সেলসিয়াস
এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটি পরিবর্ধন বা বড় কোনো পুনর্গঠনের মধ্যে রয়েছে। এটির উন্নয়নের জন্য আপনার যে কোনো প্রকার সহায়তাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। যদি এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদটি কয়েকদিনের জন্য সম্পাদনা করা না হয়, তাহলে অনুগ্রহপূর্বক এই টেমপ্লেটটি সরিয়ে ফেলুন। ৪ দিন আগে Md. T Mahtab (আলাপ | অবদান) এই নিবন্ধটি সর্বশেষ সম্পাদনা করেছেন। (হালনাগাদ) |
ডিগ্রি সেলসিয়াস হলো সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্কেলের একক (মূলত সুইডেনের বাইরে সেন্টিগ্রেড স্কেল নামে পরিচিত), ইন্টারন্যাশনাল সিস্টেম অফ ইউনিটস (এসআই) এ ব্যবহৃত দুটি তাপমাত্রার স্কেলের মধ্যে একটি, অন্যটি হলো কেলভিন স্কেল। ডিগ্রি সেলসিয়াস (প্রতীকঃ °C) তাপমাত্রা স্কেলের একটি নির্দিষ্ট বিন্দু বা দুটি তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য বা পরিসীমা বোঝাতে পারে। সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যান্ডার্স সেলসিয়াস (১৭০১-১৭৪৪) এর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়, যিনি ১৭৪২ সালে এর প্রথম সংস্করণ প্রস্তাব করেছিলেন। এই একককে বহু বছর ধরে বিভিন্ন ভাষায় সেন্টিগ্রেড বলা হত (ল্যাটিন সেন্টাম থেকে, যার অর্থ ১০০, এবং গ্রাডাস, যার অর্থ ধাপ)। ১৯৪৮ সালে, ওজন ও পরিমাপের জন্য আন্তর্জাতিক কমিটি সেলসিয়াসকে সম্মান জানাতে এবং কিছু ভাষায় গ্রেডিয়ানের একশো ভাগের শব্দটির সাথে বিভ্রান্তি দূর করতে এটির নাম পরিবর্তন করে।। বেশিরভাগ দেশ এই স্কেলটি ব্যবহার করে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কিছু দ্বীপ অঞ্চল এবং লাইবেরিয়া এখনও ফারেনহাইট স্কেল ব্যবহার করা হয়)।
ঊনবিংশ শতাব্দী জুড়ে, স্কেলটি পানির হিমাঙ্কের জন্য ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১ atm চাপে পানির স্ফুটনাঙ্কের জন্য ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল।(সেলসিয়াসের প্রাথমিক প্রস্তাবে, মানগুলো বিপরীত ছিল: স্ফুটনাঙ্ক ছিল ০ ডিগ্রি এবং হিমাঙ্ক ছিল ১০০ ডিগ্রি।)
১৯৫৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে একক ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্কেলের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞায় পরম শূন্য এবং পানির ত্রৈধ বিন্দু ব্যবহার করা হয়েছিল। ২০০৭ সাল থেকে তাপগতিবিদ্যার এসআই বেস ইউনিট, কেলভিনের পরিপ্রেক্ষিতে সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্কেল সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে (প্রতীকী: K) । পরম শূন্য, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, এখন ঠিক ০ K এবং − ২৭৩.১৫ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।
ইতিহাস
