বিষয়বস্তুতে চলুন
গণিত চিহ্ন উইকিপিডিয়া গণিত এডিটাথন শুরু হয়েছে! অংশগ্রহণ করুন এবং গণিত বিষয়ক নিবন্ধ তৈরি করে বাংলা উইকিপিডিয়াকে আরও সমৃদ্ধ করুন।

আবু দাউদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

এটি এই পাতার বর্তমান সংস্করণ, যা KanikBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৫:৩২, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (পুনর্নির্দেশিত বিষয়শ্রেণী:হাম্বলি ব্যক্তি সরিয়ে বিষয়শ্রেণী:হানবালী ব্যক্তি স্থাপন)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক।

(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)
মুহাদ্দিস
আবু দাউদ সুলাইমান ইবনে আল-আশআস আল-আজদি আল-সিজিস্তানি
সুনানের লেখক ও বসরার আধুনিকীকরণকারী আবু দাউদ আল-সিজিস্তানীর নামের স্কেচ
উপাধিআবু দাউদ
জন্ম৮১৭–১৮ খ্রিষ্টাব্দ / ২০২ হিজরি
সিজিস্তান
মৃত্যু৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দ / ২৭৫ হিজরী, ১৬ শাওয়াল, [ বয়স ৭৩ ]
বসরা
জাতিভুক্তপারসিক
যুগইসলামি স্বর্ণযুগ
সম্প্রদায়সুন্নি
মাজহাবহানবালিইজতিহাদ
মূল আগ্রহহাদিস(ফিকহ)
লক্ষণীয় কাজসুনান আবু দাউদ

আবু দাউদ সুলাইমান ইবনে আল-আশআস আল-আজদি আস-সিজিস্তানি (আরবি: أبو داود سليمان بن الأشعث الأزدي السجستاني), ইমাম আবু দাউদ নামে পরিচিত) ছিলেন একজন পারস্যদেশীয় ইসলামি পণ্ডিত। তিনি হাদিস গ্রন্থ সুনান আবু দাউদ সংকলন করেছেন। এই গ্রন্থ কুতুব আল-সিত্তাহর অন্যতম এবং সুন্নিদের নিকট সম্মানিত।

জীবনী

[সম্পাদনা]

আবু দাউদ ইরানের সিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে বসরায় মারা যান। হাদিস সংকলনের জন্য তিনি ইরাক, মিশর, সিরিয়া, হেজাজ, তিহামাহ, খোরাসান, নিশাপুরমার্ভ‌সহ অনেক স্থানে সফর করেছেন। প্রথমে তিনি ফিকহ বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। এ কারণে তিনি হাদিস সংগ্রহে মনোযোগী হন। প্রায় ৫,০০,০০০ হাদিসের মধ্যে তিনি প্রায় ৪,৮০০ হাদিস তার গ্রন্থে সংকলন করেছেন।

চরিত্র

[সম্পাদনা]

ইমাম আবু দাউদ ছিলেন ইবাদাতগুযার, পরহেযগার, যাহিদ ও ন্যায়পরায়ণ লোক। দুনিয়ার ভোগ বিলাসের প্রতি তাঁর কোন মোহ ছিল না। ইমাম ইবনু দাসাহ উল্লেখ করেন যে, ইমাম আবু দাউদের জামার একটি হাতা প্রশস্ত ও একটি হাত সংকৃর্ণ ছিল। এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যে হাতাটি প্রশস্ত তার মধ্যে আমি লিখিত হাদীসগুলো রেখে দেই এবং যে সংকৃর্ণ হাতার মধ্যে এ জাতীয় কিছুই নেই।

শিক্ষা জীবন

[সম্পাদনা]

তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জীবন সম্পর্কে তেমন জানা যায় না। সম্ভবত তিনি নিজ গ্রামেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ইমাম আবু দাউদের বয়স যখন দশ বছর তখন তিনি নিশাপুরের একটি মাদরাসায় ভর্তি হন এবং সেখানেই তিনি প্রখ্যাত মুহাদিস ইবনু আসলামের নিকট হাদীসশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। অতঃপর তিনি হাদীসে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য মিশর, সিরিয়া, হিজাজ, ইরাক, বৃহওর খোরাসান প্রভৃতি বিখ্যাত হাদীস গবেষণা কেন্দ্র সমূহে ভ্রমণ করেন এবং তদানিন্তন সুবিখ্যাত মুদাদ্দিসগণের নিকট হাদীস শ্রবণ ও সংগ্রহ করেন। হাদিসের কালজয়ী বিশুদ্ধ ছয়খানা কিতাবের অন্যতম কিতাব 'সুনান আবু দাউদ'-এর গ্রন্থকার। বর্তমান আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের সিজিস্তান শহরে বিশ্ববরেণ্য এই মুহাদ্দিস ইমাম আবু দাউদ জন্মগ্রহণ করেন। তখন আব্বাসীয় খলিফা মামুন ছিলেন রাষ্ট্রক্ষমতায়। ২০২ হিজরি সাল, যাকে ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের সোনালি যুগ বলা হয়। তাঁর ঊর্ধ্বতম পুরুষ ইমরান, যিনি হজরত আলী (রা.)-এর সঙ্গী হয়ে সীফফিনের যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন।

