আখনাস ইবনে শুরায়ক
আল আখনাস ইবনে শুরায়ক আস সাকাফি মুহাম্মাদের একজন সাহাবা ছিলেন।[১] যিনি বদরের যুদ্ধ হতে পলায়ন করেছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে হুনায়নের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[২]
নাম ও পরিচয়
[সম্পাদনা]আখনাস ইবনে শুরায়ক এর কুনিয়াত(উপনাম) ছিল আবু সালাব; প্রকৃত নাম ছিল উবায়ি এবং উপাধি ছিলো আখনাস। তিনি বদরের যুদ্ধ হতে পলায়ন করার কারণে এই উপাধি লাভ করেছিলেন। এছাড়াও তিনি বনু যুহরার সহিত মিত্ৰতা সূত্রে আবদ্ধ ছিলো।[১][৩]
জীবনী বর্ণনা
[সম্পাদনা]কুরআন তেলোয়াত শোনা
[সম্পাদনা]ইসলাম গ্রহণের পূর্বে আখনাস, আবু সুফিয়ান, আবু জেহেল রাত্রিকালে গোপনে এসে মুহাম্মাদ এর কুরআন তেলোয়াত শুনতেন। আখনাস, এই বানীসমূহ (আয়াত) সমন্ধে আবু সুফিয়ানের মন্তব্য জানতে চেয়েছিলেন। আবু সুফিয়ান এসব বানীর কিছুপরিমাণ বিশ্বাস করেন বলে জানিয়েছিলেন এবং প্রত্যুত্তরে একই প্রশ্ন করেছিলেন। জবাবে আখনাস জানিয়েছিলেন যে তিনি এসব বানীর সমস্তই বিশ্বাস করেন। [১]
বদরের যুদ্ধে
[সম্পাদনা]বদরের যুদ্ধে যখন তার নিকট খবর আসল, আবু সুফিয়ান তার কাফিলা নিয়ে পলায়ন করেছে, তখন তিনিও বনু যুহরাকে নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেছিলেন। তখন যুদ্ধক্ষেত্রে কথা উঠেছিলো যে, “অগ্রভাগ উল্টানো ক্ষুদ্র খাদার নাসিকাবিশিষ্ট (আখনাস) ব্যক্তিটি বনু যুহরাকে নিয়ে পলায়ন করেছে। এখান থেকেই তার আখনাস উপাধিটি প্রচলিত হয়ে যায়।
তবে, ইসলাম গ্রহণ করার পরবর্তী সময়ে তিনি বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।[১]
বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ
[সম্পাদনা]ইবনে আতিয়া সুদ্দি বলেছেন, আল আখনাস ইবনে শুরায়ক মুহাম্মাদের নিকট গমন করে ইসলাম গ্রহণ করে এবং বলেন, “আল্লাহ জ্ঞাত আছেন, আমি আমার এই ঘােষণায় সত্যবাদী।” অতঃপর আখনাস পলায়ন করেন এবং মুসলমানদের এক আবাসস্থলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ক্ষেত-খামারে আগুন লাগিয়ে দেন এবং উৎকৃষ্ট গবাদি পশুগুলো হত্যা করেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কুরআনের কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণ হয়-[৪][৫]
“ | ২০৪) আর এমন কিছু লোক রযেছে যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। আর তারা সাক্ষ্য স্থাপন করে আল্লাহকে নিজের মনের কথার ব্যাপারে। প্রকৃতপক্ষে তারা কঠিন ঝগড়াটে লোক।
(২০৫) যখন ফিরে যায় তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না। (২০৬) আর যখন তাকে বলা হয় যে, আল্লাহকে ভয় কর, তখন তার পাপ তাকে অহঙ্কারে উদ্বুদ্ধ করে। সুতরাং তার জন্যে দোযখই যথেষ্ট। আর নিঃসন্দেহে তা হলো নিকৃষ্টতর ঠিকানা। |
” |
মুসলিম নিয়ে বিতর্ক
[সম্পাদনা]ইবনে আতিয়া সুদ্দি বলেন, আল আখনাস এর ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারটি কখনোই প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু ইবনে হাজার আল আসকালানী বলেন, "আমি তাকে সাহাবী প্রমাণ করেছি”। তিনি বলেন, এমনও হতে পারে, তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং পরে এটি ত্যাগ করেছিলেন, অতঃপর পুনরায় ইসলামে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন।[১]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]তিনি হুনায়নের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং খলিফা উমরের খিলাফতের প্রথম দিকেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।