১৭৪২ সালে, সুইডিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যান্ডার্স সেলসিয়াস (১৭০১-১৭৪৪) একটি তাপমাত্রার স্কেল তৈরি করেছিলেন যা বর্তমানে "সেলসিয়াস" নামে পরিচিত। স্কেলটি প্রথমে প্রচলিত নিয়মের বিপরীত ছি্ল: ০ কে পানির স্ফুটনাঙ্ক এবং ১০০ কে পানির হিমাঙ্ক হিসেবে ধরা হয়েছিল। তিনি অবজারবেশন অব টু পারসিস্টেন ডিগ্রিস অন এ থার্মোমিটার গবেষাপত্রে তাঁর পরিক্ষা উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন যে বরফের গলনাঙ্ক মূলত চাপ দ্বারা প্রভাবিত হয় না। বায়ুমণ্ডলীয় চাপের ফাংশন হিসাবে পানির স্ফুটনাঙ্ক কীভাবে পরিবর্তিত হয় তাও তিনি উল্লেখযোগ্যভাবে নির্ভুলতার সাথে দেখিয়েছেন। তিনি প্রস্তাব করেছিলেন যে তাঁর তাপমাত্রার স্কেলের শূন্য বিন্দু, যেটি স্ফুটনাঙ্ক হিসেবে ধরা হয়েছিল, গড় সমুদ্রপৃষ্ঠে গড় ব্যারোমেট্রিক চাপে ক্রমাঙ্কন করা হবে। এই চাপকে এক আদর্শ বায়ুমণ্ডল বলা হয়। ১৯৫৪ সালে বিআইপিএম এর ১০ম সাধারণ সম্মেলন জেনেরাক কনফারেন্স অন ওয়েডস এন্ড ম্যাজারস (ওজন এবং পরিমাপের উপর সাধারণ সম্মেলন) (সিজিপিএম) একটি আদর্শ বায়ুমণ্ডলকে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ১,০৩,২৫০ ডাইনের সমান (১০১.৩২৫ কিলো-প্যাসকেল) সংজ্ঞায়িত করেছে।
১৭৪৩ সালে, লিওন একাডেমির স্থায়ী সচিব ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী জাঁ-পিয়ের ক্রিস্টিন সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্কেলটি উল্টিয়ে দিয়েছিলেন যাতে ০ পানির হিমাঙ্কের প্রতিনিধিত্ব করে এবং ১০০ পানির স্ফুটনাঙ্কের প্রতিনিধিত্ব করে। কেউ কেউ সেলসিয়াসের মূল স্কেলের বিপরীত উদ্ভাবনের জন্য ক্রিস্টিনকে কৃতিত্ব দেন, আবার অন্যরা বিশ্বাস করেন যে ক্রিস্টিন কেবল সেলসিয়াসের স্কেলকে বিপরীত করেছেন। ১৭৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মে তিনি একটি পারদ থার্মোমিটারের নকশা করেন এবং প্রকাশ করেন, যা কারিগর পিয়েরে কাসাতি দ্বারা নির্মিত "লিয়নের থার্মোমিটার"।
১৭৪৪ সালে, সুইডিশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস (১৭০৭-১৭৭৮) ,কাকতালীয়ভাবে, সেলসিয়াসের স্কেলটি বিপরীত করেছিলেন, যখন অ্যান্ডারস সেলসিয়াসের মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর গ্রীনহাউসে ব্যবহারের জন্য সেই সময়ের সুইডেনের শীর্ষস্থানীয় বৈজ্ঞানিক যন্ত্র নির্মাতা ড্যানিয়েল একস্ট্রম, "লিনিয়াস-থার্মোমিটার" তৈরি করেছিলেন, যার কর্মশালা স্টকহোম মানমন্দিরের বেসমেন্টে অবস্থিত ছিল। অসংখ্য পদার্থবিজ্ঞানী, বিজ্ঞানী এবং যন্ত্র নির্মাতাদের স্বাধীনভাবে এই একই স্কেলটি বিকাশের জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছিল; তাদের মধ্যে ছিলেন রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের সচিব পেহর এলভিয়াস ((যার একটি যন্ত্র কর্মশালা ছিল এবং তাঁর সাথে লিনিয়াস সংশ্লিষ্ট ছিলেন); ড্যানিয়েল একস্ট্রম, যন্ত্র নির্মাতা; এবং মার্টেন স্ট্রোমার (১৭০৭-১৭৭০) যিনি অ্যান্ডার্স সেলসিয়াসের অধীনে জ্যোতির্বিজ্ঞান অধ্যয়ন করেছিলেন।
১৬ ডিসেম্বর ১৭৪৫ তারিখের হর্টাস আপসালিয়েনসিস কাগজ ছিল প্রথম পরিচিত সুইডিশ নথি, যেটি এই আধুনিক "অগ্রগামী" সেলসিয়াস তাপমাত্রার স্কেলে তাপমাত্রার রিপোর্ট করা হয়েছিল এবং এই নথিটি লিনিয়াস তার ছাত্র, স্যামুয়েল নওক্লারকে লিখেছিলেন। এতে লিনিয়াস ইউনিভার্সিটি অফ উপসালা বোটানিক্যাল গার্ডেনের কমলা গাছের ভিতরের তাপমাত্রা বর্ণনা করেছেন:
... যেহেতু জানালার কোণ দ্বারা ক্যালডারিয়াম (গ্রিনহাউসের গরম অংশ), কেবল সূর্যের রশ্মি থেকে, এমন তাপ গ্রহণ করে যে থার্মোমিটার প্রায়ই ৩০ ডিগ্রিতে পৌঁছায়, যদিও আগ্রহী মালি সাধারণত এমন ভাবে যত্ন নেয় যে এটির তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রির বেশি না পৌঁছায় অথবা শীতকালে ১৫ ডিগ্রির নিচে না নামে ...