শিক্ষকগণ

[সম্পাদনা]

বিভিন্নদেশ ও শহরে ইমাম আবু দাউদের শিক্ষকের সংখ্যা অসংখ্য। তিনি উঁচু মাপের বহু মুহাদ্দিসের কাছে হাদীস শিক্ষা, সংগ্রহ ও শ্রবণ করেছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেনঃ-

মাক্বাহতে কা’নাবী,

সুলায়মান ইবনু হারব,

বাসরাহয় মুসলিম ইবনু

ইবরাহীম,

‘আবদুল্লাহ ইবনু রাজা,
আবুল ওয়ালীদ তায়ালিসি,
মূসা ইবনু ইসমাঈল ও

তাঁদের সমপর্যায়ের মুহাদ্দিসগণ হতে, কূফা শহরে হাসান ইবনু রবীঈ বুরানী, আহমাদ ইবনু ইউনূস ও একটি দল হতে, হালবে আবু তাওবাহ আর-রাবী’ ইবনু নাফি’ হতে, বাহরাইনে আবু জা’ফার নুফাইলী,

আহমাদ ইবনু আবু শু’আইব ও

আরো অনেকের কাছ থেকে, হিমসে হাইওয়াতাহ ইবনু শুরাইহ, ইয়াযীদ ইবনু ‘আবদে রাব্বী হতে,

দামিস্কে সাফওয়ান ইবনু সালিহ ও হিশাম ইবনু আম্মার হতে, খুরাসানে ইসহাক্ব ইবনু রাহওয়াইহি ও তাঁর সমপর্যায়ের ব্যক্তিদের থেকে, বাগদাদে আহমাদ ইবনু হাম্বাল ও তাঁর সমপর্যায়ের মুহাদ্দিস হতে, বালখাতে কুতাইবাহ ইবনু সাবীদ হতে, মিসরে আহমাদ ইবনু সালিহ ও অন্যদের থেকে।

এছাড়াও ইবরাহীম ইবনু বাশমার, ইবরাহীম ইবনু মূসা আর-অপররা, আলী ইবনুল মাদীনী,

হাকাম ইবনু মূসা, 

সাঈদ ইবনু মানসূর, সাহল ইবনু বাক্কার, ‘আবদুর রহমান ইবনুল মুবারক আবু-আয়শী, আবদুস সারাম ইবনু মুত্ত্বাহহার,

মুহাম্মদ ইবনু কাসীর,
মু’আয ইবনু আসাদ, 

আলী ইবনুল জা’দ, খালফ ইবনু হিশাম, আমর ইবনু ‘আওন, ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন ও অন্যান্য ইমামগণ।

ছাত্রবৃন্দ

[সম্পাদনা]

ইমাম আবু দাউদের ছাত্র সংখ্যাও অসংখ্য। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-

  1. ইমাম তিরমিজি(রহ.),
  2. ইমাম নাসাঈ(রহ.),
  3. আবু আওয়ানাহ,
  4. আবু হামিদ আহমাদ ইবনু জাফার আসবাহানী,
  5. আবূ ‘আমর আহমাদ ইবনু আলী ইবনু হাসান বাসরী,
  6. আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ খাল্লাল ফাক্বীহ,
  7. ইসহাক্ব ইবনু মূসা রমলী,
  8. ইসমাঈল ইবনু সাফফার,
  9. হুসাইন ইবনু ইদরীস আল-হারুবী,
  10. যাকারিয়্যাহ ইবনু ইয়াহইয়া সাজী,
  11. আবু বাকর ইবনুদ দুনিয়া,
  12. মুহাম্মাদ ইবনু জা’ফার ফিরয়াবী,
  13. আবূ বিশর দুলাবী,
  14. মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ লু'লুয়ী,
  15. মুহাম্মাদ ইবনু রাজ বাসরী,
  16. আবূ সালিম মুহাম্মাদ ইবনু সাঈদ আদামী,
  17. মুহাম্মাদ ইবনু মুনযির,
  18. উসামাহ মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল মালিক,
  19. হাসান ইবনু ‘আবদুল্লাহ,
  20. মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহইয়া মরদাস,
  21. আবু বাকর মুহাম্মাদ ইবনু ইয়াহইয়া প্রমুখ।

