়া ইউনুছিয়া আজিজুল উলুম চন্দ্রঘোনা
- আল জামিয়া সিলোনিয়া মাদানিয়া ফেনী
- মাদ্রাসা ইউনুছিয়া ফতহুল ইসলাম মদুনাঘাট
- আল জামিয়া আল এমদাদিয়া আজিজুল উলুম পোকখালী কক্সবাজার
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "'আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি'আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ' এর অধীন 'কওমি মাদ্রাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিস (তাকমীল)-এর সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি)-এর সমমান প্রদান আইন, ২০১৮'"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১০।
- ↑ "মাদ্রাসা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১৯।
- ↑ কাদির, মাসউদুল (২০০৬)। (শায়খুল আরব ওয়াল আজম হাজী মুহাম্মদ ইউনুস রহ.) । পটিয়ার দশ মনীষী (পিডিএফ) (২য় সংস্করণ)। আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম: আল মানার লাইব্রেরী। পৃষ্ঠা ৪১।
- ↑ আব্দুল হালিম বুখারী, মুফতি (১৯৯৩)। দস্তুরুল মাদারিস আল-ইসলামিয়্যাহ আল-আহলিয়্যাহ (কওমি মাদ্রাসা সংবিধান) (পিডিএফ)। পটিয়া, চট্টগ্রাম: আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া। পৃষ্ঠা ৩।
- ↑ মাসউদুল কাদির, মাওলানা (২০০৬)। পটিয়ার দশ মনীষী (পিডিএফ)। আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম: আল মানার লাইব্রেরি। পৃষ্ঠা ৪১, ৪২।
- ↑ "আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ (কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড)-এর ১৪৩৯হি: মোতাবেক,২০১৮ ইং: এর ৫৯ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষা"। আল-জামিয়া আল- ইসলামিয়া পটিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৬।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- আব্দুল হালিম বুখারী, মুফতি (১৯৯৩)। দস্তুরুল মাদারিস আল-ইসলামিয়্যাহ আল-আহলিয়্যাহ (কওমি মাদ্রাসা সংবিধান) (পিডিএফ)। পটিয়া, চট্টগ্রাম: আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া। পৃষ্ঠা মোট ৫০।