"সেন্টিগ্রেড" বনাম "সেলসিয়াস"
ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক ও তাপমাপক সম্প্রদায় "সেন্টিগ্রেড স্কেল" শব্দটি ব্যবহার করে আসছে এবং তাপমাত্রাকে প্রায়শই কেবল "ডিগ্রি" হিসাবে ব্যবহার করে আসছে, অথবা কখনো, "ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড" হিসাবে চিহ্নিত করা হতো, যার প্রতীক ছিল °C।
ফরাসি ভাষায় সেন্টিগ্রেড শব্দটির অর্থ গ্র্যাডিয়ানের একশোতম, (যখন কৌণিক পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়)। শত-মাত্রিক ডিগ্রি শব্দটি পরে তাপমাত্রার জন্য চালু করা হয়েছিল, তবে এটি ত্রুটিযুক্ত ছিল, কারণ ফরাসি এবং স্প্যানিশ ভাষায় এর অর্থ গ্রেডিয়ান (একটি সমকোণের একশো ভাগ)। ১৯৪৮ সালে যখন ওজন ও পরিমাপ সম্পর্কিত সাধারণ সম্মেলনের ৯ম সভা (জেনেরাল কনফারেন্স অব ওয়েডস এন্ড মেজারস) এবং কমিট ইন্টারন্যাশনাল ডেস পয়েডস এট মেজারস (সিআইপিএম) আনুষ্ঠানিকভাবে তাপমাত্রার জন্য "ডিগ্রি সেলসিয়াস" গ্রহণ করে এবং তাপমাত্রা ও কৌণিক পরিমাপের মধ্যে বিভ্রান্তির ঝুঁকি দূর করা হয়।
যদিও "সেলসিয়াস" সাধারণত বৈজ্ঞানিক কাজে ব্যবহৃত হয়, "সেন্টিগ্রেড" এখনও ফরাসি এবং ইংরেজিভাষী দেশে, বিশেষ করে অনানুষ্ঠানিক প্রসঙ্গে ব্যবহৃত হয়। সময়ের সাথে সাথে "সেন্টিগ্রেড" শব্দের ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় মেট্রিকেশনের কারণে ১৯৭২ সালের ১লা সেপ্টেম্বরের পর দেশের আবহাওয়ার প্রতিবেদনে একচেটিয়াভাবে সেলসিয়াসে দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাজ্যে, ১৯৮৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিবিসি ওয়েদারের পূর্বাভাস "সেন্টিগ্রেড" থেকে "সেলসিয়াস"-এ পরিবর্তিত হয়নি।
সাধারণ তাপমাত্রা
সমস্ত পর্যায়ের রূপান্তর আদর্শ বায়ুমণ্ডলে হয়। পরিসংখ্যান সংজ্ঞা অনুসারে, অথবা অভিজ্ঞতাগত পরিমাপ থেকে আনুমান করা হয়।
Kelvin | Celsius | Fahrenheit | Rankine | |
---|---|---|---|---|
পরম শূন্য (Absolute zero)[ক] | 0 K | −273.15 °C | −459.67 °F | 0 °R |
তরল নাইট্রোজেনের স্ফুটনাংক (Boiling point of liquid nitrogen) liquid nitrogen | 77.4 K | −195.8 °C[১] | −320.4 °F | 139.3 °R |
ড্রাই আইসের সাবলিমেশন পয়েন্ট (Sublimation point of dry ice)] | 195.1 K | −78 °C | −108.4 °F | 351.2 °R |
সেলসিয়াস ও ফারেনহাইট স্কেলের ছেদবিন্দু (Intersection of Celsius and Fahrenheit scales)[ক] | 233.15 K | −40 °C | −40 °F | 419.67 °R |
বরফের গলনাঙ্ক (Melting point of ice)[২] | 273.1499 K | −0.0001 °C | 31.9998 °F | 491.6698 °R |
সাধারণ ঘরের তাপমাত্রা (Common room temperature)[খ][৩] | 293 K | 20 °C | 68 °F | 528 °R |
গড় স্বাভাবিক মানবদেহের তাপমাত্রা (Average normal human body temperature)[৪] | 310.15 K | 37.0 °C | 98.6 °F | 558.27 °R |
পানির স্ফুটনাঙ্ক (Boiling point of water)[ক] | 373.1339 K | 99.9839 °C | 211.971 °F | 671.6410 °R |
তথ্যসূত্র
- ↑ Lide, D.R., ed. (1990–1991). Handbook of Chemistry and Physics. 71st ed. CRC Press. p. 4–22.
- ↑ The ice point of purified water has been measured at ০.০০০০৮৯(১০) degrees Celsius – see Magnum, B.W. (জুন ১৯৯৫)। "Reproducibility of the Temperature of the Ice Point in Routine Measurements" (পিডিএফ)। NIST Technical Note। 1411। ১০ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৭।
- ↑ "SI Units – Temperature"। NIST Office of Weights and Measures। ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০২২।
- ↑ Elert, Glenn (২০০৫)। "Temperature of a Healthy Human (Body Temperature)"। The Physics Factbook। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০০৭।
উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref>
ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/>
ট্যাগ পাওয়া যায়নি