মাজহাব

[সম্পাদনা]

ইমাম আবু দাউদ হানবালি মাজহাবের অনুসারী ছিলেন। তবে তিনি মুকাল্লিদ ছিলেন নাকি ব্যক্তিগতভাবে একজন মুজতাহিদ ছিলেন তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে।

রচনাকর্ম‌

[সম্পাদনা]

তিনি সর্বমোট ২১টি বই লিখেছেন। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল:

  • সুনানে আবু দাউদ, এতে প্রায় ৪,৮০০ হাদিস সংকলিত হয়েছে। এটি তার প্রধান কর্ম। মুহাম্মদ মুহিউদ্দিন আবদুল হামিদের সম্পাদনার পর এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। তিনি বলেছেন যে তিনি যেগুলোকে জয়িফ (দুর্বল) বলে উল্লেখ করেননি সেগুলো ছাড়া বাকি হাদিসগুলো সহিহ। তবে ইবনে হাজার আসকালানির মতানুযায়ী জয়িফ উল্লেখ করা হয়নি এমন হাদিসের মধ্যেও কিছু জয়িফ হাদিস রয়েছে।
  • কিতাব আল-মারাসিল, এই গ্রন্থে ৬০০ মুরসাল হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন। যাচাই বাছাইয়ের পর তিনি এগুলোকে সহিহ বলেছেন।
  • রিসালাত আবি দাউদ ইলা আহলি মাক্কাহ; তার সংকলিত সুনান আবু দাউদের বর্ণনা দিয়ে মক্কার বাসিন্দাদের প্রতি চিঠি।[]
  • ইবতিদাউল ওয়াহী।
  • আখবারুল খাওয়ারিজ।
  • আ’লামুন নাবুয়্যাহ ।
  • কিতাবু মা তাফাররাদা বিহী আহলুল আমসার।
  • আদ-দু’আ।
  • আয-যুহদ।
  • কিতাবুস সুনান। যা ছয়টি প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থের একটি।
  • কিতাবু ফাযায়িলে আনসার।
  • আর রাদ্দু ‘আলাল ক্বাদরিয়্যাহ।
  • আল-মারাসীল।
  • আল-মাসায়িল।
  • মুসনাদে মালিক ইবনু আনাস।
  • নাসিখ ওয়াল মানসূখ।
  • মারিফাতুল আওকাত।

ইমাম আবু দাউদ সম্পর্কে অন্যান্য মুসলিম মনিষীর মন্তব্য

[সম্পাদনা]
  • ইমাম হাকিম বলেনঃ নিঃসন্দেহে ইমাম

আবু দাউদ তাঁর সমসাময়িক মুহাদ্দিসগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন। তাঁর এই শ্রেষ্ঠত্ব ছিল নিরংকুশ ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ।

  • ইমাম যাহাবী বলেনঃ ইমাম আবু দাউদ হাদীসের ইমাম হওয়ার পাশাপাশি একজন বড় মাপের ফাক্বীহ ছিলেন। তাঁর কিতাবই এর প্রমাণ বহণ করে।
  • ইবরাহীম ইবনু ইসহাক্ব বলেনঃ ইমাম আবু দাউদের জন্য হাদীসকে নরম ও সহজ করে দেয়া হয়েছিল ঠিক যেমনিভাবে নরম ও সহজ করে দেয়া হয়েছিল দাউদ নাবীর জন্য লৌহকে।
  • আর-রাযী বলেনঃ আমি তাঁকে বাগদাদে দেখেছি। তিনি আমার পিতার কাছে আসতেন। তিনি একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি ছিলেন।
  • ঐতিহাসিক ইবনু তাগরিদী বলেনঃ তিনি ছিলেন হাদীসের হাফিয, সমালোচক,সুক্ষাতিসুক্ষ ক্রটি সম্পর্কে অবহিত আল্লাহভীরু এক মহান ব্যক্তি।

প্রথমদিককার ইসলামি পণ্ডিত

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Al-Bastawī, ʻAbd al-ʻAlīm ʻAbd al-ʻAẓīm (১৯৯০)। Al-Imām al-Jūzajānī wa-manhajuhu fi al-jarḥ wa-al-taʻdīl। Maktabat Dār al-Ṭaḥāwī। পৃষ্ঠা 9। 
  2. "Translation of the Risālah by Abū Dāwūd"। ১৯ আগস্ট ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৫